কবির হোসেন মিজি
গতকাল ২১ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১২টায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ১০৬নং কক্ষে রোগীদের সিরিয়াল নিয়ে ডাঃ এবিএম শফিকুর রহমান টিপুর সাথে রোগীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার জন্যে তিনি নিজের খামখেয়ালি মতো জিদ দেখিয়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা না দিয়েই কর্মস্থল থেকে চলে যান এমন অভিযোগ করলেন একাধিক রোগী।
গতকাল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা রোগীদের মধ্যে চাঁদপুর শহরের স্ট্র্যান্ড রোডের মমতাজ ঢালী (৬৫), উত্তর শ্রীরামদীর মোঃ সামি, ওয়্যারলেস বাজারের হনুফা বেগম, কচুয়া থানার মনির হোসেন এবং চাঁদপুর পৌরসভার মেয়রের ভাগ্নি ট্রাক রোডের শাহিদা বেগম (৫০)সহ একাধিক রোগী জানান, তারা গতকাল সকাল ৯/১০টা থেকেই ডাঃ টিপুর কক্ষের সামনে তার জন্যে অপেক্ষা করছিলেন। দীর্ঘ অপেক্ষার পর বেলা ১২টা ৭ মিনিটের সময় ডাক্তার তার ১০৬নং কক্ষে প্রবেশ করেন। এর মধ্যে কয়েকজন রোগী দেখার পরই ডাক্তারের সহযোগী সুমন টাকার বিনিময়ে সিরিয়াল ভঙ্গ করে ৭ নম্বর রোগীর সিরিয়াল রেখে ১০ নম্বর রোগীকে ডেকে দেয়। তখন ৭ নম্বর সিরিয়ালের বৃদ্ধ রোগী রেগে গিয়ে বলেন, আমাকে রেখে কীভাবে পরে আসা রোগীকে সিরিয়াল দিলেন? এ নিয়ে রোগী এবং ডাক্তারের সহযোগী সুমনের সাথে ঝগড়া হলে তখন ডাঃ শফিকুর রহমানও তাদের সঙ্গে চেঁচামেচি করেন। এক পর্যায়ে ওই বৃদ্ধ রোগীকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে এবং অন্যান্য রোগীকে ধাক্কিয়ে চিকিৎসা দেবেন না বলে ডাক্তার তার কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। রোগীরা বলেন, ডাঃ শফিকুর রহমান টিপু তার বাবার বয়সী বৃদ্ধকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে চলে যাওয়ার সময় আমরা অনেকেই তাকে অনুরোধ করে বলি, স্যার! একজন রোগীর ভুলের জন্য তো আমাদেরকে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত করতে পারেন না। তিনি আমাদের কারো কথা না শুনে রাগ দেখিয়ে চলে যান। ডাক্তার চলে যাওয়ার পরও তার কক্ষের সামনে প্রায় ৬০/৭০ জন রোগীকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ডাক্তার না পেয়ে রোগীরা রাগে-ক্ষোভে অনেক গালমন্দ করেন। পরে এ প্রতিবেদকের সহায়তায় রোগীরা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ প্রদীপ কুমার দত্তের কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে তিনি ডাঃ ফরিদ আহমেদ চৌধুরীর কাছে রোগীদের প্রেরণ করেন।
রোগীদের এমন অভিযোগের বিষয়ে ডাঃ শফিকুর রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে রোগীর কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি কোনো বৃদ্ধ রোগীকে ঘাড় ধাক্কা দেইনি। বরং তারা চিৎকার-চেঁচামেচি করলে আমি তাদের বলি, আপনারা যদি এমন করেন তাহলে আমি আপনাদের চিকিৎসাসেবা দেবো না এবং তারপর আমি রুম থেকে বেরিয়ে আসি।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ প্রদীপ কুমার দত্ত বলেন, ডাক্তার যদি এমন কাজ করে থাকেন তাহলে এটা একেবারেই দুঃখজনক। যদি সত্যি এ রকম কিছু হয়ে থাকে তাহলে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।