চাঁদপুর জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক –
এবার মা ইলিশ রক্ষার জন্য সকল ডিপাটমের্ন্টের ব্যাপক ভূমিকা ছিল
স্টাফ রিপোর্টার॥ চাঁদপুর জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা গতকাল ১১ নভেম্বর রোববার সকাল দশটায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান পিএএ।
সভার শুরুতে বিগত মাসের প্রতিবেদন তুলে ধরেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান। বক্তব্য রাখেন,পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির পিপিএম,জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ,সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল,প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী,
সিভিল সার্জন,চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.এএসএম দেলওয়ার হোসেন, জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ডেন্ট এএসএম আজিম উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফজাল হোসেন,রাজন চন্দ,শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মিন্টুসহ জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভাপ্রধানের বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান,পিএএ বলেন- সামনে আমাদের একাদশ সংসদ নির্বাচন।জাতির জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন একটি নির্বাচন। আমরা আশা করি স্বচ্ছতা,জবাবদিহীতা,দেশের প্রতি ভালবাসা নিয়ে আমরা সবাই মিলে কাজ করতে পারব । আমাদের কাছে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রির্টানিং অফিসার যারা আমরা আছি আমাদের কাছে অর্পিত মহান দায়িত্ব যেন আমরা আমাদের দুরদর্শিতা,দক্ষতা এবং দেশপ্রেমের জায়গায় রাখতে পারি। নির্বাচনের সাথে যারা সংশ্লিষ্ট তারা ছুটি থাকবে না,তাদেরকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিব।নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আরো যারা আছেন তাদের নিয়ে আমরা পরবর্তীতে সভা করা হবে। সামনে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস।আমাদের সব দিকের প্রস্ততি রয়েছে। যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস উদযাপিত হবে । তিনি বলেন,এবার মা ইলিশ রক্ষার জন্য সকল ডিপাটমের্ন্টের ব্যাপক ভূমিকা ছিল । সাংবাদিক,পুলিশ,কোস্টগার্ড, মৎস্য কর্মকর্তা এবং আমাদের নিবাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ অনেক কষ্ট করেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা নদীতে টহল দিয়েছেন। রাজরাজেশ^র চর এলাকায় কৃত্রিম কোল্ড স্টোরেজ বানিয়ে মা ইলিশ মজুত রাখা হয়েছিল । আমরা সেখানে অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমান মাছ জব্দ করেছি। এ সফল অভিযানের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এডিএম ও অতিরিক্তি পুলিশ সুপার সদর সার্কেলকে তিনি ধন্যবাদ জানান।
পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির,পিপিএম বলেন, আগের চেয়ে চাঁদপুরের আইন শৃঙ্খলা ভাল। আমরা ইতিমধ্যে ফরিদগঞ্জ শহর এলাকা থেকে আমরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনছারুল্লাহ বাংলা টিমের সাত সদস্যকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। আটকৃতরা তাদের জঙ্গি কানেকশনের কথা আদালতে স্বীকার করেছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজা উৎসব মুখর পরিবেশে করতে পেরেছি।মা ইলিশ রক্ষায় রাত জেগেও অপারেশন করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন থেকে আমি এডিএম মহোদয়কে এবং মতলব উঃ ইউএনওকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। মাদকের উপর জিরো টলারেন্স অব্যাহত আছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও মাদকের ছড়াছড়ি না হয় আমরা সজাগ থাকব।
নির্বাচন প্রসঙ্গে এসপি বলেন, আগামি একাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেন না হয় ,তার জন্য আমরা সজাগ আছি।আমরা আমাদের কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। আমাদের সাথে নির্বাচনি মাঠে বিজিবি,সেনা বাহিনী থাকবে।সুতরাং আমরা চাই সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন দেয়ার জন্য যা যা করা দরকার আমরা করব।পুলিশের সেই সক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।
জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, সারা বাঙরাদেশের তুলনায় চাঁদপুরের আইন শৃঙ্খলা সবসময় ভাল। সকলে মিলে মিশে আমরা এগিয়ে যাব। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ,প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসন সকলে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কিন্তু আমরা আমাদের আইন শৃঙ্কলা ভাল রাখতে সক্ষম হয়েছি।নির্বাচন কমিশনারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি আগাম প্রচার প্রচারনার জন্য লাগানো বিলবোর্ড,ব্যানার ফেষ্টুন অপসারনে প্রশাসনের কাজে পৌরসভার সহযোগিতা থাকবে।আপনারা জানেন সামনে আমাদের জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচন সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে শেষ করাটাই আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারি দল বিরোধী দল সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা নির্বাচন শেষ করব। এ ক্ষেত্রে বিরোধী দল যদি নির্বাচনে না আসে,আমাদের নির্বাচনের সাংবিধানিক ধারা থেমে থাকবে না। সবার চেষ্টায় আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে,উন্নতি অগ্রগতি হবে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক আমাদের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সবার কাছে অনুরোধ জানিয়ে মেয়র বলেন, চাঁদপুরে ভাল একটা নির্বাচন আমরা করব।
জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক আলহাজ¦ আবু নঈম পাটওয়ারি দুলাল তাঁর বক্তব্যে, সপ্তাহে একদিন ঔষধের দোকান কেন ? বন্ধ রাখা হয় বিষয়টি সিভিল সার্জনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন-মানুষের জীবন রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান ঔষধ ফার্মেসী বন্ধ রাখতে পারে না।এতে মানুষ অনেক কষ্ট পায়, এ ব্যাপারে দ্রুত প্রদক্ষেপ নিতে হবে। নির্বাচনকে ঘিরে মাদকের ব্যাপকতা বাড়তে পারে। এ ব্যাপারে নজর রাখতে হবে।ইদানিং উঠতি বয়সের কিছু ছেলে গ্রুপ বেধে বিভিন্ন জায়গায় আড্ডা দিচ্ছে।বিশেষ করে মেয়েরা যখন স্কুলে যায় তখন তাদেরকে ডিস্টাব করে।বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে নজর দিতে হবে। তিনি আরো বলেন,সবাই নির্বাচনমুখী হচ্ছেন। শান্তি শৃঙ্খলার জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশসনকে আমাদের সহযোগিতা থাকবে।