স্টাফ রিপোর্টার ॥
চাঁদপুর পৌরসভার সহকারী হিসাব রক্ষক মোঃ মঞ্জুর হাসানকে প্রতারনার দায়ে আটক করেছে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুরে শহরের তালতলা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। প্রতারক মঞ্জুর হোসেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম লাড়–য়া গ্রামের সৈয়দ আহমেদ পেদার ছেলে। এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ উপজেলার উত্তর বিশকাটালি এলাকার শাহাব উদ্দিন শিহাব চাঁদপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ২০১৬ সালে চাঁদপুর পৌরসভায় কিছু সংখ্যক লোক নিয়োগ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তির আলোকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে প্রতারক মঞ্জুর হাসান তার এলাকার বিভিন্ন লোকদের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পার্শ্ববর্তি এলাকার তার ঘনিষ্ট বন্ধু শাহাব উদ্দিন শিহাব এর কাছ থেকে চাঁদপুর পৌরসভায় সহকারী আয়কর পদে চাকুরী দেওয়ার নাম করে প্রথমে ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। চাকুরী দিতে ব্যার্থ হলে পরবার্তিতে চট্টগ্রাম কাষ্টম হাউজে উচ্চমান সহকারী পদে চাকুরী দিবে বলে জানায়। এরই প্রেক্ষিতে এই প্রতারক মঞ্জুর হাসান সরকারী খাম ব্যবহার করে ভূয়া নিয়োগপত্র শাহাব উদ্দিন শিহাবের ঠিকানায় পাঠায়। যোগদানের পূর্বে প্রতারক মঞ্জুর হাসান কৌশলে আরও ৬লক্ষ ৭ হাজার টাকা লাগবে বলে জানায় এবং তা হাতিয়ে নেয়। সর্বমোট শিহাবের কাছ থেকে ১১ লক্ষ ৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। শিহাব চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে নিয়োগপত্র নিয়ে যোগদান করতে গেলে ওই অফিসের লোকজন এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগীত করা হয়েছে বলে জানান এবং এ ভুয়া নিয়োগ পত্র কোথায় থেকে এনেছেন বলে জিজ্ঞেস করেন।
এছাড়াও প্রতারক মঞ্জুর হাসান চাকুরী দেওয়ার কথা বলে হাইমচর আলগী এলাকার ইমাম হোসেন নামে এক লোকের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, একই এলাকার রিয়াদ হোসেনের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ও রায়পুরের সোহেল নামে আরেক জনের কাছ থেকে ৭ লক্ষ টাকা সহ আরো একাধিক মানুষের কাছ থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মতো হাতিয়ে নেয়।
ভুক্তভোগী শিহাব জানায়, আমার টাকার বিষয়ে এলাকায় একাধিক শালিশ বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকের ফলেই বেরিয়ে আসে তার আরও টাকা আত্মসাতের ঘটনা। শালিশ বৈঠকে ২০/০৭/২০১৭ইং তারিখে আমার টাকা দিবে বলে একটি অঙ্গিকার নামা প্রদান করেন। আমি সেই প্রেক্ষিতে তার কাছে টাকা চাইলে সে পূণরায় আমার কাছ থেকে সময় নেয় এবং গতকাল সোমবার ২১ আগষ্ট চাঁদপুর শহরের তালতলায় আসতে বলে। আমি তালতলা এসে মঞ্জুর হাসানের কাছে টাকা চাইলে সে এবং তার লোকজন মারধর করতে আসে ও টাকার বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমাকে প্রানে মেরে ফেলবে বলে জানায়। বিষয়টি আমি আশপাশের লোকজনকে জানালে তারা তাকে আটক করে পুলিশ সুপারকে জানান। পরে চাঁদপুর মডেল থানার পুলিম তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। মঞ্জুর আমার পার্শ্ববর্তী এলাকার লোক এবং চাঁদপুর পৌরসভায় চাকুরী করার সুবাধে তাকে বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু সে যে, এতো বড় প্রতারক তা আমার জানা ছিলো না।
সে আরোও জানায়, মঞ্জুর হাসানের সাথে যে কারো টাকার বিষয় নিয়ে সমস্যা হলে ওই এলাকার বিল্লাল হোসেন তার পক্ষ নিয়ে পাওনাকৃত লোকদেরকে বিভিন্ন হুমকী ধমকি দেয় এবং খারাপ আচরন করে।
চাকুরী ও টাকার বিষয়ে মঞ্জুর হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সম্পুর্ণ বিষয়টি স্বিকার করেন এবং সে জানায়, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে টাকা দিয়েছি। আবার এমপি, মন্ত্রী ও সচীবদের নাম বলতে থাকে।
গত কয়েকদিন পূর্বে আন্তজেলা প্রতারক চক্রের এক সদস্য হাজীগঞ্জের এক প্রতারককেও এমন ঘটনায় আটক করা হয়। তার সাথেও মঞ্জুর হাসানের যোগাযোগ আছে বলেও ভোক্তভুগী অনেকে জানায়।