মুহাম্মদ মাসুদ আলম:
চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের কুমুরুয়া গ্রামে দীর্ঘ ৭/৮বছর যাবৎ কৃষি কাজ ও মৌসুমে সব্জি বিক্রি করে নিজেদের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন কৃষক মো. তাজুল ইসলাম ও মনসুর মিজি। এখন তাদের দিন বদলে গেছে। পারিবারিক খরচ মিটিয়ে বছরে কয়েক লাখ টাকা সঞ্চয় করতে পারছেন তারা। তবে এসব কৃষিকাজে তারা নিজেরেই বেশী পরিশ্রম করেন। মৌসুমে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়ে বাকী কাজ করান। সরেজমিন কৃষকদ্বয়ের সব্জি চাষের জমিগুলো ঘুরে দেখায় যায় এবছর নানান রকম সব্জিতে ভরপুর জমিগুলো। একবার তাকালে মন ভরে যায়। ইচ্ছে করলেই একজন মানুষ উদ্যোগ নিয়ে যে কোন কাজ করলে সফলতা অর্জন করতে পারে। এই কৃষক দুজনই তার প্রমাণ। এ বছর তারা দুই জনে ১একর করে ২ একর জমিতে লাল শাক, পালং শাক, মুলা, ফুল কপি, বাঁধা কপি, ডাটা, কদু, কুমড়া, ধনিয়া পাতা, গাজর, বেগুন, টমেটু ইত্যাদি চাষ করেছে। ইতোমধ্যে তারা প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকার সব্জি বিক্রি করেছেন। বাকীগুলো ফলন হলে আস্তে আস্তে বিক্রি করবেন। কৃষক তাজুল জানায়, সে এ বছর শুধুমাত্র মৌসুমী সব্জির চাষ করতেই সার, কীটনাশক ও বীজে ৭০হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে মৌসুমের শুরুতে বীজ সংকটে পড়েন বেশী। কুমিল্লাতে গিয়ে বেশীরভাগ বীজ সংগ্রহ করতে হয়। বীজের জন্য কুমিল্লা গিয়ে না পেলে আবার পুনরায় যেতে হয়। এতে তাদের অর্থ সময় দুই দিকেই ক্ষতি হয়। ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে কৃষিকর্মকর্তা কিংবা সরকারি কোন দিক নির্দেশনা ও সহায়তা না পেয়ে তারা সব সময় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন। তাজুল ইসলাম পড়া শুনা না করায় মোবাইলও ব্যবহার করেন না। তবে সে কৃষিকাজে আরো সফলতা পাওয়ার জন্য সরকারের কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। সফল কৃষক হতে নিজেদের ইচ্ছা আর মনোবলকে কাজে লাগালে যে কোন মানুষ সফল হতে পারে বলে জানান তাজুল ইসলাম। তার কৃষিকাজের সফলতায় ২ ছেলে, ২ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ভালোভাবেই চলছে তার সংসার। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। তার ইচ্ছা তার মত কৃষক না হয়ে ছেলে মেয়ে পড়া-লেখা করে অনেক বড় হবে। তাজুল ইসলাম কুমুরুয়া গ্রামের মৃত আঃ খালেক মিজির ছেলে। আরেক কৃষক মনসুর মিজি জানান, তারা শুধুমাত্র সব্জির চাষ নয়, বছরের ১২মাস সময় উপযোগী কৃষি চাষাবাদ করে থাকেন। সব্জির পরপরই আখের চাষ করবেন এসব জমিগুলোতে। এছাড়াও তারা একটু উচুঁ জমিতে কলাবাগান করেছেন। সেখানে সাগর কলার চাষ করেন প্রতিবছর। কলা বিক্রি করেও তারে বেশ লাভ হয়। মনসুর মিজি একই গ্রামের নুরু মিজির ছেলে। ৩ ছেলে ১ মেয়ে তার। ছেলে ও মেয়ে স্কুল পর্যায়ে পড়া শুনা করছেন। সকাল থেকেই কৃষি কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বেশীর ভাগ কৃষি কাজে সময় দেন। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ পাওয়া গেলে তাদের এ কৃষি কাজের আরো উন্নতি হবে বলে তারা আশাবাদি।
শিরোনাম:
সোমবার , ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৫ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।