শওকত আলী ॥
চাঁদপুর মেঘনা ধনাগোদা পওর বিভাগের স্টাফ কোয়াটারের ৩ টি বহুতল ভবন দীর্ঘ ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঝুকিপূর্ন অবস্থায় পড়ে আছে । ওই ভবন গুলোতে ঝুকির মধ্যে বসবাস করায় যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ব্হুবছর ধরে তা এ অবস্থায় থাকার কারনে বর্তমানে সেগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। তা ধসে পড়ে যে কোনো মূহুর্তেই ঘটতে পারে বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা।
খবর নিয়ে জানাযায়, পওর বিভাগের স্টাফদের জন্য সরকারি কোটি-কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত চার তলা বিশিষ্ট ওই ভবন তিনটির মধ্যে একটি ভবন ডি টাইপ, দুটি ই টাইপ ভবন। বর্তমান সময় থেকে ১০/১২ বছর পূর্বে এই ভবন তিনটিতে মেঘনা ধনাগোদা বিভাগে চাকরিরত স্টাফরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতেন। এখন থেকে প্রায় ১০/১২ বছর পূর্বে ওই বিভাগে যারা চাকরি করার সুবাদে ভবন গুলো থেকেছেন, তাদের মধ্যে অধিকাংশ লোকই চাকরি থেকে অবসর গ্রহন কিংবা বদলি হওয়ার কারনে ওইসব ভবনগুলোতে বসবাস না করাতে তা পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ে ছিল। বর্তমানে এ সব কোয়াটার দখল করে প্রাক্তন স্টাফরা ও বহিরাগত মানুষ বসবাস করছে।
চাঁদপুর শহর তলীর ওয়াপদাগেট এলাকায় নির্মিত মেঘনা ধনাগোদা পওর বিভাগের স্টাফ কোয়াটারে সরজমিনে গিয়ে দেখাযায়, উত্তর, দক্ষিন এবং পূর্বদিকে তিনটি চার তলা ভবন রয়েছে। ভবনগুলোর দরজা জানালা গুলো ভাঙ্গা চুরা অবস্থায় পড়ে আছে। দেয়ালের রং আস্তর উঠে গিয়ে সেখানে শ্যাওলা পড়ে জমাট বেঁধে আছে। এছাড়াও ছাদের পাকা ঢালাই খসে পড়ে রড দেখা যাচ্ছে। দেয়ালের অধিকাংশ আস্তর খসে পড়ে গাছ গাছালি লতা পাতায় জড়িয়ে আছে। দেখলে মনে হয় কোন কল্প কাহিনীর পুরনো ভুতের বাড়ি। যেখানে সাধারণ মানুষ বসবাস করতে হচেছ, ভয় ভীতির মধ্যে। একটি ভবন একেবারে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও অন্য দুটি ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ১৫ থেকে ২০টি পরিবার বসবাস করতে দেখা যায়। যে কোন মূহুর্তে ভবনগুলো ধসে পড়ার সম্ভাবনার আতংকে রয়েছেন পরিবার গুলো।
ওই বিভাগে বর্তমানে চাকরিরত ডাটা এন্টি অপারেটর আলমগগীর হোসেনের সাথে আলাপ কালে তিনি জানান, তিনি এখানে প্রায় ২০ বছর ধরে বসবাস করছেন। ভবন তিনটি প্রায় ১০/১২ বছর ধরে এভাবে জরাজির্ন ও অবস্থায় ঝুকির মধ্যে পড়ে আছে বলে তিনি জানান। বর্তমানে তিনি কোয়াটারের ই টাইপ একটি ভবনে পরিবার নিয়ে থাকছেন। তিনি জানান, একসময় ওই তিনটি ভবনে ২৪ জন স্টাফ তাদের পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই চাকরি থেকে অবসর গ্রহন করেছে।
এ ব্যাপারে মেঘনা ধনাগোদা পওর বিভাগ পাউবো চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আতাউর রহমান জানান, যখন মেঘনা ধনাগোদা অবকাঠামো তৈরি করেছে, তখন প্রয়োজনের চেয়েও অনেক বেশি লোকের প্রয়োজন ছিলো। এখন সে পরিমান লোক প্রয়োজন হয়না বলেই এখান থেকে অনেকে বদলি হয়েছেন আবার কেউ কেউ অবসর নিয়েছেন। এজন্য কোয়াটার ভবন তেমন কেউ বসবাস করছেন না। তিনি আরো বলেন, দেখা গেছে আমাদের বিভাগে লোক দরকার ১শ জন, কিন্তু সেখানে রয়েছে মাত্র ৪৭ জন। তার পরেও বিভিন্ন পদে পর্যায়ক্রমে নিয়োগ হচ্ছে। গত ৬/৭ মাসে ১১ জন লোক নিয়োগ হয়েছে, আগামীতে দেখা গেছে এভাবে আরো লোক বাড়বে।
ঝুকিপূর্ন ভবনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব ক’টা ভবনতো আর ঝুঁকিপূর্ন না। তার পরও আমরা বিশেষ্জ্ঞ দিয়ে জরিপ করে কিছু কিছু সার্ভেয়ার প্রক্রিয়ায় দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে পি ডাব্লিউর সহযোগিতা নিয়ে সহসাই ভবন গুলোর কাজ করা হবে।