নিজস্ব প্রতিবেদক
চাঁদপুরে ৬ বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভয়-ভীতি দেখিয়ে ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ আসামীকে আটক করে পরে সালিশের মাধ্যমে সুরাহা করার জন্য ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুর শহরের তালতলা গাজী বাড়িতে।
জানা যায়, গত ৬ আগস্ট বুধবার সন্ধ্যায় বাবা-মায়ের অবর্তমানে শিশুটি বাড়ির উঠানে গেলে পাশের বাসার মালিক মিলন গাজীর ছেলে সাকিব (১৪) তাকে জোরপূর্বক মুখে চাপা দিয়ে বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত নির্জন স্থানে শিশুটিকে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুটির বাবা মেয়েকে খুঁজতে এসে এ অবস্থা দেখে হতভম্ভ হয়ে যায়। এ সুযোগে লম্পট সাকিব দৌড়ে পালিয়ে যায়। শিশুটিকে তার বাবা উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে রাত ১১টার দিকে শিশুটির প্রচণ্ড খিচুনি শুরু হলে তার বাবা-মা শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে দ্রুত চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। খবর পেয়ে পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ অভিযুক্ত সাবিককে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে স্থানীয় গণ্যমান্যদের দ্বারা সুষ্ঠু বিচার করার আশ্বাসে উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমে এবং শিশুটির মায়ের অনুরোধে আসামীকে পুলিশ ছেড়ে দেয়।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল ডাক্তার মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, শিশুটির এ অবস্থা দেখে আমরা নিয়ম মোতাবেক থানায় পুলিশে খবর দিয়েছি। পুলিশ এসে প্রয়োজনীয় খোঁজ খবর নিয়ে গেছে। আমরা শিশুটিকে চিকিৎসা দিয়েছি এবং হাসপাতালে ভর্তি করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি। সে হাসপাতালের গাইনী কনসালটেন্ট ডাক্তার ফাতেমা বেগমের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন। এ বিষয়ে হাসপাতালের গাইনী কনসালটেন্ট ডাক্তার ফাতেমা বেগমের নিকট জানতে চাইলে ‘তিনি ব্যস্ত আছেন’ বলে তার সহকারী পরে যোগাযোগ করার কথা বলে মুঠোফোনের লাইন কেটে দেয়।
এদিকে অভিযুক্ত সাকিবের বাবা মিলন গাজীর সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি ভালোভাবে জানি না। তবে শিশুটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে জেনে আমি তাকে বেশ ক’বার দেখতে গিয়েছি এবং তার খোঁজ খবর রাখছি। আমরা উভয়প দু’একদিনের মধ্যে বসে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করবো।
এ ব্যাপারে থানায় মামলা করেছেন কি-না জানতে চাইলে শিশুটির মা জানায়, আমরা গরিব মানুষ। আমি একটি বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করি। আমাদের মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ও তাদের ভয়ে আমরা বিষয়টি থানা পুলিশকে জানাইনি। কিন্তু হাসপাতাল সূত্রে পুলিশ খবর পেয়ে অভিযুক্ত সাবিককে আটক করে। তার চাচা মুনির গাজী সহ বেশ ক’জন আমাকে হুমকি ধমকি দেয় এমনকি আমাদেরকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমার বাড়ির মালিককে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। ফলে তাদের চাপের মুখে ও ভয়ে আমি পুলিশকে অনুরোধ করে অভিযুক্ত সাকিবকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনি।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা জানায়, আমি একজন ভ্যানচালক। আমাদের পে কথা বলার কেউ নেই। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি এবং সমাজে জানাজানি হলে সাকিবের পরিবারের লোকজন আমাদের তি করতে পারে। তারা বিগত ক’দিন যাবত বিষয়টি সুরাহা করবে বলে প্রথমে আশ্বাস দিলেও এখন সুরপাল্টে উল্টো আমাদেরকে এলাকা ছেড়ে দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে। আমরা বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
শিরোনাম:
শনিবার , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৩ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।