ফাহিম শাহরিন কৌশিক খান ॥
চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২নং চান্দ্রা ইউনিয়নে চান্দ্রায় অতি দরিদ্রদের মাঝে কর্মসংস্থান কর্মসুচী প্রকল্পের দুর্ণীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউনিয়নে রাস্তা সংস্কারের নামে ১২টি প্রকল্পে কাজ শুরু করার প্রথম থেকেই ভুয়া শ্রমিকদের নামে তালিকা দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে।
গত বুধবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চান্দ্রা ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে মোট ১২টি রাস্তার কাজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে। প্রতিটি প্রকল্পে ২৫ জন করে শ্রমিক মাধ্যমে কাজ করার কথা থাকলেও চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় দায়িত্বে থাকা মেম্বাররা টেক অফিসারের সহযোগীতায় অতি দরিদ্রদের মাঝে কর্মসংস্থান কর্মসুচী প্রকল্পের কাজে ফাকি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে। জানা যায়, ৯টি ওয়ার্ডের ১২টি রাস্তার কাজ করার জন্য মোট ২৪লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি প্রকল্পের কাজে ২৫জন করে মোট ৩১২জন শ্রমিক কথা থাকলেও দায়িত্বে থাকা দুর্ণীতিবাজ চেয়ারম্যান ও মেম্বার টাকা আত্মসাৎ করার জন্য ভূয়া শ্রমিকের নামের তালিকা জমা দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। চান্দ্রা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দুলাল মেম্বারের পরিচালনায় বাখরপুরের সুলতানের বাড়ি থেকে আবিদ বেপারীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার কাজ, ১নং ওয়ার্ডের সুফিয়া মেম্বারের পরিচালনায় মহাসড়ক থেকে পাটওয়ারী বাড়ি পর্যন্ত, ২নং ওয়ার্ডের ইসমাইল ঢালীর পরিচালনায় মধ্যবাখরপুর থেকে বাংলা বাজার, ৩নং ওয়ার্ডের সিরাজুল মেম্বারের পরিচালনায় সোবহান সরদারের বাড়ি থেকে মজিদ খানের বাড়ি, ৪নং ওয়ার্ডের ফাহিমা মেম্বারের পরিচালনায় সিরাজুল পাটওয়ারীর বাড়ি থেকে খোকন ছৈয়ালের বাড়ি, ৫নং ওয়ার্ডের মোফাজ্জল মেম্বারের পরিচালনায় হরিপুর রাস্তা থেকে আহাম্মদ শাহ্ ফকিরের বাড়ি, ৬নং ওয়ার্ডের সফিকুর রহমান মেম্বারের পরিচালনায় মুসলিম পাটওয়ারীর বাড়ি থেকে সিদ্দিক আলী গাজী বাড়ি পর্যন্ত ও ৭নং ওয়ার্ডের খলিল মেম্বারের পরিচালনায় শাহাদাত খানের বাড়ি থেকে রাজার খাল, ৭নং ওয়ার্ডের হারিছা মেম্বারের পরিচালনায় মহাসড়ক থেকে জলিল মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার কাজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়। কাজের শুরু থেকেই চেয়ারম্যান ইউসুফ কেরানী অতি দরিদ্রদের মাঝে কর্মসংস্থান কর্মসুচী প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।এই প্রকল্পের ৪০ দিন কাজ করা হবে। কাজের মধ্যকার ২০ দিন পর উপজেলা থেকে চেকের মাধ্যমে ইউনিয়নের মাদার একাউন্টে জমা হবে। সেখান থেকে শ্রমিকদের একাউন্টে টাকা জমা হবে। দায়িত্বে থাকা মেম্বারা ভুয়া শ্রমিকদের নামের একাউন্টের মাধ্যমে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ১২ নং চান্দ্রা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পুর্বে এই ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা মেম্বারদের সমন্বয়ে আত্মসাৎ করেছে। তেমনি এবারো অতি দরিদ্রদের মাঝে কর্মসংস্থান কর্মসুচী প্রকল্পের ভূয়া শ্রমিকের নামের তালিকা দিয়ে টাকা আত্মসাতাৎ করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কাজের শুরুতে মঙ্গলবার ও বুধবারে প্রতিটি রাস্তায় সংস্কারের জন্য ২৫জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও সেখানে মাত্র ৮থেকে ১২ জন শ্রমিক দিয়ে নামমাত্র কাজ করাচ্ছেন। বাকি শ্রমিকদের ভুয়া নাম বসিয়ে জন প্রতি ২’শ টাকা করে গত দুই দিনে কয়েক হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে। প্রকল্প পরিচালনার জন্য টেক অফিসার উপ-সহকারী সফিউল্লাকে চান্দ্রায় নিয়োজিত করা হলেও তিনি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাজ থেকে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময় প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এব্যাপারে টেক অফিসার সফিউল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রকল্পের রাস্তা সংস্কারের কাজে কিছু কিছু জায়গায় শ্রমিক কম-বেশী নেওয়া হয়েছে।