শওকত আলী,
চাঁদপুরের নৌ-সীমানায় ঢাকা-মাদারীপুরগামী এমভি পারাবাত-১৪ নামে যাত্রীবাহী একটি লঞ্চের কেবিনে এক গৃহবধূ (১৯) কে গণধর্ষণের অভিযোগে চার যুবককে একটি বিদেশি রিভলবারসহ আটক করেছে চাঁদপুর নৌ-পুলিশ। রোববার রাত ১১টায় মেঘনা নদীর মহনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটক যুবকরা হচ্ছে: মাদারীপুর জেলার সমিতির হাট এলাকার আতাহার মোল্লার ছেলে সুজন (২৫), ঢাকা শ্যামপুর পোস্তাখোলা ৭৭নং করিম উল্যাহবাগ এলাকার আতিক উল্যাহর ছেলে ইমরান (২৫), একই এলাকার হারুনুর রশিদের ছেলে সাব্বির হোসেন (২০) ও মো. মফিজুর রহমানের ছেলে রজব আলী (২৬)। এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে চাঁদপুর মডেল থানায় ধর্ষণ ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
ওই গৃহবধূ জানায়, তার প্রেমিক সহ সে রাত ৮টায় ঢাকা নৌ-টার্মিনাল থেকে মাদারীপুরগামী এমভি পারাবাত-১৪ লঞ্চে উঠেন। লঞ্চটি চাঁদপুরের মেঘনা নদীর মোহনপুর এলাকায় পৌঁছলে তাদের পাশের কেবিনে থাকা ওই চার যুবক নিজেদের আইনের লোক পরিচয় দিয়ে তাদের দরজা খুলতে বাধ্য করে। এ সময় ওই গৃহবধূকে রুমে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আটকে রেখে সাথে থাকা প্রেমিক সোহেল তানভির(২৫) কে লঞ্চের ছাদে নিয়ে মারধর করে। পরে তারা প্রেমিক সোহেল তানভিরকে ওই যুবকদের কেবিনে নিয়ে আটকে রাখে। এর কিছুক্ষন পর তারা ওই গৃহবধূর কেবিনে প্রবেশ করে। এ সময় সুজন নামে এক যুবক গৃহবধূকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে সুজনের সহযোগীরা গৃহবধূকে পালা কমে গণধর্ষন করে। এক পর্যায়ে সে চিৎকার করলে লঞ্চে থাকা অন্যান্য যাত্রীরা ঘটনাস্থলে এসে ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরে ৪ যুবককে গণপিটুনি দেয়। এসময় লঞ্চের স্টাফরা ও লঞ্চের মাস্টার মতিউর রহমান যুবকদের গণপিটুনির হাত থেকে রক্ষা করে ৩৩২নং কেবিনে তাদের তালাবদ্ধ করে রাখে। পরে লঞ্চ টি চাঁদপুর লঞ্চঘাটে অবস্থান নেয়। চাঁদপুর নৌ-পুলিশকে লঞ্চের যাত্রী ও লঞ্চের মাস্টার মতিউর রহমান বিষয়টি অবগত করে যুবকদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে । এ সময় পুলিশ তাদের ৩৩২ নং কেবিনে তল্লাশি চালিয়ে বালিশের নিচে থাকা ২ রাউন্ড গুলি, মদ, গাঁজাসহ একটি বিদেশী রিভলবার উদ্ধার করে। একই সঙ্গে প্রেমিক যুগলকে পুলিশের হেফাজতে নিয়ে যায়। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন নৌ পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মোশারফ হোসেন. মডেল থানার এসআই মাসুদ শামীম, অনুব চক্রবর্তী , এএসআই পলাশ বরুয়া ও ডিবির ফিরোজ আলম ও আহসান উজ্জামান লাবু। সোমবার দুপুরে ওই গৃহবধূর বাবা আমির হোসেন খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় আসেন। তিনি জানান, ২ বছর পূর্বে ওমর ফারুক নামে একজনের সাথে তার মেয়ের বিয়ে হয়। কিন্তু ওই স্বামীর সাথে তার সম্পর্ক ভাল ছিল না। তাকে না জানিয়ে তার মেয়ে সোহেলের সাথে পালিয়ে মাদারিপুর যাচ্ছিল বলে সে জানতে পারে।
প্রেমিক সোহেল তানভির জানান, তারা দুজনে বিয়ে করবে বলে দেশের বাড়ি মাদারীপুর যাচ্ছিলেন। চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মামুনুর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত রাতে লঞ্চে মারামারির ঘটনা শুনে নৌ টার্মিনালে যাই। সেখানে গিয়ে জানতে পারি মেয়েটির পাশ্ববর্তীর কেবিনের যুবকরা তাকে নির্যাতন করেছেন। ওই সময় চারযুবককে আটক করা হয়। গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ধর্ষণের দায়ে ৪ যুবককে আটক করা হয়। এঘটনায় ওই গৃহবধূ ধর্ষণ ও নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে পৃথক দুটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
এব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মোঃ আশ্ররাফুজ্জামান জানান. বিক্টিম ও তার সাথে ঢাকা থেকে আসা সোহেলের সাথে কথা বলে জানতে পারি.,তারা মাদারিপুর যাচ্ছিল্। পথিমধ্যে ৪ যুবক অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে পার্শরিক নির্যাতন করেন। পুলিশ রাতেই পারাবত-১৪ লঞ্চতেকে ৪ জনকে আটক করেছে । আটককৃতদের কেবিন থেকে ১টি রিভলবার ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এব্যাপারে ধর্ষন ও অস্ত্রের মামলা হয়েছে।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।