শওকতআলী:
চাঁদপুর মৎস্য আড়তে হঠাৎ করে গত ৩দিন যাবত প্রচুর ইলিশ আমদানী হয়েছে। গতকাল শনিবার চাঁদপুরের ৫০টি আড়তের মধ্যে ২০টি আড়তে প্রায় ১২হাজার মন ইলিশ আমদানী হয়েছে,বলে ইলিশ আড়ৎদাররা জানান। যা এ বছরের সব চেয়ে রেকট পরিমান আমদানী। এ ইলিশ ক্রয় করতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে শত-শত মানুষ মৎস্য আড়তে এসে ভিড় করেছে। মানুষ আর মাছে একাকার মাছ ঘাট। গত ১ সপ্তাহ যাবত এ ইলিশ দেশের বিভিন্ন স্থান হতে শত-শত ক্রেতা ক্রয় করছে অনলাইনে। চাঁদপুরের মৎস্য ব্যবসায়ীরা ও এ অনলাইনে ইলিশ বিক্রি করতে পেরে আনন্দ ্উপভোগ করেছে। মৎস্য ব্যাবসায়ীরা জানান, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ২২দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকার কারনে জেলারা দিন রাত ইলিশ আহরন করে গত ৭দিন যাবত প্রতিদিন ৭/৮ হাজার মন ইলিশ সমুদ্র ও নদী থেকে আমদানী করেছে। গতকাল শুক্রবার ও শনিবার প্রায় ২০ হাজার মন ইলিশ চাঁদপুর মাছ ঘাটে আমদানী হয়েছে। এ ইলিশ চাঁদপুর জেলা ছাড়া ও দেশের বিভিন্ন জেলায় প্যাকেট জাত করে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ভারতে ইলিশ রপ্তানীর এলসি বন্ধ থাকার পরও এক শ্রেনীর অসাধু কিছু ব্যবসায়ী দেশের বিভিন্ন জেলার নাম করে এ সব ইলিশ ভারতে পাচার করে লক্ষ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চট্রগ্রামের হাতিয়া ও দেশের দক্ষীন আঞ্চলে ইলিশ প্রচুর ধরা পড়লেও ইলিশ সেখান থেকে বিভিন্ন জেলায় না পাঠিয়ে, চাঁদপুর পাঠিয়ে চাঁদপুরের ইলিশ বলে এ সব ইলিশ চাঁদপুর থেকে প্যাকেট জাত করে বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী করা হচেছ। এতে করে ক্রেতা পদ্মা ও মেঘনার ইলিশ মনে করে ইলিশ ক্রয় করে প্রতারিত হচেছ। আর ব্যবসায়ীরা এ সুযোগে প্রতারনা করে বিরাট আংকের অর্থ হাতিয়ে নিতে দেখা যাচেছ। গতকাল শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ইলিশ ক্রয় বিক্রয়ে ছিল হাহাকার। ইলিশের মূল্য ছিল অনেক চড়া। বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বরফ সংকটের কারনে ইলিশ ছিল পানির দাম। বড় সাইজের ইলিশ ছিল ২৪/২৫ হাজার টাকা মন,মাজলা সাইজের ইলিশ ছিল ১৮/১৯ হাজার টাকা মন, ৫শ গ্রাম হতে ৬শ গ্রাম ইলিশের মন ছিল ১১হাজার টাকা মন। যা” অন্য দিনের তুুলনায় ও শনিবার সকালের তুলনায় পানির দাম বলে জানান,ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।
দেশের দক্ষিন এলাকা সাগরের ভাটি অঞ্চল ও চট্রগ্রামের হাতিয়া থেকে এ ইলিশ আমদানী করে আনছে,শত-শত জেলে ও ব্যাবসায়ীরা। তারা দীর্ঘ দিন পরে ভর মৌসুমে ইলিশ আমদানী করতে পেরে তাদের মধ্যে আনন্দে জোয়ার বইছে। বর্তমানে ইলিশের যে দাম তা”ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে।
চাঁদপুর মৎস্য আড়তে প্রচুর ইলিশ আমদানীতে ব্যাবসায়ী,ক্রেতা,–বিক্রেতারা ইলিশ ক্রয়-বিক্রয়ে আনন্দে মেতে উঠতে দেখা ঠতে দেখা যাচেছ।
সরোজনিনে চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মৎস্য আড়তে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চট্রগ্রামের হাতিয়া ও দক্ষিন অঞ্চলের ভাটি এলাকা কুয়াকাটা,পাথরঘাটা,মহিবুল,বরিশাল,চরফেশান,সামরাজসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এ সব ইলিশ আমদানী হচেছ । ব্যবসায়ীরা জানান,গত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশের দাম অনেক কম। এ ছাড়া চাঁদপুরে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে আশানুরুপ ইলিশ পাওয়া যায়নি এ ভর মৌসুমে। যা ও ধরা পড়ছে,তার দাম আকাশ চুম্মি প্রতি মন লোকাল ইলিশ ৫৫ হাজার টাকা মন,প্রতি কেজি ইলিশ ২ হাজার টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, ৫শ,৬শ ও ৭শ গ্রামের ইলিশ আমদানী হচেছ সব চেয়ে বেশী। ব্যবসায়ীরা আরো জানান,গত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশ আমদানী অনেক বেশী ও দাম কম। যার ফলে সাধারন ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে বাজার দর।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর মৎস্য বনিক সমবায় সমিতির লি: এর সভাপতি আবদুল খালেক মাল জানান, এ বছর ইলিশের ভর মৌসুমে প্রচুর ইলিশ আমদানী হয়েছে। গত বছরও এ সময় প্রচুর ইলিশ ধরা পরেছে। এ বছর সে তুলনায় কম ধরা পরছে। ।
চাঁদপুর মৎস্য আড়তের মানিক ট্রেডার্সের বিশিস্ট ব্যবসায়ী বাবুল হাজী জানান, গত ৬/৭ দিন যাবত ইলিশের আমদানী বেশী হচেছ। এ পূর্বে আমদানী কম ছিল। এখন প্রতি দিন ৭/৮ হাজার মন ইলিশ আমদানী হচেছ। দাম ক্রেতার ক্রয় ক্ষয়তার মধ্যে। এখন সম্পূর্ন ভর মৌসুম। গত বছর ইলিশের আমদানী বেশী ছিল, এ সব ইলিশ চাঁদপুর ছাড়াও সিলেট মৌলুবী বাজার,ময়মনসিংহ,আবদুল্লাহপুর,ঢাকা কারন বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী করা হয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে মৎস্য ব্যবসায়ী ছিদ্দিক আলীর সাথে কথা বললে সে জানান,চাঁদপুরের নদীতে ইলিশ ধরা পরছেনা। আমদানী কৃত ইলিশ কুয়াকাটা,পাথরঘাটা,মহিবুল,বরিশাল,চরফেশান,সামরাজসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসছে। ইলিশের দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম। গত এক সপ্তাহ আগে এ ইলিশ বিক্রি হয়েছে,৩৩হাজার টাকা মন। এখন বিক্রি হচেছ ২২হাজার টাকায়।