শওকত আলী:
চাঁদপুরে ভর মৌসুমে জাঁকে-জাঁকে ইলিশ মাছ ধরা পড়তে শুরু করেছে। চাঁদপুরের ৫০টি আড়তের মধ্যে ১১টি আড়তে প্রচুর পরিমান অর্থাৎ প্রায় ৪ হাজার মন ইলিশ আমদানী হয়েছে বলে ইলিশ ব্যবসায়ীরা জানান। এতে করে চাঁদপুরে ইলিশের রাজধানী হিসেবে খ্যাত ৫০টি আড়তের শত-শত ব্যবসায়ী ও হাজার হাজার শ্রমিক কর্মব্যস্ত সময় কাটাতে হচেছ। চাঁদপুর মৎস্য আড়তে হঠাৎ করে গতকাল সোমবার থেকে হঠাৎ করে ইলিশের আমদানী বেড়ে গেছে। এ বছর ভর মৌসুমে ইলিশ আমদানী হলেও গত কয়েকদিন যাবত প্রচুর ইলিশ আমদানী হলেও গতকাল থেকে আমদানী ৪গুন বেশী বেড়ে গেছে। এত অধিক পরিমান ইলিশ ধরা পড়ছে ও আমদানী হলেও কি হবে ইলিশ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারনে ইলিশের দাম তুলনা মূলক হারে কমছেনা। এতে করে সাধারন ক্রেতারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী ইলিশ কম মূল্যে ক্রয় করতে পারছেনা। ইলিশ আমদানীর কথা ছড়িয়ে পরলে এ ইলিশ দেশের বিভিন্ন স্থান হতে শত-শত ক্রেতা ক্রয় করছে অনলাইনে। চাঁদপুরের মৎস্য ব্যবসায়ীরা ও এ অনলাইনে ইলিশ বিক্রি করতে পেরে আনন্দ ্উপভোগ করছে। মৎস্য ব্যাবসায়ীরা জানান, চাঁদপুর মৎস্য আড়তে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার হতে আড়াই হাজার মন ইলিশ আমদানী হলেও গতকাল সোমবার(১১আগস্ট) জাঁকে-জাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় আমদানী হয়েছে প্রায় ৪ হাজার মন ইলিশ। ইলিশের আমদানী অনেক বেশী হলেও চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশের দেখা তেমন মিলছেনা।
দেশের দক্ষিঞ্চলীয় এলাকা সাগরের ভাটি অঞ্চল থেকে এ ইলিশ আমদানী করে আনছে,শত-শত জেলে ও ব্যাবসায়ীরা। তারা দীর্ঘ দিন পরে ভর মৌসুমে প্রচুর ইলিশ আমদানী করতে পেরে তাদের মধ্যে আনন্দে জোয়ার বইছে। জেলে পাড়ায় ও জেলে পরিবারের মধ্যে প্রচুর আনন্দের বন্যা দেখা যাচেছ। বর্তমানে ইলিশের যে দাম তা”ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকলেও সাধারন সব শ্রেণীর ক্রেতারা তাদের চাহিদা মত ইলিশ ক্রয় করতে ব্যর্থ হচেছ।
চাঁদপুর মৎস্য আড়তে ব্যবসায়ীদের চাহিদার চাইতে আরো বেশী, প্রচুর ইলিশ আমদানীতে ব্যাবসায়ী,ক্রেতা,–বিক্রেতারা ইলিশ ক্রয়-বিক্রয়ে আনন্দে মেতে উঠতে দেখা গেছে।
সরোজনিনে চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মৎস্য আড়তে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে যায়, দক্ষিন অঞ্চলের ভাটি এলাকা কুয়াকাটা,পাথরঘাটা,মহিবুল,বরিশাল,চরফেশান,সামরাজ,হাতীয়া,রামগতি,ভোলাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এ সব ইলিশ আমদানী হচেছ। গত এক মাস যাবত ইলিশের ভর মৌসুম শুরু হলেও ইলিশ তেমন ধরা পরছিলনা, জেলে ও ব্যবসায়ীরা হতাশায় দিন কাটাচিছল। হঠাৎ করে গত আগস্টের মধ্য সময় থেকে প্রচুর ইলিশ আমদানী শুরু হয়েছে। যার ফলে ব্যবসায়ী ও জেলেদের মধ্যে আনন্দ দেখা যায়। জেলেরা ইলিশ বিক্রি করে মহাজন ও দাদনদারদের ঋন পরিশোধ করতে পারছে বলে জেলেরা আনন্দের সাথে জানান। ব্যবসায়ী হাজী মো: শাহজাহার বেপারী জানান,গত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশের দাম অনেক কম। বর্তমানে ১ কেজি সাইজের ইলিশ ৩০/৩২ হাজার টাকা মন,প্রতি কেজি বিক্রি হচেছ,১ হাজার টাকা,৭/৮শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২৫/২৬ হাজার টাকা মন,প্রতি কেজি ৮শ টাকা। ৫/৬ গ্রামের ইলিশ ২২ হাজার টাকা মন,প্রতি কেজি ৫শ ৫০টাকা। ৫/৬শ গ্রামের ইলিশ ১৮ হাজার টাকা মন,প্রতি কেজি ৪শ ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচেছ। এ ছাড়া চাঁদপুরে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে আশানুরুপ ইলিশ পাওয়া যাচেছ না। যা ও ধরা পড়ছে,তার দাম আকাশ চুম্মি প্রতি মন লোকাল ইলিশ ৫৫ হাজার টাকা মন,প্রতি কেজি ইলিশ ২ হাজার টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, ৫শ,৬শ ও ৭শ গ্রামের ইলিশ আমদানী হচেছ সব চেয়ে বেশী। ব্যবসায়ীরা আরো জানান,গত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশ আমদানী কম হলেও দাম কম। যার ফলে সাধারন ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে বাজার দর।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর মৎস্য বনিক সমবায় সমিতির লি: এর সভাপতি আবদুল খালেক মাল জানান, এখন ইলিশের ভর মৌসুম। গত বছর এ সময় প্রচুর ইলিশ ধরা পরেছে। এ বছর সে তুলনায় কম ধরা পরছে। তবে এ বছর ভাদ্র মাসের শেষে এখন প্রচুর ইলিশ ধরা পরছে।
চাঁদপুর মৎস্য আড়তের মানিক ট্রেডার্সের বিশিস্ট ব্যবসায়ী বাবুল হাজী জানান, গত ৩/৪ দিন যাবত ইলিশের আমদানী বেশী হচেছ। এ পূর্বে আমদানী কম ছিল। এখন প্রতি দিন ২/৩ হাজার মন ইলিশ আমদানী হচেছ। দাম ক্রেতার ক্রয় ক্ষয়তার মধ্যে। এখন সম্পূর্ন ভর মৌসুম। গত বছর ইলিশের আমদানী বেশী ছিল, এ বছর ইলিশ কম ধরা পরছে।তবে ভাদ্র মাসের এখন শেষ দিকে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এ সব ইলিশ চাঁদপুর ছাড়াও সিলেট মৌলুবী বাজার,ময়মনসিংহ,আবদুল্লাহপুর,ঢাকা কারন বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী করা হচেছ।
এ ব্যাপারে মৎস্য ব্যবসায়ী ছিদ্দিক আলীর সাথে কথা বললে সে জানান,চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে তেমন ইলিশ ধরা পরছেনা। আমদানী কৃত ইলিশ কুয়াকাটা,পাথরঘাটা,মহিবুল,বরিশাল,চরফেশান,সামরাজসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসছে।