এম.এইচ.মাহিন:মা-বাবাকে হারানোর পর বড় ভাইয়ের অধীনে জীবন। ভাইটা আমার বেশ সহজ-সরল একথায় ভালো
মনের মানুষ । ভাবী আমার ভাইকে বেশীদিন ভালো থাকতে দেয়নি।ভাবীর নানা পরামর্শে জীবন আমার
কোনঠাসা হয়ে পড়ে। দু’কলম পড়ালেখা শিখেছিলাম তাও বন্ধ হয়ে গেল। এবার কর্ম যোগান দেই
পরের দোকানে। ভালো-মন্দ বুঝে উঠার পর স্বীয় এলাকার বাজারে একটা টঙ দোকান দেই। বেকারী
হতে ভাঙ্গা-চুড়া বিস্কুট এনে বিক্রি করি।দু’পয়সা ভালোই আয় হয়।
এরই মাঝে বড় ভাই চলে যায় কুয়েতের প্রবাস জীবনে। আমার কাধেঁ পড়ে সংসারভার। ভালোই চলছে
সংসার। আল্লাহর অশেষ রহমতে ভাবীরও আচরন পরিবর্তন। বেশ যত্নশীল আমার প্রতি। আমার
জন্য সবকিছু আলাদা করে রেখে দেয়। সন্তানের জন্য মা যা করে অনেকটা তারই মত ভাবী করে ।
কিন্তু অতীত মনে হলে ভাবীর প্রতি আমার সন্দেহটা আরোও ভারী হয়ে উঠে। আমার প্রতি ভাবীর
দুর্বলতা যাচাই করার জন্য আমি একটি চিঠি লিখি ভাইয়ের অভিনয় করে । চিঠির ভাষাসমূহ —–
——-
প্রিয়তমা,
আমি তোমার জান সফিক শেখ । আমি আশাবাদী, আমার ছেলে-মেয়ে নিয়ে বেশ ভালো আছো।
দীর্ঘদিন হয় আমার মনটা উদাসীন তোমার বদনখানি একনজর দেখার জন্য। এবার তোমার কথা
মাথায় রেখে আমার কাজের পারমিট রিনিউ করলাম না । বুঝতে বাকী নেই আমি যে , বাড়ীতে আসছি
আগামী ৪ঠা জানুয়ারী ভোর চারটায় । তবে বাবুর মা একটা কথা , আমাকে নেওয়ার জন্য শুধু
তোমার ভাইরা আসবে আর কারও অধিকার দিলাম না । তবে বিষয়টা যেন আমার ছোট ভাই না
জানে।
ইতি ,
তোমার সফিক শেখ
কুয়েত
ডাকপিয়নকে আমিই ডেকে পাঠাই আমাদের বাড়িতে। বিনিময়ে পিয়নকে দেই ২০ টাকা যা অনেকটা পিয়নের
কাছে সোনায়-সোহাগা। চিঠি হাতে পেয়ে যে কথা সে কাজ। ভাবীর আমার অন্তরালে তার ভাইদের
সাথে কানে-মুখে আলাপন করে।আমার সামনে চুপসি মারে। ভাবীতো জানে না যে নাটকটা আমার গড়া।
ভাবী ৩রা জানুয়ারী তার ভাইদেরকে পাঠিয়ে দেয় ঢাকার উদ্দেশ্য। সময় মতই পৌঁছে যায় বিমানবন্দরে।
শীতের রাত একদিন চলে গেল শেখ সাহেব আসে না । নানাজনে নানা উক্তি , মনে হয় বিমানের কিছু
হয়েছে । আসবে , এ আশায় দ্বিতীয় দিনও গেল । ভাই কি আর আসে , কিন্তু দু:খ আমার একটাই
আজোও ভাবী বলল না তোর ভাই আসবে।