প্রতিনিধি
পূজা ও ঈদ উদযাপন করতে ঝুঁকি নিয়েই বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চযাত্রীরা। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি লঞ্চেই নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নির্দেশ অমান্য করে ছাদে উঠে ঢাকা ছাড়ছেন ঘরমুখো মানুষ। তবে লঞ্চের ছাদে যাত্রী ওঠালেও অতিরিক্ত যাত্রী বহনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লঞ্চ মালিকরা। অথচ প্রতিটি লঞ্চেই ধারণ ক্ষমতার তিন-চারগুণ বেশি যাত্রী বহন করা হচ্ছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত যাত্রী বহন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানালেও এখনও কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের। পাল্টা লঞ্চ মালিকদের পক্ষেই কথা বলছে বিআইডব্লিউটিএ।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বুধবার বিকেলে দেখা যায় ঘরমুখো যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। আর যাত্রী চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে পূবালী-৭, প্রিন্স অব হাসান হোসেন-১, এমভি বন্ধন-৭, এমভি শাহরুখসহ অন্যান্য লঞ্চের ছাদে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, লঞ্চের ছাদে যাত্রী নিতে নিষেধ করা হয়েছে। আর প্রতিটি লঞ্চের গায়েই রোড লাইন মার্ক আছে। এটি পানির নিচে গেলে সমস্যা হবে। অন্যথায় ধারণ ক্ষমতা কোনো বিষয় না।
তবে যাত্রীরা জানিয়েছেন ভিন্নকথা। পটুয়াখালীগামী পূবালী-৭-এর যাত্রী আসাদ সালাম বলেন, লঞ্চ মালিকরা ছাদে কমমূল্যে যাত্রী নিচ্ছেন। এতে স্বল্প আয়ের মানুষরা খুশি হয়েই ছাদে উঠছেন। কিন্তু অনেকের জন্যই তা ঝুঁকিপূর্ণ। এদিকে লঞ্চের ছাদে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে না জানিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার আহ্বায়ক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, কেউ ছাদে উঠলে গরমের কারণে উঠেছেন। অন্যদিকে লঞ্চের ছাদে যাত্রী উঠলে পুলিশকে অবহিত করা হয় জানিয়ে বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক মাহফুজ বলেন, ছাদে কোনো যাত্রী নেই।
এদিকে পন্টুনে হকার নিষিদ্ধ করা হলেও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের ভেতর কয়েক শ হকার অবস্থান করছে। ঘাট শ্রমিক লীগকে চাঁদা দিয়ে এ সব হকার পন্টুনে অবস্থান নেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে সদরঘাট নৌ পুলিশ ফাঁড়ির টিএসআই সামসুল আলম বলেন, বিষয়টি তাদের দেখার বিষয় না। এটি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার দায়িত্ব। এ ছাড়াও বন্দরে নিয়োজিত সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের পরিদর্শক মেরিন ম্যাজিস্ট্রেট ও ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনা অমান্য করে নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে ছাড়া হচ্ছে প্রায় প্রতিটি লঞ্চ। গত ১৪ সেপ্টেম্বর নৌমন্ত্রী শাজাহান খান মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও ছাদে যাত্রী ওঠানো নিষেধের কথা জানান।