শাহরিয়ার খান কৌশিক ॥
৫ জানুয়ারীর খালেদা জিয়া অবরুদ্ধকে কেন্দ্র করে পরবর্তী ২দিনের অবরোধে জেলা বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড হয়েছে। এর মধ্যে গাড়ী ভাংচুর, গাড়ী পোড়ানো, গাছ কাটা, সড়কে অগ্নি সংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ ও সাধারণ মানুষের উপর হামলায় এ পর্যন্ত পুলিশ বাদী হয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রায় ২ সহ¯্রাধিক লোক আসামী করা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত পিকেটারের হামলায় অলোক চক্রবর্তী নামক এক ব্যাক্তির মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর সদরের ঘোষেরহাট, শাহমাহমুদপুর, বাবুরহাট, চিত্রলেখা, কলেজ গেইট, হাজী মহসীন রোড, নতুন বাজার, বাগাদী নিজ গাছতলা, রঘুনাথপুরে বিচ্ছিন্ন ভাবে হামলায় শতাধিক সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, অটোবাইক, মালবাহী ট্রাক ভাংচুর হয়েছে।বরোধের প্রথম দিনের দিবাগত রাতে ঘোষেরহাট এলাকায় মালবাহী ট্রাকে আগুন দেয় দূর্বৃত্তরা। ওইদিন ওই এলাকায় পিকেটারদের ধাওয়া খেয়ে সি.এন.জি রাস্তার খাদে পড়ে গিয়ে যাত্রী শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী ইউনিয়নের বড়লিয়া গ্রামের মৃত রমেশ চন্দ্র চক্রবর্তীর ছেলে রিপ্রেজেন্টিভ অলক চক্রবর্তী মারাত্মক আহত হয়ে ঢাকায় নেয়ার পথে মতলবে মারা যায়। শহরের কদমতলা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সেভেনষ্টার ট্রান্সপোর্টের একটি কাভার্ড ভ্যান ভাংচুর করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এঘটনায় ট্রান্সপোর্ট কর্তৃপক্ষ সফিক বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। সে ঘটনায় মডেল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরিচুল হক সি.এস.ডি গোডাউনের সামনে থেকে রাজিব নামের এক যুবককে আটক করে আদালতে প্রেরণ করে। ঘোষেরহাটে যাত্রী অলোক মৃত্যুর ঘটনায় মডেল থানার এসআই আবু সাইদ বাদী হয়ে ২নং আশিকাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার মাষ্টারকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় দেলোয়ার মাষ্টার গতকাল বুধবার সকালে আটক করে ও একই মামলায় খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক জোনায়েদ হাসান মোক্তারকে গ্রেফতার করে। এই মামলায় পুলিশ ৩০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞানামা ১শ’ ৫০জনকে আসামী করে। চাঁদপুরে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে ৯৯ রাউন্ড শর্টগান ও ৪রাউন্ড টিআরসেল নিক্ষেপ করে। ৩দিনে পুলিশ বাদী হয়ে মোট ৭টি মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলায় প্রায় সহ¯্রাধিক আসামী রয়েছে।
এছাড়া হাজীগঞ্জে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টোরাগড় এলাকায় পুলিশের সাথে পিকেটারদের সংঘর্ষ হয়। পিকেটাররা ওই সময় চট্টমেট্টো ট-১১-০১২৮ একটি কাবার্ড ভ্যানে আগুন লাগিয়ে দেয়। তারা প্রায় অর্ধশত যানবাহন ভাংচুর করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্ট গান ৩শ’ ২৪ রাউন্ড, চায়না বুলেট ১৮ ও ১০ রাউন্ড টিআর সেল নিক্ষেপ করে। এই ঘটনায় হাজীগঞ্জ থানায় ২টি মামলা দায়ের করা হয়।
অপরদিকে ফরিদগঞ্জে ১ম দিনের ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে। ওই দিন রাতে ফরিদগঞ্জের চতুরায় দূর্বৃত্তরা আনন্দ বাসে আগুন দেয়। এসব ঘটনায় পুলিশ পৃথকভাবে ৩টি মামলা দায়ের করে।
কচুয়ায় ৫ জানুয়ারী গাড়ী পোড়ানো ও হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ১টি মামলা দায়ের করে। এতে ৫২জনের নাম উল্লেখ ও ২শ’ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়। পুলিশের দায়েরকতৃ মামলায় আসামীদেরকে গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে।