মিজান লিটন ॥
জেলার অধিকাংশ পথখাবারে জীবাণু, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শিশুসহ পথচারিরা। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) এক গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ পথখাবারে নানা ধরনের জীবাণু রয়েছে। এসব খাবার বিক্রেতাদের ৮৮ শতাংশের হাতে থাকে জীবাণু। গবেষণাকারীরা বলছেন, বিক্রেতাদের সচেতন করে খাবার দূষণ কমিয়ে আনা সম্ভব।
শহরে নিরাপদ পথখাবার (স্ট্রিট ফুড) নিশ্চিতকরণে রাস্তার বিক্রেতাদের আচরণ পরিবর্তনে উদ্যোগ’ শীর্ষক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। আইসিডিডিআরবির এক গবেষণায় এতথ্য জানা যায়।
শহরের রাস্তাগুলো ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে প্রতিনিয়ত এসব খাবার খোলা অবস্থায় বিক্রি করছে বিক্রেতারা। স্কুল ছুটির পরপরই ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা মহানন্দে এসব খাবার ক্রয় করে খাচ্ছে। আর এসব খাবার খেয়ে প্রায় সময় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এ সকল শিশুরা। এমনকি ফুটপাতেও বিক্রিত খাবার বয়জেষ্ঠ্য থেকে সকলে এ ধরনের খাবার গ্রহণ করছে। কিন্তু খাবারের পূর্বে কেউ ভাবে না এখাবার নিরাপদ কিনা। অসুস্থ হওয়ার পেছনে এটিও একটি বড় কারন। এমনিতে আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের খাবারের সাথে ফরমালিন মেশানো থাকে। তার মধ্যে আবার এ ধরনের ফুটপাতের খাবার অসুস্থতার অন্য আরেকটি কারণ।
বিভিন্ন শহর ও রাস্তার পাশে প্রায় সহ¯্রাধিক বিক্রেতা নানা ধরনের খাবার বিক্রি করেন। এর মধ্যে আছে ফল, চা, ঝালমুড়ি, পিঠা, বাদাম, আচার, ছোলা, চটপটি, ফুচকা, চাটনি, মিষ্টি, ডিম (ভাজা বা সেদ্ধ), রুটি, পরোটা, পুরি, চিপস, মোয়া, শিঙাড়া, সমুচা, পেঁয়াজু, শরবত, ফলের রস, হালিম, আইসক্রিম, নুডলস ইত্যাদি।
গবেষকেরা দেখেছেন, তৈরি প্রক্রিয়া, রান্না, সংরণ, সরবরাহ এসব স্তরে খাবার দূষিত হয়। দূষণের কারণ বা জীবাণুযুক্ত হওয়ার একটি বড় কারণ অনিরাপদ পানির ব্যবহার। খাবার বিক্রেতার নোংরা হাতে, গামছায়, খাবার সরবরাহের প্লেটে বা কাগজে জীবাণু থাকে। এ ছাড়া মাছি বা অন্যান্য কীটপতঙ্গের কারণেও দূষণ ঘটে। দূষণের আর একটি কারণ বারবার টাকা নাড়াচাড়া করা।
পথখাবার বিক্রেতা এবং এসব খাবার যাঁরা ক্রয় করেন, তাঁদের সচেতনতা প্রয়োজন। গবেষণার অংশ হিসেবে পথখাবার বিক্রেতাদের সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
বিক্রেতাদের খাবার খোলা অবস্থায় না রাখা, সরু মুখওয়ালা পানির পাত্র ব্যবহার, কাঁচা খাবার বা সরঞ্জাম পরিষ্কার রাখা, হাত ধোয়া, গ্লাভস ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিণ দেওয়া জরুরী। ক্রেতারা যেন খাবারে হাত না দেন বা বিক্রেতা যেন একই পানি বারবার ব্যবহার না করেন, সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে। এরপর দেখা যাবে, পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। প্রশিণ পাওয়া বিক্রেতাদের হাতে জীবাণু কম এবং তাঁদের বিক্রি করা খাবারে জীবাণুও কম পাওয়া যাবে। তাহলে তাদের বিক্রিও বেড়ে যাবে।
সচেতন মহলের প্রত্যাশা এ সকল ফুটপাতের খাবার যারা বিক্রি করে তাদেরকে এখনি সচেতন করা প্রয়োজন এবং শিশু সহ সকলেই এধরেন খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলে শরীর স্বাস্থ্য কিছুটা হলেও ঠিক থাকবে। শিশুরাও নানা ধরনে রোগ থেকে রক্ষা পাবে।
শিরোনাম:
মঙ্গলবার , ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৯ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।