চাঁদপুর-৩ নির্বাচনী এলাকার সবক’টি ইউনিয়ন ডিজিটালাইজেশনের উদ্বোধন গত ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় আগে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন হলো এটি বড় কথা নয়, সবচে’ বড় কথা হলো এটি ব্যবহার করে জনগণ উপকৃত হবে সেটিই বড় কথা। বঙ্গবন্ধু কথা দিলে কথা রাখেন, তদ্রূপ আমরাও তাঁর অনুসারী হিসেবে মানুষের কথা রাখি। আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন, সেজন্যে আমি তাদের কাছে সবসময় কৃতজ্ঞতা বোধ করি এবং তাদের জন্যে কাজ করা আমার পরম সৌভাগ্য। আমার নির্বাচনী ইশতেহারে এবং সরকারের যে ইশতেহার ছিলো সেগুলো আমার এলাকায় বাস্তবায়নে আমি বদ্ধপরিকর। আমার এলাকার সকল জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, প্রশাসন, গণমাধ্যমকর্মীসহ সকলের সহযোগিতায় আমাদের কাজগুলো করা সহজ হচ্ছে। আমরা সরকারে থাকি বা জনপ্রতিনিধি থাকি, আমাদের সকলের কাজ হলো জনগণের সেবা করা। আমরা আশা করি যে অগ্রযাত্রা সেগুলো জাতির পিতার স্বপ্ন ছিলো।
তিনি আরো বলেন, আজকে ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি বিশেষ একটি দিন, কারণ এইদিনে জাতির পিতা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর সরকার গঠন করেছিলেন। আজকের এই ডিজিটালাইজেশনের কারণে মানুষের জীবনমান, সময়, অর্থ সবকিছুর সাশ্রয় হবে। আজকে চাঁদপুর ও হাইমচরের সব ইউনিয়নের ডিজিটালাইজেশন হলো, এখন এ দুটি উপজেলা পরিষদের ডিজিটালাইজেশন হলে আমার নির্বাচনী এলাকার পুরোটাই ডিজিটালাইজেশন হবে।
তিনি বলেন, আজকে কিছু ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলছে। দেশে অসংখ্য ভাস্কর্য রয়েছে, সেগুলো নিয়ে এতোদিন কথা বলেননি। যখন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য করা হবে তখন সেটি নিয়ে কথা বলেছেন। ইসলামী চিন্তাবিদরা বলেছেন, যে ভাস্কর্য সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য, স্মৃতি সংরক্ষণের জন্যে সেটি নির্মাণ ইসলাম বিরোধী নয়।
অরেঞ্জ বিডির চাঁদপুর শাখার কো-অর্ডিনেটর উজ্জ্বল হোসাইনের পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অরেঞ্জ বিডি লিমিটেডের সিইও আশরাফুল কবির জুয়েল। মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন পরিচালক হাফেজ আহমেদ ও সামীম হোসেন। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী হযরত আলী বেপারী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, চাঁদপুর-৩ নির্বাচনী এলাকার সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সচিব ও ইউডিসি উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের সূত্র ধরে ইউনিয়ন পরিষদ হতে প্রদত্ত নাগরিক সেবাসমূহ জনগণের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দিতে অরেঞ্জবিডির পক্ষে তৈরি করা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ সেবা (ইউপিসেবা) সফটওয়্যার, যা বাংলাদেশে প্রথম। ইউনিয়ন পরিষদের প্রদেয় নাগরিক সেবাসমূহকে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত হতে ঘরে বসেই প্রাপ্তি সহজতর করাই এটির মূল উদ্দেশ্য। এই উদ্যোগ এবং প্রয়াস বাংলাদেশের তৃণমূলকে ডিজিটাল করতে একধাপ এগিয়ে থাকবে। ইউনিয়ন পরিষদ সেবা (ইউপিসেবা) সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিশ্বের যেকোনো স্থান হতে অতি অল্প সময়ে নির্ভুলভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মসনদ দ্বারা তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবার সনদ প্রাপ্তির জন্য অনলাইন থেকে আবেদন করতে পারবেন। পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান মহোদয় বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উক্ত আবেদনটি তার জন্য নির্ধারিত অনলাইন ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে যাচাই করে চেয়ারম্যান মহোদয়ের ডিজিটাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে সনদ ইস্যু করতে পারবেন। স্থানীয় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকেও সনদের জন্য আবেদনের সুযোগ রয়েছে উক্ত সফটওয়্যারে। আবেদনকারী সনদ ইস্যুর সাথে সাথেই এসএমএস এলার্ট পাবেন এবং ইস্যুকৃত সনদ নাগরিক তার নিজস্ব প্রোফাইল থেকে যেকোনো সময় ডাউনলোড এবং প্রিন্ট করে ব্যবহার করতে পারবেন। নাগরিকের নিজস্ব প্রোফাইল থাকায় সনদ হারানোর সম্ভাবনা শতভাগ ঝুঁকিমুক্ত। উক্ত ডিজিটাল সনদ সুরক্ষিত কিউআর কোড-সম্বলিত, যার মাধ্যমে সনদ ভেরিফিকেশন করা যায়। সুতরাং জাল সনদ তৈরি শতভাগ ঝুঁকিমুক্ত। ইউনিয়ন পরিষদ সেবা (ইউপিসেবা) সফটওয়্যার ব্যবহার করে পরিবর্তন হবে ‘দূরত্বের’ সংজ্ঞা, নিশ্চিত হবে স্বচ্ছতা এবং পৌঁছে যাবে সেবা জনগণের দোরগোড়ায়।