গত ৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার থেকে এ ভিড় পরিলক্ষিত হয়। গতকালও ছিলো উপচেপড়া ভিড়। কার আগে কে ফরম জমা দিবে তা নিয়ে নিজেদের মাঝে চলে হুড়োহুড়ি। আবেদনকারীদের ব্যুরো অফ ম্যান পাওয়ার (বিএমইটি) নির্ধারিত আবেদন ফরমের সাথে ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি, ভোটার আইডি কার্ড বা জন্ম সনদের ফটোকপি, পাসপোর্টের ফটোকপি (যাদের আছে), সোনালী ব্যাংকে জমাকৃত ১৫০ টাকার পে-অর্ডারসহ কাগজপত্র জমা নিচ্ছে জেলা কর্মসংস্থান ব্যাংক। তবে প্রথম ২ দিন অর্থাৎ গত ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি যারা আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন তারা পে-অর্ডার ব্যতীতই কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু গতকাল থেকে যারা জমা দিচ্ছেন তাদের আবেদনপত্রের সাথে ১৫০ টাকার পে-অর্ডার জমা দিতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয় জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক হালিমা বেগমের সাথে। তিনি জানান, প্রথমদিকে আবেদনপত্রের সাথে ব্যাংক ড্রাফ্ট জমা দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো নির্দেশনা না থাকায় আমরা প্রথম ২ দিন ব্যাংক ড্রাফ্ট ব্যতীতই আবেদনপত্র জমা নিয়েছি। কিন্তু অফিস খরচ বাবদ ১৫০ টাকা জমা নেয়ার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত হওয়ায় আমরা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে আবেদনকারীদের কাছ থেকে এখন ১৫০ টাকার পে-অর্ডার গ্রহণ করছি। যারা গত ২ দিন এ ব্যাংক ড্রাফ্ট দিতে পারেনি সে সকল আবেদনকারীদেরকেও এ ব্যাংক ড্রাফট জমা দিতে হবে এবং এ সকল ব্যাংক ড্রাফ্ট আমরা তাদের আবেদনপত্রের সাথে সংযুক্ত করে দিবো। তবে ব্যাংক ড্রাফ্ট জমা নেয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্তের কোনো আদেশ কপি তিনি দেখাতে পারেননি।
গতকাল জেলা কর্মসংস্থান অফিসে গিয়ে দেখা যায় অফিসের জরিপ কর্মকর্তা মোঃ মোহছিন পাটওয়ারী, মারুফ আলী ভূঁইয়াসহ আরো ১ ব্যক্তি বেশ দ্রুততার সাথেই আবেদনকারীর ফরম জমা নিচ্ছেন এবং তাদের হাতে জেলা কর্ম সংস্থান অফিসের সিলকৃত জমা স্লিপ নাম্বারিং দিয়ে ধরিয়ে দিচ্ছেন। জানা যায়, এ সকল আবেদনপত্র যাচাই বাছাই করে ঢাকা কেন্দ্রীয় জনশক্তি ব্যুরোতে পাঠানো হবে এবং সেখানে লটারীর মাধ্যমে যার নাম উঠবে তাদেরকে তাদের ঠিকানা অনুযায়ী ডেকে পাঠানো হবে। লটারীতে অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদেরকে বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বাংলাদেশ কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস। গতকাল জেলা কর্মসংস্থান অফিসে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে আবেদনকারীদের আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে দেখা যায়। চলে সন্ধ্যা অবধি। এ সংগ্রহ কার্যক্রমে গতকাল বিকেল পর্যন্ত ৩ দিনে জমা পড়ে প্রায় দেড় সহস্রাধিক (১৫১২) আবেদন। তবে বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে জেলাওয়ারী কোনো কোটা নির্ধারণ হয়েছে কিনা তা জানাতে পারেনি জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিসের সহকারী পরিচালক। এর আগেও সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটি জেলায় একটি নির্ধারিত কোটা ছিলো। এ নির্ধারিত কোটার বাইরে কেউ আবেদন করতে পারেনি। মালয়েশিয়া যাওয়ার ক্ষেত্রে চাঁদপুর জেলার জন্য ২০১৪ সালে নির্ধারিত কোটা ছিলো ২০৭ জন। কিন্তু এবার সৌদি আরবে যাওয়ার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো কোটা সিস্টেম চালু হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রায় ৭ বছর বন্ধ থাকার পর মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশটি সম্প্রতি বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য শ্রম বাজার খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে প্রতি মাসে ১০ হাজার কর্মী গৃহস্থালি কাজে সৌদি আরব যেতে পারবে বলে জানা যায়। এ জন্য তাদের কোনো টাকা পয়সা লাগবে না। কর্মীদের সব খরচ বহন করবে নিয়োগদাতা সৌদি কোম্পানী। তবে পাসপোর্ট তৈরি ও মেডিকেল পরীক্ষার খরচ বাবদ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা লাগতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। সৌদি আরব যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া গত ৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার থেকে শুরু হয়েছে।