জাতীয় সংসদের ভেতরে-বাইরে বিভিন্ন পক্ষের আপত্তি, উদ্বেগ ও মতামত উপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করা হয়েছে। আজ বুধবার জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের আপত্তির মুখে বিলটি পাস হয়।
এই আইনে বলা হয়েছে, আইনটি কার্যকর হলে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিল হবে। তবে এই আইনটিতেই বিতর্কিত ৫৭ ধারার বিষয়গুলো চারটি ধারায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশকে পরোয়ানা ও কারও অনুমোদন ছাড়াই তল্লাশি ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই আইনে ঢোকানো হয়েছে ঔপনিবেশিক আমলের সমালোচিত আইন ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’। আইনের ১৪টি ধারার অপরাধ হবে অজামিনযোগ্য। বিশ্বের যেকোনো জায়গায় বসে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক এই আইন লঙ্ঘন হয়, এমন অপরাধ করলে তাঁর বিরুদ্ধে এই আইনে বিচার করা যাবে।
এই আইনের অধীনে সংগঠিত অপরাধ বিচার হবে ট্রাইব্যুনালে। অভিযোগ গঠনের ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে। এ সময়ে সম্ভব না হলে সর্বোচ্চ ৯০ কার্যদিবস সময় বাড়ানো যাবে। আইনে বলা হয়েছে, তথ্য অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর বিধানাবলি কার্যকর থাকবে।
আইনে ডিজিটাল মাধ্যমে আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ; মানহানিকর তথ্য প্রকাশ; ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত; আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, অনুমতি ছাড়া ব্যক্তি তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়ে অপরাধে জেল জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। বিরোধী দলের কয়েকজন সদস্যও আইনের বেশ কিছু ধারা নিয়ে আপত্তি তুলেন। তবে সেসব আপত্তি টেকেনি।
ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বিলটি পাসের জন্য সংসদে তোলেন। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ১১ জন ও স্বতন্ত্র একজন সাংসদ বিলটি নিয়ে জনমত যাচাই ও আরও পরীক্ষা-নীরিক্ষা করার প্রস্তাব দেন। তবে এর মধ্যে তিনজন সাংসদ উপস্থিত ছিলেন না। আর জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ তাঁর প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেন।