দীর্ঘ ৭ বছর সৌদি আররের ভিসা বন্ধ থাকার পর পুনরায় খোলায় নিবন্ধন ফরম জমা দিতে ভীর লক্ষ করা গেছে সোনালী ব্যাংক চাঁদপুর শাখা এবং জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সরকারের ঘোষণার পর পরই ফরম কিনে হাজার হাজার মানুষ জমা দিতে ভীর জমায় কর্মসংস্থান অফিসের বারান্দায়। সোনালী ব্যাংক থেকে ১শ’ ৫০টাকায় চালান ফরম, ২০টাকা ব্যাংক চার্য ও ৩ টাকা ভ্যাট চার্য দিয়ে জমা রশিদ সংগ্রহ করে বিদেশগামীরা। এ টোকেন নিয়ে নিবন্ধন ফরমটি জাম দেয় শহরের জেম এম সেনগুপ্ত রোডস্থ জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে।
সকালে সোনালী ব্যাংক খোলার সাথে সাথে হুমরি খেয়ে পড়ে চালান ফরম নিয়ে ব্যাংক ড্রাফটের জন্য। প্রথম পহরে যে যার মতো করে ব্যাংক ড্রাফট করতে ভীর জমায় ব্যাংক এলাকায়। বেলা ১২টায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিদেশগামীদের বলেন আপনারা লাইনে না দাড়ালে আমার ব্যাংক ড্রাফট করবো না। এতে দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে ব্যাংক ড্রাফট শেষ করে আবার একটি দীর্ঘ লাইনে দাড়াতে হয় নিবন্ধন ফরমটি জমা দিতে। সোনালী ব্যাংক বিকেল ৪টা পর ব্যাংক ড্রাফট করা বন্ধ করে দিলেন কর্মসংস্থান অফিস সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নিবন্ধন ফরমটি জমা নিয়েছে। লাইনে দাড়ানো শেষ লোকটি জমা না দেওয়া পর্যন্ত।
এব্যাপরে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস কর্মকর্তা হালিমা বেগম জানান গত ৪ দিনে ৪ হাজার ৮শ’ টি নিবন্ধন ফরম জমা পড়েছে। এটি একটি চলামান প্রক্রিয়া।
অন্যদিকে সোনালী ব্যাংক চাঁদপুর শাখার ম্যানেজার গতকাল বৃহস্পতিবার ২ হাজার ২শ’ জন ও গত বুধবার ১ হাজার ২শ’ ৪১ জন বিদেশ গমনেচ্ছুকরা ব্যাংক ড্রাফট করছে।
এদিকে অনেককে বলতে শোন গেছে। সোনালী ব্যাংকে ড্রাফট করতে সর্বমোট ১শ’ ৭৩ টাকা জমা দেওয়ার কথা থাকলেও ব্যাংক কর্মকর্তার ২শ” টাকা বা ১শ’ ৮০টাকা দিলে বাকী টাকা ফেরত না দিয়ে পুরো টাকা প্রায় প্রত্যেকরে কাছ থেকে রেখে দেয়। এ ব্যাপারে অনেককে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেকা গেছে।
ফরম জমা দিতে আসা কয়েকজন যুবকের কাছ থেকে জানতে চাইলে তারা বলেন। হাজীগঞ্জ থেকে আসা নুরুল আমিন বলেন আমি সকাল সকাল ব্যাংক ড্রাফট করতে আসলেও সাড়ে ১১টায় ব্যাংকের দোতালায় ওঠতে পারেনি। কখন জমা দিতে পারবো জানি না। কি কাজে যাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কনস্ট্রাশন কাজ জানি তাই ফরমে লিখেছি।
বাকিলার সুমন পাটওয়ারী জানান, আমি কোন ফরম ফিলাপ করে আসেনি। চাঁদপুর থেকে কিনেছি। কোট স্টেশন এলাকায় তাফু ভাই নামে এখন লোক সকাল থেকে অনেকর ফরম ফিলাপ করছে তাকে দিয়ে ফরমটি ফিলাপ করেছি। এখন সোনালী ব্যাংকে এসেছি জমা দিতে। কেন যাচ্ছেন দেশে কি কাজ নেই এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশে কাজ আছে তবে প্রতিদিন যা রুজি করি তা জমানো যায় না। বিদেশ যেতে পারলে মাসের বেতনটাতো একসাথে পাওয়া যাবে। আমাদের এলাকার অনেকেই সৌদি আর গিয়ে ভাল আছে তাই যেতে চাচ্ছি।
বালিয়া এলাকার ফরিদ বলেন পড়ালেখা বেশী করিনি কনস্ট্রকশন কাজ শিখেছি। এ কাজে বা অন্য যে কোন কাজে হলেও যেতে যাই কারন টাকা অনেক কম খরচ হবে। এ সুযোগতো গরীবের জন্য বার বার আসে না।
মতলব উত্তরের মনোয়ার বলেন অনেক কস্টে ব্যাংক ড্রাফট করলাম। ব্যাংক ড্রাফট করার পর তা চেহারায় এক আনন্দের ছাপ লক্ষ করা গেছে। ফরম জাম দিতে কর্মসংস্থান অফিসে যাবো। ফরমে সাথে আর কি কাগজ জমা দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
সকাল থেকেই শহরের চিত্রলেখার মোড়ে সোনালী ব্যাংকের আঞ্চলিক শাখা এলাকর চিত্র ছিল অন্যান্য দিনের চাইতে ভিন্ন রকম। অনেক যুবকেই ফরম ও ব্যাংক ড্রাফটের ফরম বিক্রি করতে দেখা যায়। ফরম বিক্রিকারক মানিক বলে আমি অরজিনাল ফরম বিক্রি করছি ২০ থেকে ৩০ টাকায় এ পর্যন্ত ৫০টির উপরে বিক্রি করেছি। অনেকেই ফরম কিনলেও নিজে লিখতে না পাড়ায় যে কোন দোকানের এ কোনায় বসে অন্য কারো সহযোগিতায় ফরম ফিলাপ করছে।
এছাড়ও কোট স্টেশন এলাকায় ফরম ফিলাপ করতে দেখে গেছে তাফু নামে এক ব্যক্তিকে। পত্রিকার স্টল থেকে ১০টাকায় ফরম কিনে অনেকেই তাফুকে দিয়ে ফরম ফিলাপ করাচ্ছে।