শহর প্রদতনিধি-
চাঁদপুর শহরতলীর আশিকাটি ইউনিয়নে সম্পত্তিগত বিরোধের সংঘর্ষে ১ শিশু নিহত হওয়ার ঘটনায় নিহত পরিবারের পক্ষ থেকে চাঁদপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঐ মামলায় ৫ জনকে পুলিশ আটক করেছে। এ ব্যাপারে নিহতের পিতা বাদী হয়ে ১১ জনের নাম প্রকাশ করে ও অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে ২০ অক্টোবর রোববার সকালে। চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের দক্ষিণ আশিকাটি গ্রামের হাজী মাইন উদ্দিন খানের বাড়ীতে। ঐ বাড়ীর বিল্লাল খান ও কামাল খানের মধ্যে দীর্ঘ ২ বছর ধরে সম্পত্তিগত বিরোধ চলে আসছিল। রোববার সকাল ৯টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত এই সংঘর্ষ উভয় পক্ষের মধ্যে চলতে থাকে। সংঘর্ষের ফলে আহত হয় আমির হোসেন খান (৭০), হারিছ প্রধানীয়া (২৬), আশিক খান (১০), শাহ আলম খান (৪০), অপর পক্ষের আহতরা হলেন বিল্লাল খান (৩৫), মাসুদ মাল (২৮), মোস্তফা খান (৪০), আব্দুস সামাদ খান (৫০)। এদের মধ্যে গুরুতর আহত শিশু আশিক খান (১০) এর মাথায় দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়। আশিকের অবস্থার অবনতি হলে চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা নেয়ার পথে আশিক মারা যায়।
নিহত আশিক খানের পিতা জসিম খান বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় ১৪৩/৪৪৭/৩০৭/৩২৪/৩২৩/৩০২/১০৯ ধারায় শিশু পুত্র হত্যার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করে। চাঁদপুর মডেল থানার অভিযোগ নং-২৬। অভিযোগে তিনি উল্লেখ্য করেন, আসামীদের সাথে বাড়ির জায়গা জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। সামাজিক শালিসে হেরে গিয়ে জোড়পূর্বক আমাদের সম্পত্তি দখল করা সহ খুন খারাপি করার হুমকি দিচ্ছিল। ২০ অক্টোবর ঘটনার দিন সকাল ৭টায় নিহত শিশু আশিকের মা মর্জিনা বেগম পারিবারিক কবরস্থানের পাশের সম্পত্তি থেকে ঘরের পীড়া ঠিক করার জন্য মাটি নিয়ে আসার সময় বিল্লাল হোসেন খান, মাসুদ মাল ও কামরুন্নাহার বেগম বাধা প্রদান করে। এক পর্যায়ে আসামীরা তাদের সম্পত্তি থেকে মাটি আনা হয়েছে বলে দাবি করে মর্জিনার কাছ থেকে মাটি রেখে দেয়। আসামী বিল্লাল বলে যে , মাটি নেয়ার সাধ বুঝিয়ে দিচ্ছি এ কথা বলে মর্জিনার গায়ে ওড়না দিয়ে গলায় পেচিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় । এ সময় উপস্থিত সাক্ষীগন ছুটে আসলে বিল্লাল গংরা বেআইনী জনতা বদ্ধ হয়ে লাঠিশোঠা ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হারুন খানের নেতৃত্বে হামলা চালায়। জসিম খান আরো উল্লেখ্য করেন, আমি প্রতিবাদ করলে মাসুদ মাল তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে আমার শিশু পুত্র আশিক খানকে খুন করার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করে। আশিক মাটিতে লুটিয়ে পরে । আমার ছেলেকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসলে বিল্লাল খান, আমির হোসেন খানকে খুন করার উদ্দেশ্যে লোহার রড দিয়ে আঘাত করলে তার ডান হাত ভেঙ্গে যায় , একইভাবে অপর আসামীরাও অন্যান্যদেরকে আঘাত করে আহত করে। মূমুর্ষ অবস্থায় আশিক খানকে ঢাকায় নেয়ার পথে বিকেল সাড়ে ৩টায় যাত্রাবাড়ির মাতুইল নামক স্থানে গেলে মারা যায়।
এ হত্যার ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানার উপ পরিদর্শক মানিক মিয়া হত্যার সাথে সম্পৃক্ত থাকার দায়ে একই বাড়ির মৃত আফাজ উদ্দিন খানের ছেলে মোঃ বিল্লাল হোসেন খান (৩৫) , মানিক মালের ছেলে মাসুদ মাল (২৮) , লোকমান খানের ছেলে হারুন খান (৩০) , মৃত আফাজ উদ্দিন খানের ছেলে আঃ সামাদ খান (কালু খান) (৫২), সামাদ খানের স্ত্রী ফজিলতুন্নেছা বেগম (৪৫) কে ঘটনার পরই পুলিশ আটক করে । এদের মধ্যে আঃ সামাদ খান (কালু খান) কে পা ভেঙ্গে যাওয়ায় আটক করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পুলিশ পহড়ায় চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা মানিক মিয়া আসামীদের বিরুদ্ধে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছেন ।
শিরোনাম:
রবিবার , ২৪ জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ , ১১ মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।