মিজান লিটন
চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতের দায়েরকৃত মানবপাচার মামলার গুম হওয়া গৃহবঁধূ ও শিশু কন্যা ঘটনার ৩ বছর পর চাঁদপুর মডেল থানার এসআই আবু সাঈদ গতকাল ৩ সেপ্টেম্বর বুধবার গভীর রাতে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের শেখ বাড়ির মৃত নুরুজ্জামান শেখের কন্যা মোসাম্মৎ রোকেয়া বেগমের সাথে হাজীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বলাখাল উচ্চঙ্গা গ্রামের বেপারী বাড়ির আব্দুল মতিন বেপারীর ছেলে মোঃ সুমন বেপারীর সাথে একযুগ পূর্বে বিবাহ হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর তাদের সংসারে মোবাশ্বেরা আক্তার তানিম (৬) নামের এক কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। স্বামীর বাড়িতে রোকেয়া আক্তারকে, শ্বাশুড়ি আয়েশা বেগম ও স্বামী সুমন বেপারী শারীরিকভাবে নির্যাতন করত। এজন্য রোকেয়া আক্তার তার কন্যা সন্তানকে নিয়ে ২০১১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে রোকেয়া আক্তারের বড় ভাই মোঃ আবুল বাশার শেখ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাবইব্যুনাল আদালত চাঁদপুরে সুমন বেপারী ও তার মা আয়েশা বেগমকে আসামী করে মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করে।
অভিযোগে উল্লেখ করেন, আসামীগণ আমার বোন ও ভাগ্নিকে আটকে রেখে পতিতা বৃত্তি ও বেআইনী নীতি কোন কাজে নিয়োজিত করার অসৎ উদ্দেশ্যে পতিতার নিকট বা কোন পতিতালয়ে ব্যস্থাপকের নিকট বিক্রি করে দিয়েছে অথবা নারী পাচারকারী সদস্যের নিকট বিক্রি করে দিয়েছে কিংবা হত্যা করে লাশ গুম করে দিয়েছে। অভিযোগটি বিজ্ঞ বিচারক চাঁদপুর মডেল থানা পুলিকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করে। তৎকালিন চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন ৩১ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে তদন্ত শেষে মানব পাচার ট্রাইব্যুনাল আদালত চাঁদপুরে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। দীর্ঘ ৩ বছর আত্মগোপনে থাকা রোকেয়া বেগম ও তার শিশু কন্যা মোবাশ্বেরা আক্তার তানিমকে চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আবু সাঈদ রোকেয়ার বেগমের ভাসুরের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে বাগাদী ইউনিয়নের সোবহানপুর গ্রামের বেপারী বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গভীর রাতে মানব পাচার হওয়া রোকেয়া বেগম ও মোবাশ্বেরা আক্তার তানিমকে উদ্ধার করে চাঁদপুর মডেল থানায় নিয়ে আসে।
উদ্ধার হওয়া রোকেয়া জানান, তার শাশুরী আয়েশা বেগম স্বামী সুমন বেপারী বাড়ি আসলে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলত। যার জন্য সুমন বেপারী ক্ষীপ্ত হয়ে তার উপর নির্যাতন চালাত। যার জন্য রোকেয়া বেগম তার শিশু কন্যাকে নিয়ে কাউকে কিছু না বলে স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। বাপের বাড়িতে গিয়ে পিতা মাতা না থাকায় ভাইয়ের স্ত্রীর কাছে আশ্রয় না পেয়ে চাঁদপুর শহরের নাজির পাড়া, মমিন পাড়া, বাগাদী ইউনিয়নের বেপারী বাড়ি ও কুমিল্লা অন্যের বাসায় শিশু কন্যাকে নিয়ে ঝিয়ের কাজ করতো। মামলার বিষয়ে সে কিছু জানেনা বলে জানায়। এদিকে রোকেয়া বেগমের স্বামী সুমন বেপারী এ মানব পাচার মামলার কারণে দীর্ঘ ৮/৯ মাস ধরে হাজতবাস খাটছে।
এসআই আবু সাঈদ জানান, মানব পাচরকারী মামলার উদ্ধার হওয়া গৃহবঁধূ ও শিশু কন্যাকে আদালতে উপস্থাপন করে ঘটনার বিবরণ বিজ্ঞ বিচারক রেকর্ড করে।
শিরোনাম:
শনিবার , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৩ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।