শওকত আলী ঃ
চাঁদপুরে স্বাধীনতাত্তোর সময়ে এদেশের সংখ্যালঘুরা বিভিন্ন ভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তখন এদেশের রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের কোন ভূমিকা উল্লেখযোগ্য ভাবে পালন করতে দেখেনি সংখ্যালঘু নেতারা। চাঁদপুরের সংখ্যালঘু নেতারা জানান, তার পরও চাঁদপুরে স্বাধীনতাত্তোর সময় সংখ্যালঘুদের প্রতি সাধারণ মুসলিম জনগণের সু-নজর আছে বলেই গ্রামগঞ্জে হাজার-হাজার মুসলিমদের সাথে অল্প সংখ্যক সংখ্যালঘু পরিবার গুলো বসবাস করতে পাচ্ছে।
স্বাধীনতাত্তোর সময়ে সংখ্যালঘুদের মা, বোন ও এলাকার যুবতী, কিশোরীদের তুলে নিয়ে এক শ্রেনীর প্রভাবশালীরা তাদের ইজ্জত লুন্ঠন ও তাদের অনেককে নির্যাতনের পর হত্যাও পর্যন্ত করা হয়েছিলো। সংখ্যালঘুদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে তাদের বাড়ি- ঘর প্রভাবশালীরা দখল করে নিয়েছেন। অনেকে সংখ্যালঘুদের ভয় দেখিয়ে তাদের সম্পত্তি নিজেদের নামে রেকর্ড করেছেন বলে অনেকে তাদে মতামত প্রকাশ করতে গিয়ে জানান। স্বাধীনতাত্তোর সময় অনেক ব্যাক্তি বা অনেক পরিবার নির্যাতনের ভয়ে ও নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ভিটা- বাড়ি রেখে ভারতে পালিয়ে গিয়েছে। এদের সংখ্যা অসংখ্য বলে সংখ্যালঘু নেতারা জানান। কোন কোন এলাকায় শত শত ব্যাক্তি ও পরিবার তাদের যুবতী, কিশোরী মেয়েদের নিয়ে এলাকা ত্যাগ করে পাশর্^বর্তী দেশে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। এদেশে স্বাধীনতাত্তোর সময় রাজনৈতিক দল ছিলো সিমিত। এখনকার মতো এতো রাজনৈতিক দল তখন ছিলো না। যেসব রাজনৈতিক দল ছিলো তারা সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করতে দেখেও না দেখার মতো থাকতো। তারা সংখ্যালঘুদের নির্যাতন প্রতিরোধে কঠোর ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে আাসেনি। কিছু সংখ্যক রাজনৈতিক নেতারা সংখ্যালঘুদের নির্যাতনে প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করলেও তা পরবর্তীতে আবার ভিন্ন রূপ ধারণ করতো। নির্যাতিতদের অত্যাচারে রাজনৈতিক নেতারা উপায় না পেয়ে এদেরকে অন্যত্র চলে যাওয়ার পরামর্শ দিতে বাধ্য হতো। তবে সংখ্যালঘু দলিত নেতারা জানান, পুরান বাজারে তারা বিড়ি কোম্পানির মালিক আব্দুল মজিদ খান সংখ্যালঘুদের বিপদে তাদের প্রতি সু-দৃষ্টি দিয়ে তাদেরকে খাদ্য ও অর্থ দিয়ে সহযোগীতা করেছিলেন। এছাড়া ওই সময়ে মেম্বার মরহুম দেওয়ান আবুল খায়ের, বাসু আখন্দ, রফিউদ্দিন আখন্দ (সোনা আখন্দ), মরহুম লুৎফুর রহমান পাটওয়ারী (লতু পাটওয়ারী), সংখ্যালঘু ও হরিজনদের সকল সময় খোঁজ খবর নিতেন এবং তাদের সার্বিক সহযোগীতা করতেন। এরা সংখ্যালঘু নির্যাতনে প্রতিরোধ করার চেষ্ঠা করতেন। অপরদিকে হিন্দু নেতাদের মধ্যে জীবন কানাই চক্রবর্তী সংখ্যালঘুদের নির্যাতনে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতেন। যার ফলে অনেক সংখ্যালঘু নির্যাতিতদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে এবং তাদের বাড়ি-ঘর ও জায়গা জমি রক্ষা পেয়েছে। বর্তমানে পুরান বাজারে মজিদ খানের ছেলে মোঃ বিল্লাল হোসেন খান সংখ্যালঘুদের সকল প্রকার সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন বলে সংখ্যালঘু নেতারা এ প্রতিবেদককে জানান। তবে চাঁদপুর শহরে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় ও হরিজনদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে তাদের কল্যানে বেশি কাজ করে গেছেন, সাবেক পৌর চেয়াম্যান ও গণ পরিষদ সদস্য মরহুম আব্দুল করিম পাটওয়ারী। তিনি চাঁদপুর পৌর সভার চেয়ারম্যান থাকা কালীন সময়ে চাঁদপুর পৌরসভা থেকে হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষের পূণর্বাসনের জন্য পুরাণ বাজার হরিজন কলোনির ব্যাপক উন্নয়ন ও তাদের জান মালের নিরাপত্তার জন্য সকল ধরনের সহযোগীতা করেছেন বলে হরিজন নেতারা জানান। হরিজনরা আরো জানান, মরহুম আব্দুল করিম পাটওয়ারী পুরান বাজার হরিজন মন্দিরে ধর্মীয় উপসনাগারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। চাঁদপুর শহরের বিপনী বাগে হরিজন সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ, নারী-পুরুষ, যুবক-যুবতি, কিশোর ও শিশুরা অত্যান্ত কষ্ট শিকার করে বসবাস করতে হতো। তাদের পূনর্বাসনের জন্য শহরের তালতলা বাস টার্মিনালের পাশে বিশাল একটি জায়গা নির্ধারন করে তাদেরকে সেখানে পূনর্বাসনের ব্যাবস্থা করেন। হরিজনদের বসবাসের স্থানের নাম করণ করেন স্বর্ণখোলা হরিজন কলোনি। চাঁদপুর শহরের বেশির ভাগ হরিজনরা এ স্থানে এখন সুন্দর ভাবে বিগত ৩০ বছরেরও অধিক সময় বসবাস করে যাচ্ছেন। এখানে অনেক খোলামেলা জীবন যাপন করতে পাচ্ছে হরিজনরা। এখানে একটি বিশাল পুকুরেরও ব্যবস্থা করা হয় তাদের গোসলের জন্য। যা অত্যান্ত স্বাস্থ্য সম্মত বলে হরিজন সম্প্রদায়ের নেতারা তাদের মত প্রকাশ করতে গিয়ে জানান। স্বাধীনতাত্তোর সময় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন ঠেকাতে ও প্রতিরোধ করতে কোন সামাজিক সংগঠন এগিয়ে আসেনি বলে হরিজনরা জানান। স্বাধীনতাত্তোর সময় সামাজিক সংগঠন ছিল। কিন্তু তারা এ ধরনের সংখ্যালঘু নির্যাতনে ভূমিকা রাখতে সাহস পায়নি। এ সময় এদেশের আইন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করার বিষয়টি তেমন একটা গুরুত্ব দিয়ে দেখতো না। যার ফলে নির্যাতিতরা তাদের প্রতি নির্যাতনের কথা প্রশাসনকে জানালেও তারা তেমন ভূমিকা রাখতো না। এজন্য তখন প্রশাসনের সামনে নির্যাতন হতো বলে সংখ্যালঘু নেতারা জানান। বর্তমানে সংখ্যালঘুরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া মাত্র পাচ্ছে এবং নির্যাতিতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার ফলে সংখ্যালঘু নির্যাতন অনেকাংশে কমে গেছে। এ সম্প্রদায়ের নেতারা জানান, প্রশাসন বর্তমানে নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে। যার কারণে সংখ্যালঘুরা এখন আর দেশ ত্যাগ করে যাচ্ছে না।
হিন্দু-বৌধ্য-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি ও চাঁদপুর জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এডভোকেট বিনয় ভূষণ মজুমদার জানান, স্বাধীনতাত্তোর সময় সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি ঘ্রাস করা, বিভিন্ন সময়ে নারী ধর্ষণ, বাড়ি- ঘর জ¦ালিয়ে দেওয়া ও হত্যা করা হয়েছিলো। ওই সময় অসংখ্যলঘু ব্যাক্তি ও পরিবার দেশ ত্যাগ করে চলে গেছে। ঐক্য পরিষদ প্রতিষ্ঠার পর এ ধরনের নির্যাতন অনেকাংশে কমে এসেছে। সংখ্যালঘুদের পরিত্যাক্ত সম্পত্তি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নাম ব্যবহার করে প্রভাবশালীরা তাদের দখলে নিয়ে গেছে। স্বাধীনতাত্তোর সময়ে রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থেকে অনেকে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করে। আবার অনেকে রাজনৈতিক ভাবে এর প্রতিরোধে ভূমিকা রেখেছে। ওই সময়ে সামাজিক সংগঠন ও সাধারণ মুসলিম জনগণ নির্যাতনের প্রতিরোধ করেছে বলেই সংখ্যালঘুরা এদেশে বসবাসের পরিবেশ এখানো আছে এবং এ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বেঁচে আছে। স্বাধীনতাত্তোর সময় সংখ্যালঘুদের নির্যাতনে সামাজিক সংগঠনগুলো সব সময় সহযোগীতা করেছে এবং বর্তমানেও করে যাচ্ছে। ওই সময়ে পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন সব সময়েই সংখ্যালঘুদের নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখেছিলো, বর্তমানেও রাখছে। প্রশাসন খবর পেলে তাৎক্ষনিক এগিয়ে এসে ভূমিকা নেয়। বর্তমানে কোন নির্যাতন হলে পুলিশ প্রশাসন সহযোগীতা করে যাচ্ছে। সব সরকারের সময় পুলিশ প্রশাসন থেকে সংখ্যালঘুরা সহযোগীতা পেয়েছে। এছাড়া পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমানে জেলা পরিষদ থেকে সংখ্যালঘুরা সহযোগীতা পাচ্ছে এবং তারা সংখ্যালঘুদের সহযোগীতায় এগিয়ে আসছে। সাধারণ মুসলিম জনগণ সংখ্যালঘুদের প্রতি তাদের সু-নজর আছে বলেই গ্রামগঞ্জে এরা হাজার-হাজার মুসলিমদের সাথে সংখ্যালঘুরা বসবাস করতে পাচ্ছে।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে হরিজন কলোনীর শ্রী শ্রী মহাবীর রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক বিধান চন্দ্র দাস (জনি) জানান, স্বাধীনতাত্তোর সময় রেলওয়ে হরিজন কলোনীর সংখ্যালঘুদের উপরে বিভিন্নভাবে নির্যাতন হয়েছিল। ঐ সময় তাদের প্রতি যে নির্যাতন হয়েছে সে সময় কোন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের ভূমিকা ছিল না। তবে তাদের এ কলোনী থেকে কোন বহু ব্যক্তি বা পরিবার এলাকা ত্যাগ করে অন্যত্র বা ভারতে চলে গেছে। চাঁদপুরের হরিজনরা সরকারি জায়গায় বসবাস করে যাচ্ছে। তাদের নিজস্ব জমি জমা নেই। যারা এদেশ ত্যাগ করেছে তাদের কোন সম্পত্তি ছিল না। চাঁদপুরে যেসব সংখ্যালঘুরা দেশ ত্যাগ করেছে তাদের জমি- বাড়ি- ঘর এদেশের প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে। এ সকল নির্যাতনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কোন ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। স্বাধীনতাত্তোর সময় সামাজিক সংগঠন কোন প্রতিরোধে এগিয়ে আসেনি বা সহায়তা করেনি। এ সময় সংখ্যালঘু নির্যাতনে ঐ সময় এদেশের প্রশাসনিকভাবে কোন আইনগত সহায়তা পাওয়া যায়নি। বর্তমানে যে কোন ঘটনায় প্রশাসনের সহায়তা তাৎক্ষনিকভাবে সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে।
চাঁদপুর হরিজন সমাজ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি আকাশ দাস হরিজন জানান, চাঁদপুরে স্বাধীনতাত্তোর সময় সংখ্যালঘুদের প্রতি অনেক নির্যাতন হয়েছে। যা ভাষার প্রকাশ করার মত নয়। চাঁদপুর হরিজন কলোনীতে একজন মহিলাকে নির্যাতন ও ধর্ষন করা হয়। সে লজ্জায় ঐ সময় দেশ ত্যাগ করে চলে যায়। স্বর্ণখোলা হরিজন কলোনী থেকে বহু লোক ও ৮/১০টি পরিবার ভারতে চলে যায়। তারা পৌরসভার বসবাস করত। তাদের কোন সম্পত্তি ছিল না। তারা পৌরসভার নিজস্ব সম্পত্তিতে বসবাস করত। অনেকে স্বাধীনতাত্তোর সময় নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে ভয়ে ভারতে চলে যায়। এ সময় রাজনৈতিক দলগুলো কোন ভূমিকা পালন করেনি। ঐ সময় এখনকার মত রাজনৈতিক দলগুলো তেমন সক্রিয় ছিল না। স্বাধীনতাত্তোর সময় হরিজন সম্প্রদায়ের প্রতি সামাজিক সংগঠনগুলো কোন সহযোগিতা করেনি। ঐ সময় এদেশের সামাজিক সংগঠনগুলো সংখ্যালঘুদের সহযোগিতা ও সহায়তায় এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। ঐ সময় এদেশের প্রশাসনিক সহযোগিতা পায়নি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রশাসন থেকে সহযোগিতা চাওয়া মাত্র পাওয়া যাচ্ছে। এদেশের দলিত সংখ্যালঘুরা নিরবে তাদের নির্যাতন সহ্য করে যেতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা হয় চাঁদপুর হরিজন সমাজ উন্নয় সংস্থ্যার সাধারণ সম্পাদক হিরা সরকার মুন্নার সাথে। তিনি বলেন, স্বাধীনতাত্তোর সময়ে সংখ্যালঘু নারী ও পুরুষের প্রতি শারিরীক ভাবে ব্যাপক নির্যাতন হয়েছে। এছাড়া নারীদের ধর্ষণ, নিপিড়ন ও গৃহহীন করা হয়েছে। হরিজন সম্প্রদায়ের যুবতী কিশোরী ও গৃহবধুদের ধর্ষণ নির্যাতন ও হত্যা ঘটিয়েছে নির্যাতিতরা। নির্যাতনের শিকার অনেক ব্যাক্তি ও পরিবার দেশ ত্যাগ করে ভারতে চলে গেছে। ১২ থেকে ১৫ টি পরিবার স্বর্ণ খোলা ও রেলওয়ে হরিজন কলোনি থেকে ভারতে চলে যায়। চাঁদপুরে হরিজন সম্প্রদায়ের কোন নিজস্ব সম্পত্তি ছিলো না। তারা সরকারি সম্পত্তিতে বসবাস করতো এবং সে ঘর বাড়ি ফেলেই চলে যেতো বাধ্য হয়। পুরাণ বাজার দাস পাড়া, ঘোষ পাড়া, পাল পাড়ার বহু সংখ্যালঘু পরিবার তাদের সম্পত্তি রেখে ভয়ে ভারত চলে গেছে। সে সব সম্পত্তি এখন মুসলিমদের দখলে রয়েছে। স্বাধীনতাত্তোর সময়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা তাদের সহযোগীতায় এগিয়ে আসলেও নির্যাতনের শিকার হওয়া লোকেরা তাদেরকে বিশ^াস না করতে পেরে দেশ ত্যাগ করে। ওই সময় রাজনৈতিক নেতারা দু’ চারটি পরিবারকে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করে আশ্রয় দিয়েছিলো। পুরাণ বাজারের বিড়ি ব্যাবসায়ী বিল্লাল খানের বাবা মজিদ খান সহ প্রভাবশালী নেতারা সংখ্যালঘু হরিজনদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা ও খাদ্য দিয়ে সাহায্য করেছেন। সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে বাসু আখন্দ, সোনা আখন্দ, লুতু পাটুয়ারী, জীবন কানাই চক্রবর্তীসহ উল্লেখযোগ্য ব্যাক্তির এগিয়ে এসেছে এবং সহযোগীতা করেছে। সাবেক পৌরসভার চেয়ারম্যান আব্দুল করিম পাটওয়ারী সংখ্যালঘুদের বিষয়ে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রেখেছিলেন। স্বাধীনতাত্তোর সময় সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের প্রতিবাদে কোন সংগঠন এগিয়ে আছেনি। ওই সময়ে প্রশাসন সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে তেমন ভূমিকা রাখেনি। তবে বর্তমানে প্রশাসনকে সংখ্যালঘুরা ডাকলে তাৎক্ষনিক সহযোগীতা পাওয়া যায়। তখন খুব কম সহযোগীতা পাওয়া যেতো, তাদেরকে ডাকলে তারা এগিয়ে আসতে চাইতো না।
পুরাণ বাজার হরিজন যুব ক্লাবের সভাপতি শ্যামল দাস হরিজন জানান, স্বাধীনতাত্তোর সময় সংখ্যালঘু হরিজনরা কোন নির্যাতনের শিকার হননি। রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা ও কর্মকর্তারা আমাদের সমস্যার কথা শুনতেন। কিন্তু এরকোন সমাধান তেমন করতে দেখা যায়নি, যদিও কোন সমাধান হয়েছে তা খুব কম। স্বাধীনতাত্তোর সময় কোন ব্যাক্তি বা পরিবার এলাকা ত্যাগ করে চলে যায়নি। তবে বর্তমানে আমরা সমস্যায় আছি, সে সমস্যা নিয়ে কষ্ট শিকার করে জীবন যাপন করছি ও বেচে আছি। সংখ্যালঘুদের পরিত্যাক্ত সম্পত্তি কাদের দখলে আছে তা আমার জানা নেই। স্বাধীনতাত্তোর সময় রাজনৈতিক দলগুলো ও সামাজিক সংগঠনের ভূমিকা ছিল ভাল । তারা সংখ্যালঘুদের খোজ খবর নেয় এবং তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসে ছিল। সামাজিক সংগঠন গুলো সংখ্যালঘুদের নির্যাতনে ভুমিকা রেখেছে। তারা নির্যাতনকারীদেরকে প্রতিরোধ করেছে। এদের সহায়তায় এগিয়ে আসে। সংখ্যালঘুদের নির্যাতনে প্রশাসনের কাছে গেলে তারা সহযোগিতায় এগিয়ে আসতো। বর্তমানে প্রশাসনকে যে কোন সমস্যা হলে থাকলে তারা তাৎক্ষনিক এগিয়ে আসে এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।