মিজানুর রহমান রানা
যদি নিজেরা সচেতন না হই তাহলে ইলিশ সম্পদকে আমরা হারিয়ে ফেলবো
—————- জেলা প্রশাসক ইসমাইল হোসেন
‘জেগে ওঠো মাটির টানে’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে চাঁদপুরে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে পর্দা উঠলো ৬ দিনব্যাপী গ্রামীণফোন ইলিশ উৎসবের।
মঙ্গলবার বেলা ২টায় ‘ক’ বিভাগের নির্ধারিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর বিকেল ৪টায় একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়ে শহরের শপথ চত্তর প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে এসে শেষ হয়।
বিকেল সাড়ে ৪টার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ ইসমাইল হোসেনের উপস্থিতিতে ফিতা কেটে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার মোঃ আমির জাফর। বিকেল ৫টায় শুরু হয় ‘ইলিশ সম্পদ রক্ষায় প্রশাসনের চেয়ে জনগণের ভূমিকাই অধিক’ শীর্ষক বিতর্ক অনুষ্ঠান। এতে পক্ষ দল হিসেবে অংশ নেয় ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় ও বিপক্ষ দল হিসেবে অংশ নেয় বাবুরহাট স্কুল ও কলেজ। বিতর্ক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাপ্তাহিক লাল সবুজের মেলার রোটারিয়ান মিজানুর রহমান খান। মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন মো. আরিফ হোসেন। বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের বার্তা সম্পাদক আহসান উল্যাহ ও ৬নং আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসমত আরা সাফী বন্যা।
সন্ধ্যা ৬টায় আলোচনা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, চাঁদপুর শহর এক উৎসবের নগরী। এখানের মানুষজন উৎসবে মেতে ওঠে। এখানে ইলিশ নিয়েও উৎসব হয়। ইলিশ উৎসবকে একটি আন্দোলন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আমরা যদি মেঘনা অববাহিকাকে রক্ষা করতে পারি, মা ইলিশ, জাটকা ইলিশ রক্ষা করতে পারি তাহলে বছরে ৭শ’ টন ইলিশ বেশি উৎপন্ন হবে। একটি ইলিশের রেণু রক্ষা করতে যদি পারা যায় তাহলে ৫ লাখ টন বা ১শ’ ট্রাক ইলিশ রক্ষা করা যাবে। তবে দুঃখের বিষয়, ইলিশের সঠিক উৎপাদন রক্ষা করতে গিয়ে যদি পুলিশ, কোস্টগার্ডের ওপর আক্রমণ হয় তাহলে বুঝতে হবে এখানে কোনো গ্যাপ রয়েছে। এখন জনগণকে জানতে হবে যে, আমি জাটকা খাবো না এবং জেলেদেরকে মানতে হবে যে, তারা জাটকা ধরবে না। আমরা যদি নিজেরা সচেতন না হই তাহলে জাটকা ধরা কোনোদিনই বন্ধ হবে না এবং আমরা এই ইলিশ সম্পদকে চিরতরে হারিয়ে ফেলবো।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার-এর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব হারুন আল রশিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ আমির জাফর। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সফিকুর রহমান, গ্রামীণফোন কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজার সৌরভ বিশ্বাস, সংবর্ধিত অতিথি জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এম এ ওয়াদুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা অজিত সাহা, দৈনিক চাঁদপুর বার্তার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শহীদ পাটওয়ারী।
সন্ধ্যা ৭টায় রংধনু সাংস্কৃতিক সংগঠনের নৃত্যানুষ্ঠান ও রাত ৮টায় সম্মাননা প্রদান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন হাজীগঞ্জ মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ড. আলমগীর কবির পাটওয়ারী। উদ্বোধন করেন মতলব পৌরসভার মেয়র এনামুল হক বাদল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট চিকিৎসক রোটাঃ ডাঃ মিজানুর রহমান খান ও জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ আলী মাঝি। সবশেষে রাত ৯টায় রিমঝিম সাংস্কৃতিক সংগঠনের নৃত্য ও সঙ্গীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।