মিজান লিটন=
গত শুক্রবার রাতে চাঁদপুর শহরের মমিনপাড়া পীর বাদশা মিয়া রোডস্থ মুন্সি বাড়ির ফজলুল হক মুন্সির ২য় ছেলে শরীফ মুন্সি কর্তৃক তার স্ত্রী হাজেরা বেগমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে চলছে ওই এলাকায় নানা গুঞ্জন। এ দিকে হাজেরার মৃত্যুর পর থেকে শরীফ মুন্সি ও ঘরের অন্যরা সবাই পলাতক।
গতকাল শনিবার দুপুরে হাজেরা বেগমের পরিবারের লোকজন চাঁদপুর মডেল থানার মাধ্যমে লাশ বুঝে নেয়। পরে ওই দিন বাদ আছর হাজেরার বাবার বাড়ি পশ্চিম বিষ্ণুদীতে হাজী হাসান আলী জামে মসজিদের সামনে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ছিলো মুসল্লিদের ঢল। কিন্তু সেখানে ছিলো না শরীফ মুন্সির পরিবারের লোকজন। হাজেরা বেগমের বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজনদের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠে। এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। পরে জানাজা শেষে হাজী হাসান আলী জামে মসজিদ কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়। মমিনপাড়া মুন্সি বাড়িতে গতকাল সাড়ে ১১টায় যাওয়া হলে গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে শোনা যায় নানা গুঞ্জন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাড়ার ক�জন সাংবাদিকদের জানায়, শরীফ দু� আড়াই মাস হলো বিয়ে করেছে। আমরা তার স্ত্রীর এমন খারাপ কিছু দেখিনি। ঘটনার দিন বিকেলে বিল্ডিংয়ের গেটের কাছে দেখেছি শরীফের ভাতিজি ইভার সাথে খেলা করছে। কিন্তু রাতে কী কারণে শরীফের স্ত্রীকে হাসপাতালে নেয়া হলো আবার রাতেই শুনি সে মারা গেছে। তবে শরীফের বড় ভাই হাবিব খুব খারাপ। এর আগেও হাবীব দু�টি কন্যা সন্তান রেখে তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেয়। শরীফের অগোচরে হাবিব ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর উপর নির্যাতন করে, আবার তার মা তাকে সায় দেয় বলে অনেকে জানায়।
ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৭টায় হাজেরা বেগমের বাপের বাড়ির মোঃ তাজুল ইসলাম ওই ঘরে মুড়ি খেয়ে আসে। সেখানে হাজেরাকে হাসি খুশি দেখে এসেছে। হাজেরা আত্মহত্যা করে মরতে পারে না। তাকে মারা হয়েছে। হাজেরার মা বলেন, গত ১৯ অক্টোবর আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। আমার মেয়ে এমন কী অন্যায় করেছে যে তাকে গলাটিপে মেরে ফেলতে হবে। আমার মেয়ের যদি কোনো দোষ থাকে তাহলে আমাদেরকে বলতো, আমরা শাসন করতাম। আমার মেয়েকে শুধু শুধু মেরে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আমি এ হত্যার বিচার চাই।
এ দিকে শরীফের ভাই হাবিব মুন্সির প্রায় সময় হাজেরার দিকে খারাপ নজর ছিলো বলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানায়। হাবিবের মেয়ে সূচনা ও ইভাকে জিজ্ঞাসা করা হলে এ মৃত্যুর মূল ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে মুন্সি বাড়ির লোকজন জানায়। ওই বাড়ির কিছু লোক এমনও জানায় যে, হাজেরা পরকীয়া করতো। সে গোপনভাবে ১টি মোবাইল ব্যবহার করতো। হয়তো মোবাইল ও পরকীয়া নিয়ে এ ঘটনা হতে পরে বলে তারা জানায়। হাজেরার শ্বশুর বাড়ির লোকজন শুক্রবার রাতে চাঁদপুর সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য সেখানে নেয়া হলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই কাসেম চাঁদপুর নিউজকে জানান, আমরা লাশের গলায় ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। হত্যা না আত্মহত্যা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ময়না তদন্ত রিপোর্ট বের হলে জানা যাবে কোনটি হয়েছে। চাঁদপুর মডেল থানায় ১টি মামলা রুজু হয়েছে।