চাঁদপুর : নীরবে নিভৃতে চলছে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র চাঁদপুর-এর কার্যক্রম। ‘বদলে যাও বদলে দাও’ বাক্যটি এখানকার জন্য প্রযোজ্য। ১৯৫৮ সালে বেসরকারিভাবে এ কেন্দ্রটি চালু হয়। ১৯৭৪ সালে সরকারিকরণ করা হয়। চাঁদপুরের এ প্রতিষ্ঠানটিতে অনেকেরই জন্ম হয়েছে। প্রথমে এ প্রতিষ্ঠানটিতে শুধুমাত্র স্বাভাবিক প্রসব করানো হতো। পরে টঘঋচঅ-এর সহযোগিতায় জটিল প্রসবে সিজারিয়ান শুরু হয়। মাঝে ২০০৪-২০০৫ পর্যন্ত এই কেন্দ্রের ডাক্তারের অসহযোগিতায় তা’ মুখ থুবড়ে পড়েছিল। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে একজন পূর্ণ সময়কালীন ডাক্তার এম ও (ক্লিনিক) ডা. স্বপ্না রায় ও আরেকজন সংযুক্ত ডাক্তার ডা. মো. ইলিয়াছ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। প্রচার বিমুখ এই দুই ডাক্তারের ব্যক্তিগত চেম্বার নাই। কখনো বাসায় রোগী গেলে অন্য ডাক্তারের মতো খুশি হন না। রয়েছে একজন ড্রাইভার, একজন নিরাপত্তা প্রহরী। একজন ক্লিনার দিয়ে চলছে এ হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম। এ হাসপাতালে মাসে ২৫-৩০টি সিজার হয়। ৬০-৭০টি স্বাভাবিক প্রসব হয়। ২৫-৩০টি স্থায়ী বন্ধ্যাকরণ, ৩০-৪০টি ইমপ্ল্যান্ট, ২৫-৩০টি কপারটি, ২৬০টি বড়ি গ্রহীতা, ৫৮টি কনডম গ্রহীতা, ৬৭টি গর্ভবতী, গর্ভোত্তর ৬৬ জন, ৫০৭ জন শিশু, ১১৬টি পরিবার-পরিকল্পনা সংক্রান্ত জটিলতার রোগী, ৫২টি সন্দেহজনক ব্রেস্ট ক্যান্সারের পরীক্ষা, ৬২টি সন্দেহজনক জরায়ু ক্যান্সারের পরীক্ষা, ৯৪৮ জন সাধারণ রোগীর সেবা দেয়া হয়।
সরকারি আইন অনুযায়ী ২০ বেডের প্রতিষ্ঠানে বহিঃ বিভাগে ডাক্তার, আন্ত: বিভাগে ৩ জন ডাক্তার, তিনজন গাইনী প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত/কনসালটেন্টের জন্য শিশু ডাক্তার, ৩জন এনেসথেসিয়া এবং ৬ জন নার্স ও সাপোর্টিং স্টাফ থাকার বিধান। কিন্তু নিয়োগ নেই। জানা যায়, একই ডাক্তার শিশু রোগী, এনেসথেসিয়া, দীর্ঘ ও স্থায়ী মেয়াদী পদ্ধতির অপারেশন এবং সদর উপজেলার ১৫০ মাঠ/ক্লিনিক্যাল কর্মীর প্রশাসনিক, আর্থিক ও কার্যক্রমের দায়িত্ব পালন করতে হয়। এ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমকে ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় পদ সৃষ্টি ও সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে দুজন কর্মরত ডাক্তার জানান। তারপরও এখানকার সেবা দেশের অন্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে উন্নত। সরজমিনে কয়েকজন রোগীর সাথে কথা বললে তারা জানান, এখানে আমার মা, আমি এবং আমার সনতদান জন্ম গ্রহণ করেছে। ডাক্তারসহ অন্যান্য যারা এই হাসপাতালে কর্মরত আছেন তারা রোগীদের সেবা প্রদান করে আসছেন। আর আমরা যদি ডাক্তারদের পরামর্শ মতে চলাফেরা করি তাহলে কোনো সমস্যা হয় না। বর্তমানে রিক্সাচালক দালালদের দ্বারা রোগীরা প্রতারিত হন। বিভিন্ন প্যাথলজি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালরা মাতৃমঙ্গলের উদ্দেশ্যে আসা রোগীদের মিথ্যা কথা বলে অন্যত্র নিয়ে যায়। এক রোগীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি আয়েশা বেগম ও আমার খালা খুরশিদা বেগম সিএনজি স্কুটারযোগে পালবাজারের সামনে ব্রিজের নিকটে এসে রিক্সা চালকদের মাতৃমঙ্গল হাসপাতালে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বললে তারা আমাদেরকে বলে, আজ হাসপাতাল বন্ধ। এ বলে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক প্যাথলজি ও ডাক্তারদের কাছে নিয়ে যায়। এর কয়েকদিন আগে দালালরা বলে, মাতৃমঙ্গল হাসপাতালে আগুন লেগেছে। তারা বলেন, তাদের কোনো কথায় কর্ণপাত না করে আমরা এখানে এসেছি। কিন্তু দূর দূরন্ত থেকে আসা অনেক রোগী এসব দালালের খপ্পরে পড়ে অতিরিক্ত সময় ব্যয় ও টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ হয়রানির শিকার হচ্ছে।
শিরোনাম:
সোমবার , ২১ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৮ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।