চাঁদপুরে ছিনতাই’র উপদ্রব দিন দিন বেড়েই চলছে। শহরের ব্যাংকগুলোকে ছিনতাইচক্ররা টার্গেট করে অসহায় মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা ছিনতাই ও চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তেমনি চাঁদপুরের জোড় পুকুর পাড় মীর শপিং কমপ্লেক্সের ২য় তলা থেকে গ্রাহকের দু’ লক্ষ টাকা একটি চক্র চুরি করে উধাও হয়ে যায়। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় আবুল বাসার (৫৫) এর কাছে থাকা প্লাস্টিকের ব্যাগ কেটে ২ লক্ষ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ আবুল বাসার চাঁদপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। খবর পেয়ে মডেল থানার উপ-পরিদর্শক নাজমুল হক কামাল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ইসলামী ব্যাংকে গিয়ে ঘটনা সম্পর্কে অনুসন্ধান করে। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার সকদি হাজী বাড়ির আজিজুল হকের ছেলে আবুল বাসার বাড়ি থেকে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা প্লাস্টিক ব্যাগে নিয়ে দুপুর ১১ টা ১৫ মিনিটে ইসলামী ব্যাংকে প্রবেশ করে। এ সময় আবুল বাসার ২ লক্ষ টাকা তার শ্যালকের ওয়াসিমের গুলশান ইসলামী ব্যাংক একাউন্টে জমা দেয়ার জন্য ব্যাংকের ৬ নাম্বার কাউন্টারের ক্যাশিয়ার মমিনের কাছে জমা ভাউচারসহ জমা দেয়। তার একাউন্টের নাম্বার না মিলায় ক্যাশিয়ার মমিন ১১টা ৩৬ মিনিটে জমাকৃত পুরো ২ লক্ষ টাকা আবুল বাসারের কাছে ফিরত দেয় এবং প্রকৃত একাউন্ট নাম্বার জেনে আসার জন্য বলে। এরমধ্যে আবুল বাসার তার মোবাইল ফোনে শ্যালকের ছেলে ওয়াসিমের সাথে কথা বলতে বলতে মোবাইলে টাকা ফুরিয়ে যায়। টাকা লোড করার জন্য ব্যাংকের নিচে গিয়ে মোবাইলে টাকা লোড করে পুনরায় ব্যাংকে এসে ওয়াসিমের সাথে ফোনে কথা বলে প্রকৃত একাউন্ট নাম্বার চিহ্নিত করে। এরমধ্যেই ব্যাংকে থাকা ছিনতাইকারীচক্ররা তাকে টার্গেট করে পিছু নিয়ে তার সাথে প্লাস্টিকের ব্যাগ কেটে ২ লক্ষ টাকার ২টি ১ হাজার টাকার ব্যান্ডেল চুরি করে উধাও হয়ে যায়। আবুল বাসার ১১টা ৫৮ মিনিটে পুনরায় ৬ নাম্বারের ক্যাশিয়ার মমিনের কাছে এসে জমা ভাউচার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কিছুক্ষণ পর মমিন তার কাছ থেকে ভাউচারটি নিয়ে টাকা চায়। হতভাগা আবুল বাসার ভুলক্রমে টাকা দিয়েছে মনে করে ক্যাশিয়ারকে জানায়। ক্যাশিয়ার টাকা পায়নি বলে জানালে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্কের ভিতরে থাকা অন্যান্য কর্মকর্তারা এসে কাউন্টারটি ক্লোজ করে দিয়ে পুরো টাকা হিসাব সঠিক পায়। আবুল বাসার ব্যাংকের ক্যাশিয়ারকে দোষারোপ করে মডেল থানায় গিয়ে ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন। মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুমের নির্দেশে এসআই নাজমুল হক কামাল ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। ব্যাংকের ম্যানেজার মাহমুদ মহীউদ্দীন, উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাকে ও ক্ষতিগ্রস্থদের সামনে রেখে ব্যাংকের সিসি ক্যামেরা চেক করে দেখায়। এ সময় দেখা যায় ক্ষতিগ্রস্থ আবুল বাসার প্রথমবার টাকা জমা দেয়ার পর একাউন্ট নাম্বার না মিলায় ক্যাশিয়ার তাকে টাকা ফেরত দেয়। ব্যাংকের সিসি ক্যামেরা প্রায় ৩ ঘন্টা ব্যাপক যাচাই করার পর চুরির ঘটনা কিছুটা আঁচ করা যায়।
ক্ষতিগ্রস্থ আবুল বাসার জানায়, ব্যাংকে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা আনার পর ব্যাংক কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণে প্রায় পৌনে ১ ঘন্টা যাবৎ একাউন্ট যাচাই বাছাই না করার কারণে দেরি হওয়ায় ছিনতাইকারী চক্ররা ব্যাগ কেটে টাকা নিয়ে গেছে। ব্যাগে থাকা ২ লক্ষ টাকার ব্যান্ডেলটি নেওয়ার পরও বাকী ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ব্যাগে পাওয়ার সাথে সাথেই একাউন্টে জমা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রাহক আবুল বাসারের চুরি হওয়া দু’ লক্ষ টাকা ব্যাংকে জমা দিতে এসে চুরি হয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্তসাপেক্ষে এর সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ২৫ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ১২ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।