স্টাফ রিপোর্টার : স্বাস্থ্যবিধি মেনে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের শাহ্তলী জিলানী চিশতী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র কর্মকার এর অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল ৩১মে (সোমবার) সকাল ১১টায় চাঁদপুর প্রেসক্লাব ভবনের ২য় তলায় এলিট চাইনিজ রেস্টুরেন্টে বিদ্যালয়ের নবাগত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: সাহাদাৎ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র শিক্ষিকা ফাহিমা জাহানের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদী।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদী বলেন, এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছেন আমার দাদা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মরহুম এটি আহমেদ হোসেন রুশদী। পরবর্তীতে আমার পিতা এই প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দীর্ঘদিন পালন করেন। বিদায়ী প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র কর্মকার একজন দক্ষ শিক্ষক ছিলেন। তিনি শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করেছেন। এ বিদ্যালয়ের ক্রান্তিকালে নেপাল সাহেব হাল ধরেছেন।
তিনি বলেন, নেপাল সাহেব বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন। ভবনের জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। এ বিদ্যালয়ের জন্য তিনি ছিলেন একজন নিবেদিত প্রধান শিক্ষক। তিনি সবসময় বিদ্যালয়ের মঙ্গলের জন্য কাজ করেছেন। শিক্ষার মানউন্নয়নে তিনি আপোস করেননি কখনও।
তিনি বলেন, আমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবকাঠামোগত উন্নয়নে কাজ করছি। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি এমপি’র সহযোগিতায় আমাদের শাহতলী জিলানী চিশতী কলেজসহ শাহতলীস্থ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মান করা হয়েছে। এজন্য আমি গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি এমপি মহোদয়ের কাছে কৃতজ্ঞ জ্ঞাপন করছি। ভবনের কাজে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন বিদ্যালয়ের বিদায়ী প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র কর্মকার।
অনুষ্ঠানে বিদায়ী অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিদ্যালয়ের বিদায়ী (অব: ) প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র কর্মকার। তিনি বলেন, আমি প্রথমেই স্মরণ করছি যিনি এ প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিষ্ঠা করেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মরহুম এটি আহমেদ হোসেন রুশদী সাহেবকে। আমি আরো স্মরণ করছি বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মরহুম অ্যাডভোকেট তাহের হোসেন রুশদী সাহেবকে। আমি আমার জীবনের দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছি এ প্রতিষ্ঠানে।
তিনি বলেন, আমি সবসময় চেষ্টা করেছি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সোহেল রুশদী সাহেবের সহযোগিতায় শিক্ষকদের নিয়ে বিদ্যালয়টিকে ভালো একটি অবস্থানে নিতে। সকলের প্রচেষ্টায় যেকোন কাজ খুব সহজেই করা যায়। আমিও তাই করেছি। আমরা বিদ্যালয়ের সভাপতি সোহেল রুশদীর নেতৃত্বে অত্যন্ত নিরাপদে কাজ করতে পেরেছি।
এসময় বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিদায়ী প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র কর্মকারকে ফুল ও উপহার দিয়ে সংবর্ধনা জানান বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদী।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদী’র উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের বিদায়ী প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র কর্মকার বিদ্যালয়ের দায়িত্ব নবাগত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: সাহাদাৎ হোসেনের কাছে হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিদায়ী প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র কর্মকারসহ পরিবারের সদস্যদের মাঝে উপহার তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদী। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বিদায়ী প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র কর্মকারকে উপহার তুলে দেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।
এ সময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উত্তর শাহতলী জোবাইদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নয়ন চন্দ্র দাস, ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো: সফিক কারী, মহিলা মেম্বার মিসেস ফিরোজা বেগম ,২৯নং উত্তর শাহতলী যোবাইদা বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আবুল কালাম আজাদ, ৩০নং মধ্য শাহতলী কাদেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা: তহমিনা আক্তার, জিলানী চিশতী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো: রফিকুল ইসলাম তালুকদার, ২৯নং উত্তর শাহতলী যোবাইদা বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো: দিদার হোসেন মিজি, ইংরেজী শিক্ষক মো: ফজলুল করিম খান, শাহতলী কামিল মাদরাসার শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল হালিম গাজী, বিদায়ী প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র কর্মকারের ছোট মেয়ে মানবিকা কর্মকার, বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক মো: মোস্তফা মিজি।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বিদায়ী প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র কর্মকারের স্ত্রী বিথী রানী কর্মকার, বড় মেয়ে নবনিতা কর্মকার, বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা রাবেয়া বেগম, সহকারি শিক্ষক মাওলানা শহিদুল ইসলাম, সহকারি শিক্ষক মো: লুৎফুর রহমান, সহকারি শিক্ষক বিপুল চন্দ্র নন্দী, গণিত শিক্ষক মো: সাইফুল ইসলাম, সহকারি লাইব্রেরিয়ান মো: রবিউল আউয়াল খান, অফিস সহকারি মো: মোস্তফা কামাল, অফিস সহায়ক মো: হযরত আলী, অফিস সহায়ক ফারজানা আক্তারসহ অন্যান্যরা।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য রাখেন, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: সাহাদাৎ হোসেন। তিনি বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির এক সভা চাঁদপুর প্রেসক্লাব ভবনের ২য় তলায় এলিট চাইনিজ রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়েছে । উক্ত সভায় বিদায়ী প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র কর্মকারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চাকুরীর অবসর অনুমোদন করেন এবং বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: সাহাদাৎ হোসেনকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয় ।
উল্লেখ্য, জিলানী চিশতী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিদায়ী প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র কর্মকার ১৯৯১সালের অক্টোবর মাসের ১৪তারিখে সহকারি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসের ৯তারিখে সহাকরি প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। সর্বশেষ তিনি ২০১৩সালের জুন মাসের ১তারিখে অত্র বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। অবসরের আগ মুহুত্ব পর্যন্ত তিনি অত্র বিদ্যালয়ে সুনামের সহিত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এ বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে ১৮বছর শিক্ষকতা করেছেন, সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে প্রায় ৩বছর শিক্ষকতা করেছেন এবং সর্বষেশ প্রধান শিক্ষক হিসেবে প্রায় ৮বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এ প্রতিষ্ঠানে সর্বমোট ২৯বছর ৮মাস ১৭দিন দায়িত্ব পালন করেছেন।