চাঁদপুর নৌ-সীমানায় ঝড়ের কবলে পড়া ঢাকা-বরিশাল রূটে চলাচলকারী বিলাস বহুল দ্রুতগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি গ্রীন লাইন-২ ওয়াটার ওয়েজ লঞ্চটি ব্যাপক ক্রটি শেষে রবিবার বিকেলে ৩০ ঘন্টা পর বরিশারের উদের্শে যাত্রা করে চাঁদপুর স্টিমার ঘাট ত্যাগ করেছে বলে জানান,
চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান। এ লঞ্চটি মেঘনা মোহনা অতিক্রম করার সময় শনিবার দুপুরে প্রচন্ড ঢেউ ও ঝড়ের কবলে ডুবে যাচ্ছিল। চালকের বুদ্ধিমত্তায় মেঘনা মোহনার ঘুর্ণিপাতের কবলে পড়ে তলিয়ে গিয়েও দুর্ঘটনার কবল থেকে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে ৫ শতাধিক যাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শনিবার দুপুরে চাঁদপুর নৌ-সিমানার মেঘনা ও পদ্মা নদীর গভীরে। এ ঘটনায় যাত্রীরা প্রাণে রক্ষা পেতে লঞ্চের ভিতরে ছুটাছুটি করতে গিয়ে কমপক্ষে ১৫-২০ জন যাত্রী শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনার সত্যতা শিকার করে নিশ্চিত করেছেন লঞ্চের মাষ্টার ফরিদুল ইসলাম ও স্টাফ কামাল হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শী বরিশাল সদর ভূমি অফিসের কর্মকর্তা মোঃ ফিরোজ আহমেদ জানান, দ্রুতগামী যাত্রীবাহি লঞ্চটি ঢাকা নৌ-টার্মিনাল থেকে সকাল সোয়া ৮টায় ছেড়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পথিমধ্যে চাঁদপুর নৌ-সিমানার পদ্মা মেঘনা নদীর মিলনস্থল পাড়ি দেওয়ার সময় গভীরে আসলে প্রচন্ড গতিতে আসা ঢেউ ও ঝড় হাওয়ার কবলে পরে গ্রীণ লাইন ওয়াটার ওয়েজ লঞ্চটি। এ সময় প্রচন্ড ঝড় হাওয়ার বিকট শব্দে প্রথমে লঞ্চের সামনের অংশের গ্লাস ফেটে চৌচির হয়ে যায়। তার কিছুক্ষণ পরেই লক ভেঙ্গে প্রধান গেটটি খুলে যায়, এতে গেটটি আর বন্ধ করা সম্ভব হয়নি এবং পচন্ড ঢেউয়ে ভেতরে পানি প্রবেশ করে। এ পরিস্থিতিতে যাত্রীরা ভয়ে ভিত সন্তুস্ত হয়ে চিৎকার দিতে থাকে। পরে যাত্রীদের অনুরোধে চালক লঞ্চটিকে ধীর গতিতে চালিয়ে হরিনা ঘাট পর্যন্ত যায়। পরে প্রচন্ড ঢেউ এসে লঞ্চে আঘাত করতে থাকলে লঞ্চটি আর সামনের দিকে না গিয়ে মেঘনা নদীর পশ্চিমে গিয়ে চর এলাকায় নৌঙ্গর করে। বিকেলে ঝড় হাওয়া কিছুটা নিয়ন্ত্রনে আসলে লঞ্চটিকে চাঁদপুর স্টিমার ঘাটে এনে রাখা হয়। যাত্রী বরিশাল সদর মডেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক স্বপন সিং জানান, লঞ্চটি তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গতি নিয়ন্ত্রনে থাকায় ৫ শতাধিক যাত্রী মেঘনায় ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে। তা না হলে লঞ্চটি ডুবে গিয়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা ছিলো।
লঞ্চের মাষ্টার ফরিদ জানান, লঞ্চে থাকা যাত্রীরা রাত্রি যাপন করতে গিয়ে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান,রাতে নৌ-বন্দর কর্মকর্তার পক্ষ থেকে নৌ-পুলিশ মোতায়েন করে যাত্রীদের যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ’
প্রসঙ্গত, এমভি গ্রীন লাইন-২ ও এমভি গ্রীন লাইন-৩ এ জাহাজ দুটি বিমানের মত করে তৈরি করা হয়েছে। সম্পুর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক এ জাহাজে দুটি মাত্র ৫ ঘণ্টায় যাত্রীদেরকে ঢাকা থেকে বরিশাল পৌছে দিতে পারে। এ জাহাজে একদিনের মধ্যেই বরিশাল থেকে ঢাকা এসে আবার বরিশালে ফেরা সম্ভব হয়।
দুটি শ্রেণিতে মোট ৬শ’ জন করে যাত্রী বহনে সক্ষম। আসন ব্যাবস্থা ক্যাটাম্যারান টাইপের ব্রিটিশ এয়ারলাইনসের বিমানের মতো চেয়ার সিট।