চাঁদপুর নিউজ ডেস্ক=
১৯৯০ সালে ব্যবসা শুরু করে মো. সবুর খান এখন দেশের আইটি খাতের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের একজন। দেশের সবচেয়ে বড় চেম্বার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি হয়ে তিনি দুই হাজার নতুন উদ্যোক্তা তৈরির প্রকল্প নিয়েছেন। কালের কণ্ঠের প্রতিবেদক রাজীব আহমেদের সঙ্গে আলাপকালে মো. সবুর খান জানান, দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যেই ঢাকা চেম্বার ২০০০ উদ্যোক্তা তৈরির প্রকল্প নিয়েছে
একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে সেখানে উদ্যোক্তার যেমন কর্মসংস্থান হয়, তেমনি কাজের সুযোগ পায় ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। আখেরে উপকার হয় দেশের। এজন্য সারা বিশ্বেই দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেওয়া হয়। সবুর খান বলেন, বর্তমান সরকারের রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) শিল্পের অবদান ২৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশে উন্নীত করা দরকার। জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি দুই অংকে নেওয়ার ক্ষেত্রে এর কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া সরকারের ৬ষ্ঠ পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনায় ২০১৫ সালের মধ্যে ৬১.৫ মিলিয়ন (৬ কোটি ১৫ লাখ) কর্মসংস্থান তৈরীর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী খাতের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরীর অংশ হিসেবে ঢাকা চেম্বার এ উদ্যোগ নিয়েছে।
বাংলাদেশে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে একাধিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সহজ। কিন্তু নতুন প্রতিষ্ঠান গড়তে গেলে নানা ধরণের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়। এক সময় নতুনরা হতোদ্যম হয়ে পড়েন। সবুর খান মনে করেন, বাংলাদেশে ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা অনেক। তাঁর মতে, বর্তমানে দেশে শিল্প-স্থাপনের মতো জমির অপ্রতুলতা রয়েছে। এছাড়াও রাজনৈতিক অস্থিরিতা, নিরাপত্তা হীনতা, ব্যাংক ঋণের চড়া সুদের হার, যোগাযোগ অবকাঠামোর অপর্যাপ্ততা এবং চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস-বিদ্যুৎ ও পানিসহ অন্যান্য ইউলিটি সার্ভিস না পাওয়ার কারণে নতুন শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে ব্যাপক অসুবিধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের।
নতুন উদ্যোক্তাদের এসব অসুবিধা দূর করতে ঢাকা চেম্বার কি উদ্যোগ নেবে-জানতে চাইলে সবুর খান বলেন, নতুন উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য ঢাকা চেম্বার বাংলাদেশে ব্যাংকের সহযোগিতায় বিভিন্ন সরকারী ও বেসারকারী ব্যাংকের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া ঢাকা চেম্বার ইতোমধ্যে ‘হেল্প ডেস্ক’ স্থাপন করেছে। নতুন প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন ও আরজেএসসি সংক্রান্ত অন্যান্য সুবিধাদি প্রদান, বিজনেস ম্যাচ মেকিং সার্ভিস (বিটুবি) প্রদান, উৎপাদিত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ বিষয়ক সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে এর মাধ্যমে।
তিনি জানান, ঢাকা চেম্বার নতুন উদ্যোক্তাদের ব্যবসা-প্রকল্প উপস্থাপনের ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি), ক্ষুদ্র ও কুটির ইন্ডাস্ট্রিজ ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (স্কীটি) ঢাকা চেম্বারের নতুন উদ্যোক্তাদের আগামী দুই বছর প্রশিক্ষণ প্রদান করবে। ঢাকা চেম্বার ইতোমধ্যে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ প্রদানের নীতিমালা ও পদ্ধতি সম্বলিত একটি বই ‘ডিসিসিআই হ্যান্ডবুক’ প্রকাশ করার কাজ করছে। এর মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তারা ব্যবসা নিবন্ধন প্রক্রিয়া, ঋণ সুবিধা পাওয়ার প্রক্রিয়া/শর্তাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করতে পারবে। ডিসিসিআই সভাপতি জানান, একটি প্রকল্প শুরু করতে গেলে নতুনরা নানা ধরনের আমলাতান্ত্রিক ও অন্যান্য বাধার মুখে পড়েন। সেক্ষেত্রে ডিসিসিআই সংশ্লিষ্ট সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান (যেমন-বিসিক, শিল্পমন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়) এবং ব্যাংকের সাথে আলোচনার মাধ্যমে তা নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।