রফিকুল ইসলাম বাবু ॥
চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ফায়ার সার্ভিসের পেছনে মহিউদ্দিনের বাড়ির ৩য় তলায় মঙ্গলবার দুপুরে প্রেমের জের ধরে জোড় পুকুর পাড়স্থ হোসেন প্লাজার জর্ডানা বাজার মালিকের তামান্না আক্তার সুখী (১৮) নামের এক গৃহকর্মী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পটুয়াখালি ফারুক হাওলাদারের মেয়ে তামান্না আক্তার সুখীকে ৫বছর বয়সে গৃহের কাজ করার জন্য আব্দুল খলিল রহমান চাঁদপুরে নিয়ে আসে। তারপর থেকেই ১৪বছর যাবত তামান্না আব্দুল খলিল রহমানের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে আসছিল। খলিল রহমানের স্ত্রী শাহারা বেগম জানায়, ৫বছর বয়স থেকে তামান্নাকে লালন-পালন ও ভরন পোষন করেই আমাদের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করে আসছে। অন্যদিনের ন্যায় সকালের নাস্তা করে আমি ও আমার স্বামী কর্মস্থলে চলে আসি। তামান্নার সাথে থাকা অন্য গৃহকর্মী আমেনা দুপুরের দিকে আমাকে ফোন করে জানায়, তামান্না ঘরের দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সাথে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি এ খবর শুনার সাথেসাথে বাসায় চলে আসি। কি কারনে তামান্না এ পথ বেছে নেয় সেই সম্পর্কে তিনি বলেন, একই এলাকার পিয়াস নামের এক যুবকের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে আমি জানতাম। ছেলের বাড়ি ঘর কোথায় তা আমি জানি না। তবে ছেলেকে দেখলে চিনব। তামান্না প্রায় সময়ই ছেলেটির সাথে মোবাইলে কথা বলত। আমি তাকে অনেক বারন করতাম। কিন্তু তামান্না আমার কথা শুনত না। হয়ত প্রেমের কারনেই সে এ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তামান্নার সাথে থাকা আরেক গৃহকর্মী আমেনা জানায়, আমি ৩ মাস পূর্বে গোপালগঞ্জ থেকে কাজ করার জন্য এ বাড়িতে আসি। মঙ্গলবার সকালে তামান্না নাস্তা করে মোবাইলে কার সাথে যেন অনেকক্ষন যাবত কথা বলতে শুনতে পাই। পরে আবার তার মোবাইলে ফোন আসলে তামান্না উচ্চ স্বরে কথা বলতে বলতে কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। এরপর অনেকক্ষন পর তার কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে আমি শাহারা আন্টির মামাতো বোন আমেনা আপাকে বিষয়টি জানাই। পরে আমেনা আপা আমাকে রাস্তার পাশের জানালা দিয়ে সে কি করছে দেখতে বলে। এরপর আমেনা আপাসহ স্থানীয় কয়েকজন যুবক মিলে দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে তামান্নাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই।এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে উচ্ছুক জনতা ভীড় জমায়। মডেল থানায় বিষয়টি কে অবহিত করা হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে লাশটি ময়না তদন্তের জন্য থানায় নিয়ে যান। এ খবর শুনে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফজাল হোসেন, চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়ালী উল্ল্যাহ ওলি, তদন্ত অফিসার মহিউদ্দিন মিয়া ও তদন্ত কর্মকর্তা। একটি সূত্রে জানা যায়, তামান্নার সাথে দীর্ঘ দিন পালপাড়ার পিয়াসের সাথে প্রেমের সম্পর্ক থাকার পর বিবাহ হয়। বাড়িতে কেউ না থাকলে প্রায়ই পিয়াস ঐ বাড়িতে যাওয়া আসা করত। তামান্না স্ত্রীর স্বীকৃতি হয়ত না পাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে এ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে যারা দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে তাদের মধ্যে থেকে রুমে থাকা ২টি মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায় বলেও জানায় যায়।