প্রতিনিধি
চাঁদপুর জেলার ৮ উপজেলায় তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত বর্তমান সময়ে প্রায় দশ হাজার সিএনজি অটোরিক্সা রাস্তায় চলাচল করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে পাঁচ হাজার সিএনজি গাড়ির বিআরটিসি থেকে বৈধভাবে কাগজপত্রের মাধ্যমে নাম্বার নেয়া রয়েছে। আর বাকি অর্ধেক সিএনজির কোনো কাগজপত্র বা নাম্বার নেই। আর এটিকে পুঁজি করে জেলার ৮টি উপজেলায় প্রতিটি সিএনজি থেকে দুইশত টাকা হারে মাসে দশ লাখ টাকার মতো চাঁদাবাজি হচ্ছে। আর এই চাঁদাবাজি হচ্ছে জেলার স্ব-স্ব উপজেলার ট্রাফিক পুলিশ আর যে উপজেলায় সরকারের এ সংস্থার লোক নেই সেই উপজেলায় স্ব-স্ব থানার নামে চলছে এ চাঁদাবাজি। এমন অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিনের।
জানাযায়, জেলায় ৮টি উপজেলা যথাক্রমে চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, ফরিদগঞ্জ, কচুয়া ও হাইমচর উপজেলা। এ সকল উপজেলাগুলোতে সিএনজির নাম্বারসহ ও নাম্বার বিহীন চলাচলের সংখ্যা প্রায় দশ হাজার। কিন্তু সরকারের নিয়ম অনুযায়ী এগুলো চলাচলের সংখ্যা আরো কম রয়েছে। যারা এগুলো চালায় অর্থাৎ যাকে চালক বা ড্রাইভার বলা হয় তাদের কতজনের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে এ তথ্যটি স্বয়ং বিআরটিসি জেলা অফিসের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরাও বলতে পারেনা। শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত ড্রাইভার রয়েছে। যারফলে গতিহীন বা বেপোরোয়াভাবে চলছে এ পরিবহনটি। যেই কারণে জেলার ৮টি উপজেলায় এমন কোনো দিন নেই যে দুর্ঘটনা হয়না। জেলার শতাধিক পরিবার রয়েছে যারা এই পরিবহন দ্বারা দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে জীবন নিশ্চিহ্ন। পঙ্গুত্বা বা ধুকে ধুকে পুরো পরিবার শেষ।
অপরদিকে দেশের চলমান আইনী ব্যবস্থার ফাঁক ফোকরে এসকল অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা নূন্যতম। এর ফলে একের পর এক অপরাধ করেও এরা পার পেয়ে যায়।
আবার দেশের পরিবহন বা যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সিএনজি অটো রিক্সাগুলো যে সকল জেলাস্থ বিআরটিসি থেকে নাম্বার নেওয়া হবে ঐ সকল জেলায় চলার নিয়ম রয়েছে। এই নিয়মগুলো শুধুমাত্র কাগজ কলমে সীমাবদ্ধ। এগুলো যারা দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন বা রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কথা রযেছে তারা ভক্ষকের ভূমিকা পালন করছেন বলে এমন অভিযোগ রয়েছে।
জানাযায়, জেলার পার্শ্ববর্তী জেলা লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লা জেলার নাম্বারধারী প্রায় দুই হাজার সিএনজি এ জেলায় রয়েছে। এগুলো বেশির ভাগ মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলা, কচুয়া, হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জে চলাচল করে। এদিকে জেলার ৮টি উপজেলায় রাস্তায় চলাচলরত সিএনজি অটোরিক্সা থেকে সিএনজি প্রতি দুইশত টাকা করে প্রতিমাসে চাঁদা উত্তোলন করা হয়। যাকে পরিবহন খাতে বলা হয় মানতি টাকা বা মাসিক টাকা। এই চাঁদা উঠানোর কারণে অনেক ক্ষেত্রে সিএনজি ড্রাইভাররা অপরাধ করে জোরগলায় বুক ফুঁলিয়ে বলে থাকেন আমার গাড়ি মানতি করা আছে। পুলিশ আমাকে কিছু করবে না।
জানা যায়, জেলার চাঁদপুর সদর উপজেলা এবং হাজীগঞ্জ উপজেলায় সরকারিভাবে ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা রয়েছে। এজন্য এ দু’টি উপজেলায় সিএনজি প্রতি ২০০ টাকা মাসিক চাঁদাটি ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বরত ক্যাশিয়ারগণ নিজেরাই তুলেন। বাকি ৬টি উপজেলা যথাক্রমে ফরিদগঞ্জ, হাইমচর, মতলব উত্তর ও দক্ষিণ, কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলায় ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা না থাকায় সেখানে এ সংস্থার কর্তৃপক্ষও নেই। যার ফলে এ ৬টি উপজেলায় মাসিক ২০০ টাকা হারে সিএনজি প্রতি চাঁদা তুলেন সংশ্লিষ্ট থানা। এটি তদারকির দায়িত্বে থাকেন সংশ্লিষ্ট থানার পদ সৃষ্টিকারি পদবীর ক্যাশিয়ার ও মুন্সি।
এ বিষয়ে এএসপি হেড কোয়ার্টার চাঁদপুরের বক্তব্য চাওয়া হলে তিনি মিটিংয়ে এবং ব্যস্ততার অজুহাতে পরে কথা বলবে বলে জানান। সিএনজি প্রতি চাঁদাবাজির বিষয়ে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর চাঁদপুরের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি গাড়িতে আছেন এবং একইভাবে ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে পরে কথা বলবেন বলে জানান।
শিরোনাম:
রবিবার , ৩ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ১৯ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।