প্রতিনিধি
মতলব দক্ষিণে মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষককে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছে স্থানীয় ৩ মাতব্বর। আর জরিমানার ৬ হাজার টাকা ভাগাভাগি করে নিয়েছে ঐ মাতব্বররা। এ ঘটনায় এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে।
গতকাল ১০ ডিসেম্বর সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, কালিকাপুর আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের প্রবাসী আঃ হান্নান সরকারের ছেলে মাসুদ রানা (২০) জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষিতা সাংবাদিকদের জানান, আমার অসুস্থ বাবাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যায় মা। আমি আমার ফুফাতো বোন (৮)কে নিয়ে রাতে ঘরে ঘুমিয়ে থাকি। গত ২১ নভেম্বর রাত আনুমানিক ৮টায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে মাসুদ রানাসহ ৩ যুবক আমার মুখ চেপে ধরে বাড়ির উত্তর পাশে জমিতে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। আমি ডাক-চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন দৌড়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে এবং মাসুদ রানাকে হাতেনাতে আটক করে। অপর ৩জন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে মাসুদ রানার উপস্থিতিতেই রাতে স্থানীয় মাতব্বর কামাল, মফিজ, খলিলসহ একটি চক্র ৬ হাজার টাকা জরিমানা করে মাসুদকে ছেড়ে দেয়। তখন আমি এ বিচারের রায় মেনে নিতে রাজি না হলে আমাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে ঐ মাতব্বররা। এ ঘটনা আমার বাবা ও মাকে জানাতে নিষেধ করে। এদিকে ছেলের কাছ থেকে জরিমানা হিসেবে আদায়কৃত ৬ হাজার টাকার কথা শুনলেও ঐ টাকা পাইনি। উক্ত টাকা মাতব্বররা ভাগাভাগি করে নিয়ে যায়। আমার মা ঢাকা থেকে বাড়িতে আসলে আমি এ ঘটনা অবহিত করি। আমার মাকেও তারা হুমকি প্রদর্শন করে বলে যে, এ ঘটনা নিয়ে যেন বাড়াবাড়ি করা না হয়। এ ঘটনার পর থেকে ধর্ষক মাসুদ রানা ও তার সহযোগীরা পলাতক রয়েছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতাসহ বেশ ক�জন গণ্যমান্য ব্যক্তির সাথে আলাপ করলে তারা জানান, ধর্ষিতার পরিবার গরীব, অসহায় ও নিরীহ। এছাড়া মেয়ের বাবা কঠিন রোগে আক্রান্ত। এলাকাবাসীর আর্থিক সহায়তায় তাদের সংসার চলে। আর এ সরলতার সুযোগে মাসুদ রানা অসহায় মেয়েটির উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। অপর দিকে যারা এ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে গিয়ে জরিমানার টাকা আত্মসাৎ করেছে তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় এ ধরনের বহু অভিযোগ রয়েছে। ধর্ষণকারীসহ ঘটনাটি যারা ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেবে বলে তারা মনে করেন।
এ ঘটনায় মেয়ের মা রহিমা বাদী হয়ে গত ৭ ডিসেম্বর মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।