চাঁদপুর শহরের ওয়াপদা এলাকায় আবাসিক ভবনের উপরদিয়ে পল্লি বিদ্যুতের নিয়ম বহির্ভূত ১১ হাজার বোল্ডের বৈদ্যতিক লাইনের কারণে বড় ধরণের দুঘটনার আসঙ্কায় আতঙ্কিত এলাকাবাসি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঐ এলাকায় নতুন করে গড়ে ওঠা আবাসিক এলাকার বিল্ডিং বাড়িগুলোর উপরদিয়ে চাঁদপুর পল্লি বিদ্যুতের ১১ হাজার বোল্ডের বৈদ্যতিক লাইন রয়েছে। এর মধ্যে ৯৩৩/১ নং হোল্ডিং নাম্বারের আলহাজ্ব হাফেজ মোঃ রফিকুল ইসলামের মালিকানাধীন ৪ তলা বিশিষ্ট ইসলামিয়া হাউজের ছাদের উপরে মাত্র একফিট উচ্চতায় রয়েছে উচ্চ মতা সম্পন্ন তিন তার বিশিস্ট এই ১১ হাজার বোল্ডের বৈদ্যতিক লাইনটি। তাও আবার সিড়ি ঘরের উপরে আরসিসি পিলারের বেরিয়ে থাকা রডের গাঁ ঘেষে রয়েছে বৈদ্যতিক তার গুলো। এমন দৃশ্য দেখার পর কথা হয় বাড়ির মালিকের সাথে। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের জানায়, বৈদ্যতিক লাইনটি সরানোর জন্য বহুবার চেষ্টা ও টাকা ব্যায় করেছি এবং এটি সরানোর ব্যাপারে কয়েকবার পল্লি বিদ্যুতের কাছে দরখাস্ত দিয়েও কোন কাজ হয়নি।
সর্বশেষ আমার বাড়ির কাজ উপরে সম্প্রসারণ করার লে একটি দরখাস্থের মাধ্যমে ৪৫ ফিট উচ্চতার একটি পিলার বসানোর ব্যবস্থা করি। আর এ খেত্রে সব ধরণের নিয়ম মেনে এবং য়-তির দায়-দায়িত্ব বহনের শর্তে পল্লি বিদ্যুতের অনুমোদন নিয়েই আমি বিল্ডিং বর্ধিত করিয়েছি। যা একটি স্টাম্পে লিখিত রয়েছে। পল্লি বিদ্যুতের নিয়মানুযায়ী জানা যায়, বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে বৈদ্যতিক তার ৮ ফিট উচ্চতায় থাকার বিধান রয়েছে। কিন্তু আপনার ছাদের উপরে মাত্র একফিট উচ্চতায় রয়েছে উচ্চ মতা সম্পন্ন তিন তার বিশিষ্ট এই ১১ হাজার বোল্ডের বৈদ্যতিক লাইনটি। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ দিকে এলাকাবসির অভিযোগ, পল্লি বিদ্যুতের ডিজিএম ও অন্যান্য কর্মকর্তাদেরকে ৫ ল টাকা দিয়ে সম্পূর্ণ অনিয়মে এই পিলার বসানোর কাজটি করিয়েছেন বাড়ির মালিক মোঃ রফিকুল ইসলাম। এ ব্যাপারে তার কাছথেকে জানতে চাইলে তিনি জানান, পিলার ক্রয়ে ৪৬ হাজার, কন্ট্রাক্টরের কাজের বিনিময়ে ১৪ হাজারসহ অন্যান্য খরচ বাবদ পল্লিবিদ্যুতের কর্মকর্তাদের আমি সর্বমোট ৭৫ হাজার টাকা দিয়েছি। এ সময় তিনি ৫ ল টাকার বিষয়টি এড়িয়ে যান।
অন্যদিকে এমন লেনদেনের বিষয়ে পল্লি বিদ্যুতের চাঁদপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম মহিতুল ইসলামের সাথে আলাপকালে তিনি সাংবাদিকদের জানায়, এ অভিযোগের কোন গ্রহনযোগ্যতা নেই। তবে দিয়ে থাকলেও এ টাকা আর খুজে পাওয়া যাবে না। আর ঐ বাড়ির মালিক আমাদের কাছে লাইনটি সরানোর ব্যাপারে আদৌ কোন দরখাস্থ দেন নি। তিনি আরো বলেন, বাড়ির কাজ উপরে সম্প্রসারণ করা না করার অনুমোদন দেবে পৌরসভা। এ ব্যাপারে অনুমোদন দেয়ার কোন এখতিয়ার আমাদের নেই। বরং বাড়ির কাজ উপরে সম্প্রসারণ না করার বিষয়ে গত ২২/১০/২০১২ ইং তারিখে (স্বারকনং-চাঁজঅ/৯০০.০৩/২০১২/১১০২) এবং ২৯/১২/২০১২ ইং তারিখে (স্বারকনং- চাঁজঅ/৯০০.০৩/২০১২(১৪১৯)/১৬৭৬) বাড়ির মালিককে চিঠি দেওয়া হয়। যার প্রথম স্মারকটিতে উল্যেখ করা হয়, ১১হাজার কেভি এইচটি বৈদ্যতিক লাইন ঘেষে দ্বিতল ভবনটি (যার ১ম তলা সম্পন্ন হয়েছে) উক্ত তার থেকে নিরাপদ দূরুত্ব বজায় রেখে করার জন্য। তিনি তা কর্ণপাত না করায় দ্বিতীয় আরেকটি চিঠি দেয়া হয়। এসব স্মারক গুলোর অনুলিপি উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেযর বরাবর পাঠানো হয়। এমনকি প্রাথমিক ব্যাবস্থা হিসেবে বাড়ির বৈদ্যতিক লাইনটি বিচ্ছিন্ন করা হয়।
তবে লাইনটি অপসারনের জন্য এলাকাবাসি ও বাড়ির মালিকদের প থেকে দরখাস্ত পেলে অচিরেই লাইনটি সরানোর ব্যাবস্থা করা হবে বলে সাংবাদিকদের আশ্বাস দেন পল্লি বিদ্যুতের এই কর্মকর্তা। এ েেত্র এটি করার জন্য যে ব্যায় হবে তার একটি অংশ বহন করার অশ্ব^াস পেলে দ্রুত কাজটি করা সম্ভব হবে।
সর্বশেষ ভবনটির প্লান অনুমোদনের বিষয়ে মালিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানায়, এটি প্রথমে উপজেলা পরিষদ থেকে ৩ তলার অনুমোদন নেয়া হয়। পরে চাঁদপুর পৌরসভা থেকে ৪ তলার প্লান পাস করা হয়। পরে এ বাড়িটির প্লান পাস করার বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার জাহিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ভবনটি ৪ তলার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আর তা পল্লি বিদ্যুতের ১১ হাজার কেভি এইচটি বৈদ্যতিক লাইন থেকে নিরাপদ দুরুত্ব বজায় রেখে করতে হবে এমন শর্তে অনুমোদনটি দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে ১১ হাজার কেভি এইচটি বৈদ্যতিক লাইনটি ভবনের মাত্র একফিট উপর দিয়ে এবং ছাদের বেরিয়ে থাকা রডের গা ঘেঁষে থাকার বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানায়। এ ছাড়াও তিনি বলেন, এ ধরনের ভবন নির্মানের েেত্র বৈদ্যতিক লাইনের কম পে ১০-১৫ফিট দুরুত্ব বজায় রাখার বিধান রয়েছে পৌরসভার। পরে তিনি বলেন, সরেজমিনে গিয়ে দেখার পর যদি বর্ণনাকৃত এমন দৃশ্য দেখা যায়, তাহলে আইনানুযায়ী উপরের এক তলার অনুমোদন বাতিল করে তা অপসারণ করা হবে।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ২৫ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ১২ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।