রফিকুল ইসলম বাবু ॥
চাঁদপুর সদর উপজেলার ২নং আশিকাটি ইউনিয়নে ইউপির ২নং ওয়ার্ডের জনৈক মেম্বার কতৃক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে অনৈতিক কর্মকান্ডে খবর পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয় উক্ত ওয়ার্ড মেম্বর তাদের অনৈতিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হতদরিদ্র খলিল গাজী নামের এক অসহায় লোকের ১০ টাকা কেজি চালের ভিজিএফ কার্ড উল্লেখিত প্রবাসীর স্ত্রীকে দিয়েছেন। বর্তমানে এসব কথা জানাযানি হওয়ার ভয়ে তিনি ওই নারীকে নানান ভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে।অসহায় নারী নাজমা বেগম (৩০) জানায়, আশিকাটি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডস্থ হাপানিয়া গ্রামের মুন্সি বাড়ির কামাল বেপারীর সাথে ১৭ বছর আগে তার বিয়ে হয়। গত চার বছর আগে তার স্বামী বিদেশ চলে যায়, বর্তমানে তিনি তিন সন্তান নিয়ে বুড়ো শুশুড় সহ শশুড় বাড়িতে বসবাস করছেন। স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর থেকেই গত ৪বছর ধরে মেম্বার তাকে নানা ভাবে উত্তক্ত করতো। মেম্বার প্রতিবেশী সূত্রে তার স্বামীল বড় ভাই হওয়ায় লজ্জায় তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যেতেন। এক পর্যায়ের মেম্বার প্রায়ই তাদের বাড়িতে এসে নানা ভাবে কু-প্রস্তাব দিতে থাকে। তিনি আরো জানান, কোনো কোনো সময় মেম্বার সন্ধ্যার সময় তার ঘরে ঢুকে দড়জায় দাড়িয়ে থাকতো। নাজমা বেগম রান্নাঘর থেকে খাবার নিয়ে ঘরে ঢুকতেই তাকে জড়িয়ে ধরতো। গত মাসে মেম্বার হতদরিদ্র এক অসহায় লোকের ১০টাকা কেজির হতদরিদ্র ভিজিএফ কার্ড এনে নাজমার হাতে তুলে দেয়। এবং নগদ আরো এক হাজার টাকা দিবে বলে- রাতে দরোজা খোলা রাখতে বলেন। বিষয়টি পাশের ঘরে থেকে তার শশুর দেখে ফেললে মেম্বার দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে শশুর একথা এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের কাছে জানিয়ে দেয়। নাজমা বেগম বলেন, মেম্বার এসব কথা না বলতে তাকে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। নাজমার মা জানায়, আমার মেয়ে অনেক আগেই বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। আমার মেয়ে বাড়িতে বুড়ো শশুড় নিয়ে একা বসবাস করে। ভয়ে তাই বিষয়টি কাউকে বলতে না করেছি। পরিষদ থেকে আমার মেয়েকে হাজির হতে বলা হয়েছে। কিন্তু আলমগীর নামে আরেক মেম্বার আমাদের ভয় দেখিয়ে বলছে নাজমাকে তারা পরিষদে টাঙিয়ে পিটাবে। এই ভয়ে আমার মেয়েকে সেখানে যেতে দেইনাই। মেম্বারের ভয়ে আমি মেয়েকে ঘরের ভেতরে তালা দিয়ে আটকে রাখি। এ বিষয়ে আশিকাটি ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন মাস্টার বলেন, আমি দুই পক্ষ থেকে এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি। মেম্বার জানিয়েছে তার কাছ থেকে নাজমা বেগম ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলো। সেই টাকা না দেয়ার জন্যই নাজমা বেগম মেম্বারের নামে নানা কথা বলছে। গত রোববার এ বিষয় নিয়ে পরিষদের মিমাংসার কথা ছিলো, কিন্তু নাজমা বেগম পরিষদে আসেনি। অভিযুক্ত মেম্বার জানায়, আমার বিরুদ্ধে শত্রুতা করে এমন কুৎসা রটানো হচ্ছে। ওই মহিলার কাছ থেকে আমার বোন ৫০ হাজার টাকা পাওনা। পাওনা টাকা না দেয়ার জন্য সে এমন মিথ্যা কথা বলছে। প্রবাসীর স্ত্রীকে হতদরিদ্রের চালের কার্ড দেয়ার বিষয়ে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তিনি বলেন, এমন অনেক কার্ড আমি একজনেরটা আরেক দিয়েছি। এটা কোনো বিষয় না। তবে একবার চাউল দেয়ার পরে কার্ডটি আমি তার কাছ থেকে নিয়ে গেছি। এলাকাবাসী জানায়, অভিযুক্ত মেম্বার এর আগেও বহু নারী কেলেঙ্কারী ঘটিয়েছে। খারাপ স্বভাবের কারণে তার প্রথম স্ত্রী চলে গেছে। তৃতীয় বারের মতো বিয়ের প্রস্তুতি নেয়ার সময় তার বর্তমান দ্বতীয় স্ত্রী বিষপান করে আত্মাহত্যার চেষ্টাও করেছে।