রফিকুল ইসলাম বাবু ।
চাঁদপুর শহরের পদ্মা প্রাইভেট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও গাফিলতীর কারনে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩ দিনের নবজাতককে অনাবিজ্ঞ নার্স দিয়ে একাধিক সুঁইয়ের আঘাত এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে হাসপাতাল থেকে অনুমতি না দেয়ায় এমন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে ভূক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ। ১১ নভেম্বর সকাল ১০ টায় চাঁদপুর চাঁদপুর শহরের পৌর সুপার মার্কেটের ৩য় তলায় পদ্মা প্রাইভেট হাসপাতালে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এমন ঘটনার খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার অফিনার ইনচার্জ মোঃ নাসিম উদ্দিন সহ সর্গীয়ফোর্স হাসপাতালে ছুটে যান। এবং ঘটনার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন।
নিজত শিশুর পিতা মোঃ মিলন গাজী ও তার পরিবারের অন্যান্যরা জানান, গত ৯ নভেম্বর মিলন গাজীর স্ত্রী রূপালী বেগমকে পদ্মা হাসপাতালে ভর্তি করান। ওইদিন সকাল সাড়ে ৮ টায় ডাঃ নুসরাত জাহান মিতার সিজারীয়ানের মাধ্যমে তার একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। শিশুটি জন্ম হওয়ার পর থেকে ঠান্ডা জনিত সমস্যা দেখে তারা প্রাইভেটে ডাক্তার দেখানোর জন্য বেশ কয়েকবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের খামখেয়ালী মতো ওই হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা দিবেন বলে তাদেরকে অন্যখানে শিশুটিকে ডাক্তার দেখানোর অনুমতি না দেননি বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। তারা জানান, পদ্মা হাসপাতালের ডাক্তার এবং নার্সরা বলেছেন, আগে তাদের চিকিৎসা শেষ হলে তারপর না হয় অন্যখানে ডাক্তার দেখাতে। পরে শিশুটির ঠান্ডা জনিত সমস্যার কারনে ভুক্তভোগী পরিবার শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আসমা আক্তারকে শিশুটিকে দেখান। ডাক্তার আসমা শিশুটিকে দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন। ভুক্তভোগী মিলন গাজী ও তার পরিবারের অভিযোগ যখন শিশুটিকে ঢাকায় নিতে গাড়ীর জন্য বাহিরে গিয়েছেন, এর ফাঁকে হাসপাতালের দু,জন অনাবিজ্ঞ নার্স বিউটি গাইন ও রেখা শিশুটিকে ক্যানোলা পড়াতে গিয়ে তার শরীরে একাধিক সুঁইয়ের আঘাত করেন। তার কিছুক্ষনের মধ্যেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের কর্মরত নার্স বিউটি গাইন জানান, আমরা তাকে ক্যানোলা পড়ানোর জন্য রগ খুঁজে না পাওয়ায় আমরা তাকে বেশ কয়েকটা সুঁইয়ের আঘাত করেছি।
এদিকে হাসপাতালের পরিচালক মোঃ সফিউল্ল্যাহ জানান, এখানে আমাদের কোন ভুল টিকিৎসা হয়নি। বরং শিশুটির ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্ট জনিত কারনে হয়তো তার মৃত্যু হয়েছে।
পদ্মা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোস্তফা তানিম রায়হান ও ডাঃ রোকসানা আসমীর সামিয়া জানান, শিশুটি হওয়ার পর থেকে তার শুধুমাত্র ঠান্ডা জনিত সমস্যা ছিলো। এছাড়া তার শারিরীক অবস্থা ভালোই ছিলো। হঠাৎ তার শ্বাস কষ্টের কারনে চিকিৎসার জন্য তাকে ক্যানোলা পড়াতে গিয়ে রগ খুঁজে না পাওয়াতে নার্সরা একাধিক সুঁইয়ের আঘাত করেছেন। আজ সকালে তাকে দুধ পান করানোর সময় তার শ্বাসনালিতে দুধ চলে গেছে। তারপর থেকে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় এবং সে মারা যায়।