চাঁদপুর নিউজ রিপোর্ট
চাঁদপুর শহরের কেন্দ্রস্থল বলতে বুঝায় কালী বাড়ি, কোর্ট স্টেশন ও শপথ চত্বর এলকাাকে। এ এলাকা দিয়ে প্রতিদিন ভোর থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত হাজার হাজার নারী-পুরুষ যাতায়াত করে থাকে। আর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল এ এলাকাটিই এখন সবচেয়ে নিরাপত্তাহীন ও বিপদ সঙ্কুল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে ভাসমান পতিতাদের অবাধ বিচরণ। কোর্ট স্টেশন প্লাটফর্ম, কালীবাড়ি মোড়, ওয়ান মিনিটের গলি ও শপথ চত্বর এলাকায় ভাসমান পতিতাদের উপদ্রব দিন দিন এতটাই বাড়ছে যে, এ এলাকা দিয়ে মানুষ চলাচল করতে ভীত-সন্ত্রস্ত ও বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। অনেক সাধারণ মানুষ তাদের নাজেহালের শিকারও হয়।
চাঁদপুর কোর্ট স্টেশন জনগুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান। এ স্টেশনের প্লাটফর্মে রয়েছে চাঁদপুরের একমাত্র সংবাদপত্র এজেন্ট পাটওয়ারী নিউজ পেপার এজেন্সীর স্টল ও অফিস। এই স্টলে প্রতিদিন শ� শ� নারী-পুরুষ বিভিন্ন পত্রিকাসহ নানা ম্যাগাজিন ক্রয় করতে ভিড় করে থাকে। আর ট্রেনে যাতায়াতের জন্যও এ প্লাটফর্মে শ� শ� নারী-পুরুষের ভিড় থাকে। কলেজ পড়�য়া ছাত্র-ছাত্রীরাও ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় থাকে এ প্লাটফর্মে। আবার মাতৃপীঠ ও লেডী প্রতিমা স্কুলের অনেক ছাত্রীও এ প্লাটফর্মের উপর দিয়ে আসা-যাওয়া করে থাকে। সবমিলিয়ে প্রতিদিন ভোর থেকে রাত ৯টা/১০টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের চলাচল থাকে কোর্ট স্টেশন প্লাটফর্মে। অথচ এমন একটি জনবহুল স্থানটি এখন ভাসমান পতিতাদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৮টা/৯টা পর্যন্ত ৭-৮জন উঠতি বয়সী মেয়ে ও মধ্য বয়সী নারী পালাক্রমে এই প্লাটফর্মে বিচরণ করে থাকে। তাদের মিলনস্থল হচ্ছে এই প্লাটফর্ম। তারা এখানে একত্রিত হয়ে এখান থেকেই খদ্দের জোগাড় করে কাক্সিক্ষত স্থানে চলে যায়। কোর্ট স্টেশন প্লাটফর্মে তারা একত্রিত হয়ে আশপাশে কালীবাড়ি মোড়, ওয়ান মিনিটের গলি ও শপথ চত্বর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এদের সবাই বোরখা পরা থাকে। মাঝে মধ্যে এদের দেখা
যায় নিজেদের মধ্যে ঝগড়ায় লিপ্ত হতে। ঝগড়ার সময় তারা অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করে থাকে। পথচারী অনেক সাধারণ নারী-পুরুষ তাদের হাতে নাজেহাল হয়। এই পতিতাদের সাথে দালাল শ্রেণীর কিছু পুরুষও থাকে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর তাদের উপদ্রব ও অবাধ বিচরণ খুব বেশি বেড়ে যায়। তখন সে এলাকা দিয়ে মানুষ মানসম্মানের ভয়ে চলাচল করতে চায় না। অনেক সহজ-সরল পুরুষ তাদের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে মানসম্মান হারায় এবং নগদ অর্থসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়াতে হয়। এই পতিতাদের সাথে সংঘবদ্ধ একটি চক্রও রয়েছে। তারা আড়ালে থাকে। কোনো সাধারণ মানুষকে যখন ওই পতিতারা অহেতুক কারণে নাজেহাল করে তখন তাদের শেল্টার ওই যুবকরা এসে পতিতাদের পক্ষ নেয়। তখন ওই সহজ-সরল সাধারণ মানুষটি নগদ অর্থকড়ি বা সাথে থাকা মোবাইল সেট গচ্ছা দিয়ে কোনোরকম মানসম্মান নিয়ে বেঁচে যায়। এহেন পরিস্থিতিতে প্রতিদিন দু� একজনকে পড়তে হয়।
র্ক্টো স্টেশন এলাকায় অবাধে এমন অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেলেও এবং পরিবেশ নষ্ট করে চললেও রেল কর্তৃপক্ষ একেবারেই চুপচাপ। স্টেশনের স্টাফদেরকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এসব দৃশ্য দেখতে দেখা যায়। আবার কোনো কোনো সময় দেখা যায় কোনো কোনো স্টাফ পতিতাদের সাথে বসে খোশগল্পে মত্ত থাকতে। অথচ তারা উদ্যোগ নিয়ে জিআরপি পুলিশ দিয়ে কোর্ট স্টেশন এলাকাকে এসব অপরাধ মুক্ত রাখতে পারে। কিন্তু তারা এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেয় না। এছাড়া পকেটমার, ছিনতাইকারীদের বিচরণও থাকে এই কোর্ট স্টেশন এলাকায়। সব মিলিয়ে মানুষ অতিষ্ঠ। এর থেকে মুক্তি পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছে শহরবাসী।