উজান থেকে নেমে আসা বানের পানিতে প্লাবিত হয়েছে চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা। গত কয়েকদিন ধরে মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমার উপরে থাকলেও বুধবার তা সর্বোচ্চ ৭৯ সেন্টিমিটার। এতে করে জেলার বিভিন্ন স্থানে রাস্তা-ঘাট, বাড়ি-ঘরে ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি। পানির চাপে হাইমচর উপজেলার চরভাঙ্গা এলাকায় চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে গিয়ে ঢুকছে পানি। এছাড়া সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
শহর ঘুরে দেখা যায়, বিকেল থেকেই পানিতে ভাসছে চাঁদপুর শহরের জেএম সেনগুপ্ত রোড, পালবাজার এলাকা, লেকেরপাড়, মহিলা কলেজ রোড, তালতলাসহ কয়েকটি এলাকা।
এদিকে আকষ্মিক জোয়ারের পানিতে হাইমচর উপজেলার মহজমপুর, চরভাঙ্গা, এলাকায় চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙে সেচ প্রকল্পে জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে। এতে করে সেচ প্রকল্প এলাকার ফসলের ক্ষতির আশংকা দেখা দিয়েছে। বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রাও। এছাড়া বেড়ীবাধের বাইরে থাকা ঘর বাড়ি, ফসলী জমি, মাছের ঘপর, ঝিল, পুকুর, ঘর বাড়ি, হাট-বাজার এবং বিভিন্ন সড়ক প্লাবিত হয়েছে।
হাইমচরের সাংবাদকি সাহেদ হোসেন দিপু বলেন, আমাদের ঘরে কখনো পানি উঠে না। কিন্তু আজ উঠেছে। এ উপজেলার বেড়িবাধের বাইরে অধিকাংশ বাড়িতেই পানি উঠে গেছে। তিনি জানান, বিকেল ৩টা থেকে পানি বাড়ায় হাইমচরের জালিয়ারচর হতে বাংলাবাজার পর্যন্ত বেড়িবাধের বাইরের পুরো এলাকায় পানি ঢুকে গেছে। এছাড়া মহজমপুর, চরভাঙ্গা এলাকার কালাচৌকিদার মোড় এলাকার বাধের উপর দিয়ে পানির স্রোত বইছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান আকষ্মিক এবং অস্বাভাবিক জোয়ারের ফলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হাইমচর মহজমপুর, চরভাঙ্গা স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে সেচ প্রকল্প এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে। ভাঙন এলাকা বাঁধ নির্মাণে আমরা জরুরী ব্যবস্থা গ্রহন করছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার বলেন, এ বছরের মধ্যে বুধবার মেঘনা নদীতে পানির লেভেল সর্বোচ্চ। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত মেঘনা নদীর চাঁদপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। তিনি বলেন, জোয়ারের সময় পানি বাড়লেও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর থেকে আবার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখন যে পরিমাণ পানি বইছে তা গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
তিনি বলেন, আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের চরভাঙ্গা এলাকায় বাধে একটি ব্রিজ আছে। ব্রিজের নিচে ছিদ্র আছে। তা বস্তা এবং মাটি দিয়ে বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু পানির চাপে তা সরে যাওয়ায় সেখান দিয়ে পানি ঢুকছে। আমরা বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যেই ওই স্থানের কাজ শুরু করবো।