মিজান লিটন =
আজ শনিবার থেকে ৫ম বারের অবরোধ কর্মসূচি শুরু হলো। চলবে অবিরাম ৪ দিন। পুরো সপ্তাহেই থাকবে অবরুদ্ধ। আগের সপ্তাহের টানা অবরোধে বিপর্যস্ত পণ্য পরিবহন সেক্টর গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে সচল হয়ে উঠে। আর প্রয়োজনীয় কাজ সারতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে মানুষজন। এ যেনো ঈদের ছুটির আমেজ।
শনিবার থেকে ফের অবরোধ। রাস্তায় গাড়ি চলবে না। তাই সবাই যেনো একদিনের স্বস্তি পেয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে। সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরের সড়কগুলোতে মানুষের প্রচণ্ড ভীড় যেমন লক্ষ্য করা গেছে, তেমনি যানজটও ছিল তীব্র। দুর্ভোগের মধ্যেও সাধারণ মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় কাজ একদিনে সেরে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। সরজমিনে দেখা যায়, চাঁদপুর শহর এলাকার রাস্তা ঘাট, মার্কেট, বিপণী বিতান, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন, লঞ্চঘাট অভিমুখে যানবাহন ও মানুষের জট। বিপর্যস্ত ব্যবসা-বাণিজ্য একদিনের জন্য ফিরে পায় প্রাণচাঞ্চল্য। জেলা শহরের প্রধান ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র পুরাণবাজার ট্রাক সড়ক এলাকায় পণ্য পরিবহনের গাড়ির প্রতিযোগিতা দেখা যায়। ডাকাতিয়া নদীর পাড় টিন বাজার হতে মোম ফ্যাক্টরী, রিফিউজি কলোনী এলাকা পর্যন্ত পণ্য পরিবহনের জট পরিলক্ষিত হয়। শুক্রবার সকাল থেকে গাড়ির দীর্ঘ লাইন।
স্থানীয় পরিবহন ব্যবসায়ী মাঈনুদ্দিন বেপারী (৪৮) জানান, অবরোধের কারণে কোনো গাড়ি চলাচল করতে না পারায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুক্রবার দিনরাত ব্যবসায়ীদের পণ্য লোডিং আনলোডিংয়ের কাজ করতে হচ্ছে। চাঁদপুরের সাথে উপজেলা সমূহ ছাড়াও ৮ থেকে ১০টি জেলার পণ্য পরিবহনের স্থল বন্দর হিসেবে পুরাণবাজার থেকে মালামাল আমদানী-সরবরাহ এবং ক্রয়-বিক্রয় হয়। ছুটির দিনেও অফিস করেছেন চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ মেনে চাঁদপুরের শাখা ব্যাংকগুলো ছুটির দিনে খোলা ছিল। ব্যবসায়ীরা লেনদেন করতে পেরে স্বস্তি বোধ করে।
গত ২৫ অক্টোবরের পর থেকে দেশব্যাপী ১৮ দলের টানা রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে জনজীবন অচল হয়ে পড়ে। পাশাপাশি রাস্তায় যানবাহন চলাচল করতে না পেরে বিপর্যস্ত হয় পণ্য পরিবহন সেক্টর। জনসাধারণের দুর্ভোগেরও সীমা ছিল না। কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সেই দিনের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই। পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২০-২৫ টাকা বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা জানায়, সরবরাহ না থাকায় এবং গাড়ি না আসায় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। পণ্য পরিবহন খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, চালের দাম বেড়েছে। নতুন ধান আসার পরও মোটা চালের কেজি ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চালের ঊর্ধ্বমুখী বাজার থাকবে না বলে চাল ব্যবসায়ীরা জানায়। পেঁয়াজের দাম বাড়লেও গতকাল শুক্রবার ১০০-১২০ টাকা কেজির পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকায় নেমে এসেছে। রীতিমতো চাঁদপুর নদী বন্দরের পণ্য আমদানি রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে।