শাহারিয়ার খান কৌশিক ॥ চাঁদপুর শহরের ওয়ারল্যাস মোড় এলাকায় ফ্ল্যাট বাসায় চায়ের সাথে চেতনানাশক ঔষধ মিষিয়ে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুট করার ঘটনায় ঢাকা মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মালামালসহ কথিত দম্পতিকে আটক করেছে পুলিশ। আজ রবিবার সকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাকির আটক দম্পতিকে চাঁদপুর মডেল থানায় নিয়ে আসে। ঢাকা মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাট বাসায় তল্লাশী করে লুট করা মালামাল ল্যাপটপ উদ্ধার করে। জানা যায়,
শহরের ওয়ারল্যাস মোড় এলাকার গ্যাস অফিসের পাশে ৩০৮ নং হল্ডিং এর মায়ের আচল ভবনে ২য় তলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মিয়া দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করে আসছে। গত ২ ডিসেম্বর বুধবার ৫ মাস আগে ঐ ভবনে থাকা ভাড়াটিয়া ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিউটি আক্তার বিথী (২৫) বেড়ানোর নাম করে এ বাসায় আসে। অতিথি হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মিয়া ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম তাকে আপ্যায়ন করে। পরে ঐ দিন সন্ধ্যায় সবাই মিলে টিভি দেখার এক ফাঁকে বিথী চা বানাতে যায়। চায়ের সাথে চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে তাদেরকে খাওয়ায়। চা খাওয়ার সাথে সাথে সুলতান মিয়া ও আনোয়ারা বেগম অচেতন হয়ে পরে। এ সুযোগে আলামারিতে থাকা ৬ ভরি স্বর্ন, ১টি ল্যাপটপ ও নগদ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। সে যাওয়ার সময় বাইরে থেকে দরজা আটকে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরের দিন বিকেল ৪ টায় বাড়ির মালিক তাদের সাড়া শব্দ না দেখে খোঁজ নিতে এসে দেখে তারা অচেতন হয়ে পরে আছে। পরে ২৬ ঘন্টা পর তাদেরকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়। এ ঘটনায় সুলতান মিয়া বাদি হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।মমামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জাকির হোসেন গত শুক্রবার ঢাকা গিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিনভর ঘামঝড়া পরিশ্রম করে তাদের আটক করতে সক্ষম হয়েছি। প্রথমে মোবাইল ট্র্যাকিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢাকার কেরানীগঞ্জ, হাজারীবাগ ও বাড্ডা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শনিবার রাত ১০ টায় আক্তার বিথীর কথিত স্বামী মুন্সিগঞ্জ জেলার আঃ মান্নানের ছেলে মনির হোসেন সুমন (রানা) কে কৌশলে তার আত্বিয় দিয়ে ফোন করে আটক করে। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে রাত আড়াই টায় ঢাকার মোহামা¥দপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাট বাসার ৪র্থ তলা থেকে ফরিদগঞ্জ উপজেলার মৃত আলী আহম্মদ এর মেয়ে বিউটি আক্তার বিথীকে আটক করি। এসময় তার ঘর তল্লাশী চালিয়ে লুট হওয়া ল্যাফটপ উদ্ধার করি। তরে স্বর্নালঙ্কার ও নগদ টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি। আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতের কাছে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। পরে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি মালামালের সন্ধান বের করা হবে। এরা বিভিন্ন যায়গায় স্বামী স্ত্রীর মিথ্যা পরিচয় দিয়ে সুবিধা মতো সুযোগ বুঝে মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে এসব ঘটনা ঘটায়। এর পূর্বেও তারা অনেক জায়গায় এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যপারে চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানান, অপরাধী যত চালক হোক না কেন পুলিশের চোখকে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব তা চক্ররা অভিনব কায়দায় মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে প্রতিনিয়ত এসব ঘটনা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘটাচ্ছে। আটকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদের আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। বাকি মাল উদ্ধারের জন্য পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে আটক বিউটি আক্তার চায়ের সাথে চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে অজ্ঞান করে লুটের ঘটনার কথা স্বিকার করেছেন। এবং এ ঘটনা তার কথিত স্বামীর কথায় ঘটিয়েছে বলে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন।