নিজস্ব প্রতিনিধি
চাঁদপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার হামিমা বেগম নিজেই এখন একজন মানসিক রোগী হয়ে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন! তিনি বিভিন্ন সদর হাসপাতালের বিভাগে কাজ করে রোগীদের সাথে অসদাচারণ করে এখন জরুরি বিভাগে দিগবিদিগ মাথায় দায়িত্ব পালন করছেন।
গতকাল মঙ্গলবার চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে এ প্রতিবেদক কিছু তথ্যের জন্যে জরুরি বিভাগে গিয়ে ডা. হামিমা বেগম এবং ডা. মাহবুব আলমের অন্তরঙ্গ আলাপচারিতার ছবি তুলতে গেলে তিনি দারুণভাবে েেপ যান, এবং ফটোগ্রাফার কাম প্রতিবেদককে গালাগালপূর্বক পুরো হাসপাতালের মানুষজন ও রোগীদের জড়ো করে ফেলেন। এক পর্যায়ে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আরএমও সিরাজুল ইসলাম, ডা. মাহমুদুরন নবী মাসুমসহ অন্যান্য ডাক্তাররাও এসে বিষয়টি প্রত্য করে। ডাক্তার হামিমা তখনও উদ্ধত আচরণ ও গালমন্দ করতে থাকে সাংবাদিকদের। এ সময় ডাক্তার হামিমার দালাল দলের লোকজন পুরাণবাজারের ল্যাংড়া মহসিন পাটওয়ারী এসে কর্তব্যরত সাংবাদিককে ধাক্কিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়।
বিষয়টি জানতে পেরে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি এম এ লতিফ ও সাধারণ সম্পাদক কে এম মাসুদ, যুগ্ম সম্পাদক শেখ আল মামুন সহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ হাসপাতালে ছুটে গেলে বিএমএ চাঁদপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহমুদুুন নবী মাসুম বলেন, আসলে ডাক্তার হামিমা মানসিক যন্ত্রণায় আছেন। কিছুদিন আগে তার মা মারা গেছেন, তাছাড়া তিনি একটু অসুস্থ। তিনি বিষয়টি দু’একদিনের মধ্যে সমাধান করবেন বলে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেন।
একজন মানসিক রোগী হয়ে কীভাবে তিনি হাসপাতালে রোগীদের সেবা দেবেন, তার তো চিকিৎসা গ্রহণ করা দরকার। বিষয়টি সাধারণ রোগীদের প্রশ্ন থেকেই যায়। এদিকে ডাক্তার হামিমা সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি আসলে কোনো মানসিক রোগী নন, তিনি অভিনয় করছেন। কারণ পরকীয়া প্রেম নিয়ে তার সংসারে অশান্তি চলছে। সেই কারণে তিনি মানসিক রোগীর ভান করে ফায়দা লুটছেন। এদিকে জানা যায়, চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ডাক্তার হামিমা বেগমের একটি বাহিনী রয়েছে। এই বাহিনীর সহায়তায় তিনি সরকারি হাসপাতালের চেম্বারে বসেই রোগীদের কাছ থেকে জোর করে ফি আদায় করে নেন। অন্যদিকে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীা নিরীার জন্যে রোগীদের পাঠিয়ে পান মাসে বিরাট অংকের কমিশন। এই দালাল চক্রের হোতা পুরাণবাজারের ল্যাংড়া মহসিন পাটওয়ারী। কোনো রোগী ফি দিতে ব্যর্থ হলে, বা হাসপাতালে ডাক্তার হামিমার মতের বিরুদ্ধে কিছু হলেই মহসিন পাটওয়ারী ও তার লোকজন ছুটে এসে তাদেরকে শায়েস্তা করতে থাকে।
আরও জানা গেছে, ডাক্তার হামিমা ইতিপূর্বে বেশ ক’বার ওটিতে রোগীদের অপারেশন করতে গিয়ে ঘুমের ঔষধের নেশার ঘোরে ভুল অপারেশন করে বেশ ক’জন রোগীকে মেরে ফেলেন। ফলে হাসপাতাল কর্তৃপ তাকে কয়েকটি মিটিংয়ে এ ব্যাপারে সাবধান করে দেন। কিন্তু তিনি তার স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যেতে থাকলে হাসপাতাল কর্তৃপ তাকে ওটি থেকে ট্রান্সফার করে জরুরি বিভাগে। এ বিভাগে এসেও তিনি স্বেচ্ছাচারিভাবে কাজ কর্ম শুরু করেন। আর তাকে এ ব্যাপারে সহায়তা করেন অপর ডাক্তার মাহবুব আলম। জানা যায়, ট্রাকরোডের মোড়ে ডাক্তার হামিমা তার বাসায়ই বিনা লাইসেন্সে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বানিয়ে সেখানে রোগী দেখেন এবং প্রয়োজনীয় পরীা নিরীা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে চাঁদপুর স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো মাথাব্যথা বা তদারকি নেই। জানা যায়, ডাক্তার হামিমা বেশিরভাগ সময়ই ঘুমের ঔষধ সেবন করেন এবং রোগীদের সাথে উগ্র আচরণ করেন। তার এ স্বেচ্ছাচারিতা কখন থামবে এ ব্যাপারে রোগীদের প্রশ্ন এ প্রতিবেদকের কাছে।
শিরোনাম:
সোমবার , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৮ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।