কবির হোসেন মিজি
আড়াইশ� শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালে বহিরাগতদের আনাগোনায় প্রতিদিনই চুরিসহ ঘটছে নানা ধরনের ঘটনা।
সরজমিনে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং বারান্দায় ঘুরে দেখা যায় হাসপাতালের নিচতলা থেকে ৪র্থ তলা পর্যন্ত কোথাও না কোথাও বহিরাগতদের আড্ডা লেগেই আছে। যার কারণে প্রতিদিনই হাসপাতালে রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে এসে চুরি, ছিনতাইসহ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। গতকাল ২৩ এপ্রিল বুধবার দুপুরের দিকে গাইনি ওয়ার্ডের সামনে ঢালীরঘাট এলাকার আবুল খায়ের (৬০) নামে এক বৃদ্ধ কোনো কারণ ছাড়াই ১৬ বছরের এক মেয়েকে কাছে ডেকে নাম কী, বাড়ি কোথায় এসব ধরনের নানা প্রশ্ন করতে থাকেন। বিষয়টি মেয়ের মায়ের দৃষ্টি গোচর হলে তিনি বৃদ্ধ লোকটিকে এসব জিজ্ঞেস করায় প্রতিবাদী কণ্ঠে প্যাঁচিয়ে ধরেন। তখন বৃদ্ধ আবুল খায়ের হাসপাতালের তৃতীয় তলায় তার রোগী আছে বলে মিথ্যে নানা অজুহাত দেখিয়ে সেখান থেকে কেটে পড়েন। ওই বৃদ্ধ লোকটিকে দেখে হাসপাতালের আয়ারা আরো বলেন, এর আগেও তিনি একদিন হাসপাতালে এসে আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগের এক আয়াকে জিজ্ঞেস করেন আপা আপনার বাড়ি কোথায়? বাড়ি-ঘর না থাকলে আমার সাথে আসেন বাড়ি ঘর দেখিয়ে দিবো। অপরদিকে একই দিন সকালে গাইনি ওয়ার্ডের এক রোগীনির ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ৮শ� টাকা চুরি করে নিয়ে পালাবার সময় অন্য রোগীর সাথে আসা লোকজন দেখে ফেলে। তখন সে চোর টাকা না নিয়েই সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ছাড়াও এর বেশ কিছুদিন পূর্বে ৪র্থ তলায় আরেক মহিলার ব্যাগ থেকে ৫ হাজার টাকা চুরি হয়ে যায় এবং টিকেট কাউন্টারের সামনে প্রতিদিনই টাকা-পয়সা ও মানুষের ব্যাগ থেকে মোবাইল চুরির ঘটনা কম বেশি ঘটছে। শুধু চুরি আর বহিরাগতদের আড্ডাই নয় এর বাইরেও রয়েছে আরো নানা অভিযোগ।
হাসপাতালের বেশ ক�জন নার্স ও আয়া বলেন, হাসপাতালের এরিয়াতে প্রতিদিন কোন প্রয়োজন এবং রোগী ছাড়াই বাইরে থেকে লোক এসে এখানে আড্ডা দেয়। তাদের মধ্যে রয়েছে বেশির ভাগ যুবক শ্রেণীর লোক। তারা এখানে এসে হাসপাতালে রোগীদের সাথে আসা মেয়েদের সঙ্গে ইভটিজিং করে। আবার কেউ কেউ নিজের স্ব ইচ্ছায়ই প্রেমালাপে লিপ্ত হয়। তাদের সাথে বাদ পড়ে না পতিতারাও। বাইরে থেকে বখাটে যুবকদের নিয়ে এসে হাসপাতালের ঢালের সিঁড়ি, বারান্দা, ছাদসহ এ ধরনের নির্জন স্থানে অসামাজিক কার্যকলাপ করে। অনেক সময় রাত ৮টা থেকে ১১টা, সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কখনো একা কখনো বা ৪/৫ জন যুবক দলবেঁধে হাসপাতালের বারান্দায় এসে আড্ডা মারে। তারা সুযোগ পেলেই চুরি-ছিনতাইয়ের কাজে লিপ্ত হয়। হাসপাতালে বহিরাগতদের আড্ডা এমন অভিযোগের কথা শুনে সচেতন মহলের অনেকেই মনে করেন চাঁদপুর আড়াইশ� শয্যা বিশিষ্ট সদর জেনারেল হাসপাতালের পরিবেশে সুন্দর রাখতে এবং বহিরাগতদের কারণে চুরির ঘটনাসহ যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য হাসপাতালে নিয়মিত আনসার সদস্য কিংবা দক্ষ পাহারার প্রয়োজন। চিকিৎসা সেবা নিতে শহর এবং গ্রাম থেকে আসা রোগীদের সুবিধার্থে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ত্বরিৎ ব্যবস্থা নিবেন এমনটাই প্রত্যাশা ভোক্তভোগীসহ সচেতন মহলের।