শীতের দাপটে এবং ঘনকুয়াশার কারণে সব বয়সী মানুষ কাবু হয়ে গেছে। ঘন কুয়াশার কারণে চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে নৌ ও সড়ক পথে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। ফলে যাত্রী সাধারণকে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। সারাদিন সূর্যের দেখা না মিলায় শীত আরো তীব্র হয়ে উঠে। গতকাল শনিবার ভোর থেকে চাঁদপুরে কুয়াশার ঘনত্ব ছিল শূন্য দৃৃষ্টিসীমায়। এ কারণে লঞ্চগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়েও নির্ধারিত সময়ের ঘন্টার পর ঘন্টা বিলম্বে ঘাটে পৌঁছে। নদীর বিভিন্ন স্থানে লঞ্চসহ অনেক নৌ-যানকে আটকা পড়তে দেখা যায়।
কুয়াশার কারণে শরীয়তপুরের ইব্রাহীমপুর ও চাঁদপুরের হরিণাঘাটের মধ্যে ফেরি চলাচল কয়েক ঘন্টা বন্ধ ছিল বলে জানান বিআইডবিস্নউটিসির ঘাট ম্যানেজার।
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল চাঁদপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ ছিলো ১৮.২ ডিগ্রি। এর আগের দিন শুক্রবার সর্বনিম্ন ছিলো ১৪.২ ডিগ্রি, সর্বোচ্চ ছিলো ২১.৯ ডিগ্রি। আর বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন ছিলো ১৩.৬ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ ছিলো ১৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চাঁদপুরের ওপর দিয়ে বয়ে চলা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আরো দু’দিন স্থায়ী হওয়ার পূর্বাভাস আবহাওয়া অধিদপ্তরের। ইতিমধ্যে প্রচণ্ড শীতে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। শীতে কাবু সব বয়সী মানুষ।
এদিকে তীব্র শীতে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। শীতের কবল থেকে বাঁচতে খড়-কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছে। অনেকে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শনিবার সারাদিন সূর্যের দেখা মেলেনি। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, সকাল পৌনে ৯টায় চাঁদপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা শুক্রবার ছিল ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৪ ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা হেরফের না হলে শীতের অনুভূতি বেশি থাকবে।
প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রী সাধারণ জানান, তীব্র শীতের পাশাপাশি ভোর ৬টার পর চারদিক ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এতে সড়ক পথে বাস, ট্রাকসহ নানা যানবাহন এবং নৌপথে লঞ্চ চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
বেলা ১২টা পর্যন্ত কুয়াশার আবরণে ঢাকা ছিল নদী ও সড়ক পথ। এরপর ধীরে ধীরে কুয়াশা কমলে নদী পথের লঞ্চ ও অন্যান্য নৌ-যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
চাঁদপুর লঞ্চঘাটের প্রিন্স অব রাসেল লঞ্চের ঘাট সুপারভাইজার রুহুল আমিন জানান, সোনারতরী লঞ্চ একঘন্টা দেরিতে এসেছে। কুয়াশার কারণে সকালে চাঁদপুর ঘাট থেকে একাধিক লঞ্চ ছেড়ে যেতে পারেনি। এতে অনেক যাত্রী ঘাটে আটকা পড়ে। বেলা বারোটার সময় কুয়শা কেটে গেলে এমভি রফরফ লঞ্চ প্রচুর যাত্রী নিয়ে ঢাকা রওনা হয়। যেসব লঞ্চে রাডার রয়েছে তারা লঞ্চ চালিয়েছে। এবার শীত মওসুমে এখন পর্যন্ত শনিবারই সবচেয়ে বেশি কুয়াশা পড়েছে। শীত ও কুয়াশার মধ্যে সারাদিন অতিবাহিত হতে দেখা গেছে।