শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত চাঁদপুর সেন্ট্রাল হসপিটাল (প্রাঃ) লিঃ এ আবারও ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় ৩ সন্তানের জননী এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যার পর পিত্ত থলি পাথর অপারেশনের জন্য নিয়ে আসা ফাতেমা বেগম (৩৫) এর অস্ত্র পাচারকালে এ মৃত্যুর ঘটনা হয়েছে বলে দাবী করেছে নিহতের পরিবার। নিহতের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে ফয়জুন্নেছা বেবী জানায়, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় আমার মাকে ফুফু ও অপর আত্মীয় হাজী সিরাজুল ইসলামসহ উল্লেখিত হাসপাতালে এনে ভর্তি করি। কর্তব্যরত ডাক্তারগণ দেখার পর সিদ্ধামত্ম নেয় অপারেশন করতে হবে। এ সংবাদ আমাদের জানানোর পর আমাদের পূর্বে চিকিৎসা নেওয়া বিশ্বস্থ ডাক্তার সালেহ আহমদ, আত্মীয় ডাঃ মাহমুদুন্নবী মাছুম ও ডাক্তার মোবারক হোসেন চৌধুরীকে দিয়ে অপারেশন করাবো। এ কথা বলার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের ডাক্তার দিয়ে নিজ দায়িত্বে অপারেশন করবে বলে জানিয়ে দেয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরো জানিয়ে দেয় আপনাদের পছন্দের ওইসকল ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করালে রোগীর দূর্ঘটনা ঘটলে তার দায় দায়িত্ব আপনাদের বহন করতে হবে।
তারা সম্মতি দিলে সন্ধ্যার পর সোয়া ৬টায় ফাতেমাকে অপারেশনের জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ডাঃ মনিরুল ইসলাম, সহযোগী: এনেসথেসিয়া ডাঃ হারুনুর রশিদ ও সহযোগীরাসহ অপারেশনের থিয়েটারে নিয়ে যায়। অপারেশন শেষ হওয়ার ২৫মিনিট পূর্বে রাত ৮টায় হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ ডাঃ শহীদ উল্যাহ ওটি রুমে প্রবেশ করেন। বেবী আরো জানায়, থিয়েটার থেকে আমার মাকে বের করার পর ডাক্তাররা জানায়, অপারেশন সাকসেসপুল, রোগীকে ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে, আপনারা কোন ডিস্টাব করবেন না। পরে উপস্থিত আত্মীয় স্বজন হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য লোকদের আচরণ বুঝতে পেরে রোগীর কাছে গিয়ে দেখতে পাই সে মৃত। এরই মধ্যে ডাক্তার, নার্স ও হাসপাতালের অন্যান্য দায়িত্বরতরা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।
তাৎক্ষনিক তাদের আত্মচিৎকারে শহরের লোকজন রাসত্মা থেকে এসে হাসপাতালে ভীড় জমায়। এ খবর চাঁদপুর মডেল থানায় পৌঁছলে, মডেল থানার ওসি মাহাবুব মোরশেদ, সেকেন্ড অফিসার মনির আহমেদসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য হাসপাতালে এসে অবস্থান নেয়। নাশকতা এড়াতে পুলিশ হাসপাতালের চারদিকে অবস্থান নেয়।
মৃত্যুর ঘটনা সমঝোতা করার জন্য মডেল থানার ওসি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে ডাঃ মুকিত সফিউল আলম এবং অন্যান্যের মধ্যে ডাঃ একিউ রহুল আমিন, বিএম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মাহমুদুন্নবী মাছুম, ডাঃ মোবারক হোসেন চৌধুরী, সুভাস চন্দ্র রায় ও নিহতের আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে বসেন।
ডাঃ মুকিত সফিউল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন , যে চলে গেছে তাকে নিয়ে বাড়া বাড়ি করার প্রয়োজন নেই।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত সোয়া ১১টায় সমঝোতার জন্য ২দফা বৈঠক ব্যর্থ হয়ে ৩দফা চলছিলো।
নিহত ফাতেমার গ্রামের বাড়ী হাজীগঞ্জ উপজেলার অলিপুর গ্রামের বেপারী বাড়ী। তার স্বামীর নাম আনোয়ার হোসেন বেপারী। তিনি মতলব উপজেলা ভূমি অফিসের তহশিলদারের দায়িত্বে কর্মরত আছেন। নিহতের ৩টি কন্যা সমত্মান রয়েছে।