খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এইসব প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চাঁদপুর শহরেরই বেশ কয়েকটি নামী-দামী স্কুল, কলেজ রয়েছে। স্কুলগুলোর মধ্যে প্রাথমিকস্তরের কয়েকটি কিন্ডার গার্টেন, জেলা প্রশাসন পরিচালিত একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, একটি সরকারি স্কুল এবং একাধিক কলেজ রয়েছে।
অভিভাবক মহল ও স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেল, চাঁদপুর সরকারি মাতৃপীঠ স্কুল বছরের শুরু থেকে যেভাবে বেতন আদায় পদ্ধতিতে বেতন আদায় করতেন, এখনো সেভাবেই বেতন আদায় হচ্ছে। প্রায় ১৪শ’ শিক্ষার্থী এই স্কুলে। তাদের সবার কাছ থেকেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ক্লাস শিক্ষক ও অফিসের মাধ্যমে বেতন আদায় করেছেন এবং তা অব্যহত রেখেছেন।
করোনাকালে স্কুল বন্ধ। অথচ এই বেতন আদায় বা বেতনের দিন ধার্য্য করে বা অফিসে এসে বেতন নেয়ার কোন অর্ডার আছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক প্রান কৃষ্ণ পাল বলেন না, তেমনটি নেই। তাহলে শিক্ষার্থীদের ডেকে অভিভাবক ডেকে বেতন আদায় করছেন কেন? এ প্রশ্নের কোন সদুত্তোর তিনি দিতে পারেননি। তিনি বলেন, আমাদের কিছু খরচ আছে, স্যাররা অনলাইন ক্লাস নেন, বেসরকারি কিছু কর্মচারীকে বেতন দিতে হয়, বাকিটা সরকারি কোষাঘারে জমা দিয়ে দেই। কিন্তু এটি করার কী কোন নির্দেশনা করোনার এই সময়ে নির্দেশ আছে? তিনি না সূচক জবাব দেন।
এদিকে একই বিষয়ে চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়সহ চাঁদপুরের আরো ৭টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, তারা গত ৭ মাস করোনাকালে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন আদায় করেননি।
এ ব্যাপারে হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ক্লাস হয় না, স্কুল বন্ধ, মহামারী করোনা অব্যহত- এই অবস্থায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন আদায় করবো কোন্ কারণে? তিনি বলেন, আমার ১৩শ’ শিক্ষার্থী। গত ৭ মাস আমি তাদের কাছে বেতন আদায় করিনি। পাশের সরকারি স্কুলটি বেতন আদায় করছে। অথচ আপনারা করছেন না কেন, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একবারই বলছি ভাই! করোনা চলছে, আমাদের ক্লাস হয় না। যারা এই কাজটা করছেন তারা কেন করছেন সেটা আমি জানি না। তবে এটা করা ঠিক না। তিনি বলেন, আমাদের বেতন যে একেবারই বেশি তা না! সরকার যদি বলে, তাহলে সেটি পরেও শিক্ষার্থীরা দিতে পারবে। তিনি বলেন, এমনও তো হতে পারে, সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্ধতন প্রশাসন বলতে পারে যে কাজটি করলেন কেন? এসব ফেরত দেন। আর গত ৭ মাসে ডিজি অফিস বলেনি, আপনারা বেতন তুললেন না কেন? আর সেটি তারা বললে বহু আগেই আমরা এর বার্তা পেতাম।
এদিকে সরকারি কারিগরি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা এই করোনাকালে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন নেই না। আর যেখানে ক্লাস সাসপেন্ড, শিক্ষার্থী নেই, সেখানে করোনাকালে বেতন চাওয়াটাও অমানবিক।
এই প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ফয়জুননেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোকসানা ফেরদৌস মজুমদার বলেন, আমিও করোনাকালে আমাদের শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বেতন তুলিনি। আর বেতন তোলার ব্যাপারে কোন নির্দেশনাও নেই। এই অবস্থায় বেতন তোলা ঠিক না। তবে তিনি বলেন, বেতন হয়তো তুলতে হতেও পারে কিংবা নাও হতে পারে। কিন্তু কোভিড-১৯ তে সরকারি নির্দেশ না তুলার পক্ষেই।
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ