রাতের আধাঁরে অবৈধ চিনির বস্তা ট্রলারে উঠাতে গিয়ে
চাঁদপুর পুরানবাজারে বস্তা চাপায় শ্রমিকের মৃত্যু ॥ ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফন
শাহরিয়ার খাঁন ॥
চাঁদপুরে অবৈধ চিনির বস্তা রাতের আধাঁরে ট্রলারে উঠাতে গিয়ে বস্তার চাপা পড়ে হাবিব হাওলাদার মরন(৩২)নামে এক শ্রমিকের করুন মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তী থাকা অবস্থায় মঙ্গলবার ভেরে তার মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তার অবস্থা অবনতি দেখে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করলেও তাকে এই হাসপাতালে রাখার কারনে ও উন্নত চিকিৎসার অভাবে শ্রমিকের করুন মৃত্যু হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে, গত সোমবার রাত সাড়ে ৮ টায় পুরানবাজার পশ্চিম বাজার বাতাসা পট্রি দেওয়ান ঘাটে মেঘনা নদীর পাড় ।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, চাঁদপুর শহরের পুরানবাজারে সোমবার রাত সারে ৮টায় বাতাসা পট্রির মেঘনা নদীর দেওয়ান ঘাটের মেসার্স সুভাস পোদ্দারের গর্দি ঘর থেকে অবৈধ ৫০ কেজি ওজনের চিনির বস্তা ডেলি লেবার হাবিব হাওলাদার ওরফে মরন(৩৫) ট্রলারে উঠাতে গিয়ে সে পা ফসকে পড়ে যায়। এ সময় ৫০ কেজি ওজনের চিনির বস্তাটি হাবিব হাওলাদারের বুকের উপর পড়ে সে ঘটনাস্থলে গুরুত্বর ভাবে আহত হয়। তাৎক্ষনিক তাকে অন্য লেবাররা উদ্বার করে চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। এ সময় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাব্বির হোসেন হাবিবকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেয় এবং রেফার করে। তখন মেসার্স সুভাস পোদ্দারের ছেলে সুবল পোদ্দার আহত হাবিবকে ঢাকায় না পাঠিয়ে চাঁদপুরে চিকিৎসা করাতে বলে। অবশেষে মঙ্গলবার ভেরে হাবিব হাওলাদার ওরফে মরন বুকে প্রচন্ড ব্যাথা সৃস্টি হয়ে সে মৃত্যু বরন করে। নিহত হাবিব পুরানবাজার পশ্চিম বাজার দুধ হাটা এলাকার মৃত আমির হোসেন হাওলাদারের ছেলে। তার ২টি মেয়ে শিশু সন্তান রয়েছে।
এই ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে সুভাস পোদ্দার ও তার ছেলে সুবল পোদ্দার বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ির কাছে সরনাপন্ন হয়। তারা মৃত্যুর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন মহলে তবদির শুরু করে। পরে নিহতের পরিবারকে টাকার লোভ দেখিয়ে ময়নাতদন্ত ছারাই লাশ দাফন কররতে বলে। পরে মঙ্গলবার দুপুর ২ টায় লাশ জানাজা শেষে পুরানবাজার আইলারবিল পৌর কবরস্থানে দাফন করে। এই ঘটনায় লেবার সরদার শামসুল, সাহাবুদ্দিন মিদ্দা,কবির লশকর সহ বেশ কয়েকজন লেবার জানায়, পুরানবাজারে প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত মালামাল লোড আনলোড করা হয়। রাতে কোন মাল লোড আনলোড করা হয় না। মেসার্স সুভাস পোদ্দারের ছেলে সুবল পোদ্দার তার গোডাউন থেকে অবৈধ চিনি ট্রলারে উঠাতে তার ঘরের শ্রমিক মরনকে বলে। তাদের কথায় সেই অবৈধ চিনি ট্রলারে উঠাতে গিয়ে পা ফসকে পড়ে যায়। এ সময় ৫০ কেজি ওজনের চিনির বস্তাটি হাবিব হাওলাদারের বুকের উপর পড়ে সে ঘটনাস্থলে গুরুত্বর ভাবে আহত হয়। তাকে ঢাকা না নিয়ে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করার কারনে করুন মৃত্যু হয়।
এই ব্যপারে সুভাস পোদ্দারের ছেলে সুবল পোদ্দারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রমিক ওমর আমার ব্যবসা প্রতিষ্টানে কাজ করতো। মাল উঠাতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তার পরিবারের দায় দাবি পূরন করবো। আমরা অবৈধ চিনির ব্যবসা করি না এটা বৈধ চিনি ছিলো।
এদিকে পরিবারের ক্ষতিপূরন না দিয়ে শ্রমিকে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া তরিগরি করে লাশ দাফন করায় পুরানবাজরের শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এই অবৈধ চিনি পাচারকারি সুবল পোদ্দার ও তার ছেলে সুভল পোদ্দরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন ক্ষুব্দ শ্রমিকরা।