চাঁদপুর: বর্তমান সরকারের এই চার বছরে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বাকি সময়ে আরো উন্নয়ন হবে। বেশ ক’টি উন্নয়ন কাজের টেন্ডার হওয়ার অপেক্ষায় আছে। আরো কিছু দাবি পূরণে কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে স্থানীয় সাংসদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। এগুলোও পূরণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে কলেজে ১০৩ জন শিক্ষক নিয়োগে এবং একটি ডরমেটরীর জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ডিও লেটার দেয়াসহ তাঁর সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় তা’ বাস্তবায়ন হলে উন্নয়নে একটি মাইল ফলক হয়ে থাকবে। এ দু’টি বাস্তবায়ন হলে এই কলেজের দীর্ঘ দিনের শিক্ষক সংকট এবং শিক্ষকদের আবাসন সমস্যা দূর হবে। এই পাঁচ বছরে জেলার সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠটির আমূল পরিবর্তন সাংসদ ডাঃ দীপু মনির আন্তরিকতা ও প্রচেষ্টারই ফসল হিসেবে দেখছে জেলাবাসী।
চাঁদপুর জেলা তো বটেই আশপাশের কয়েকটি জেলার মধ্যে খ্যাতিমান সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হচ্ছে চাঁদপুর সরকারি কলেজ। বিশেষ করে শরীয়তপুরের অনেক ছাত্র-ছাত্রী এই কলেজে পড়াশোনা করছে। কলেজটিতে বর্তমানে ১৭টি বিষয়ে অনার্স, ১৩টি বিষয়ে মাস্টার্স ও ৭টি বিষয়ে মাস্টার্স প্রিলিমিনারী চালু আছে। বর্তমানে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা হবে প্রায় ১০ হাজার। কিন্তু শিক্ষক ও শ্রেণী সংকট দীর্ঘ দিনের। বর্তমান সরকারের সময় শ্রেণী সংকট দূরীকরণে এখন বেশ কিছু নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে এবং পুরানো ভবন ঊর্ধ্বমুখী সমপ্রসারণ হয়েছে। আর শিক্ষক সংকট দূর করতে ১০৩ জন শিক্ষক নিয়োগের জন্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি চলতি মাসে ডিও লেটার দিয়েছেন। এটি এখন ডিজি অফিস থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আছে। সেখান থেকে সংস্থাপন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় হয়ে পাস হয়ে আসবে। কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মিহির লাল সাহা আশা করছেন, সহসা এটি হয়ে যাবে। ১০৩ জন শিক্ষকের বিভাজন হচ্ছে- অধ্যাপক ১৩ জন, সহযোগী অধ্যাপক ২৫ জন, সহকারী অধ্যাপক ৩৯ জন ও প্রভাষক ২৬ জন। বিষয় ভিত্তিক এই সংখ্যা হচ্ছে- বাংলা ৫ জন, ইংরেজি ৭ জন, অর্থনীতি ৫ জন, ইতিহাস ৮ জন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ৫ জন, দর্শন ৩ জন, ইসলামের ইতিহাস ৩ জন, ইসলাম শিক্ষা ৪ জন, সমাজকর্ম ৮ জন, ভূগোল ৮ জন, গণিত ৮ জন, পদার্থ বিজ্ঞান ৩ জন, রসায়ন ৮ জন, উদ্ভিদ বিদ্যা ৮ জন, প্রাণিবিদ্যা ৮ জন, হিসাব বিজ্ঞান ৫ জন ও ব্যবস্থাপনা ৭ জন। এসব শিক্ষক নিয়োগ হয়ে গেলে এই কলেজে আর শিক্ষক সংকট থাকবে না।
এছাড়া কলেজের একটি ডরমেটরীর জন্যও ডাঃ দীপু মনি ডিও লেটার দিয়েছেন। সেটি করা হবে কলেজের সামনে করিম পাটওয়ারী সড়ক লাগোয়া উত্তর পাশে, যেখানে এখন কলেজের বাস রাখা হয়। কলেজের পৰ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আরো দু’টি দাবি জানানো হয়। সেগুলো হচ্ছে- ৩টি বাস ও একটি অডিটোরিয়াম। চাঁদপুর থেকে মতলব রুটে একটি, হাজীগঞ্জ রুটে একটি ও ফরিদগঞ্জ রুটে একটি বাস চাওয়া হয়েছে। যেগুলো দিয়ে এই তিনটি অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীরা চাঁদপুর কলেজে আসা-যাওয়া করবে। কলেজের বাস না থাকায় এসব অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজে আসতে অনেক টাকা ব্যয় হয়। যা মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের দ্বারা সম্ভব নয়। এই দাবিটি গত ১৯ এপ্রিল শুক্রবার চাঁদপুর সরকারি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ডাঃ দীপু মনির উদ্দেশ্যে কলেজের অধ্যক্ষ তুলে ধরলে উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রী ও সুধী মহল বিপুল করতালি দিয়ে তা স্বাগত জানায়। একই সাথে দাবি জানানো হয় একটি অডিটোরিয়ামের। যেটিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হবে।
কলেজের অধ্যক্ষ আরো জানান, এই কলেজের ছাত্রীদের জন্য এক শ’ শয্যার একটি ছাত্রী নিবাস ও একটি প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ এখন টেন্ডারের অপেক্ষায় আছে। বর্তমান শেখ হাসিনা ছাত্রী নিবাসের পেছনে ৫ তলা ভিতের উপর ৪ তলা বিশিষ্ট এক শ’ শয্যার ছাত্রী নিবাস নির্মাণ হবে। এর জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। এর টেন্ডার হয়ে গেলেই নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যাবে। এটি হয়ে গেলে ছাত্রীদের আবাসন সমস্যা দূর হয়ে যাবে। একইভাবে প্রশাসনিক ভবন নির্মাণও টেন্ডারের অপেক্ষায় আছে। এটির জন্য ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া আছে। আর বর্তমানে নির্মাণ কাজ চলছে একাডেমিক কাম এক্সমিনেশন হলের। এমনিভাবে বর্তমান সরকারের সময় স্থানীয় সাংসদ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বদান্যতায় চাঁদপুর জেলার এই সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠটির আমূল পরিবর্তন ঘটছে।
