শাহরাস্তিতে ২ ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে অখিল চন্দ্র দেবনাথ নামে এক প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার পর রবিবার দুপুরে পূর্বের সাময়িক বরখাস্তের আলোকে এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির মুখে এবং ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির রিপোর্টে সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় শাহ্রাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে পুরো পুরি বরখাস্ত করার জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি বলশীদ হাজি আকুব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এ বিষয়ে বলশীদ এলাকা জুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ ও দু’ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর বলশীদ হাজি আকুব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির দু’ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে গত ৫ অক্টোবর একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাছে করা হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে দু’ছাত্রীর জবানবন্দি নেন।
এ বিষয়ে গত ১৮ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৫টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বৈঠক বসে। বৈঠকে দু’ছাত্রীর জবানবন্দি ও স্বাক্ষ্য-প্রমাণে প্রধান শিক্ষক অখিল চন্দ্র দেবনাথ দোষীসাব্যস্তহওয়ায় বিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্তকরা হয়। গত ২১ অক্টোবর প্রধান শিক্ষক অখিল চন্দ্র দেবনাথকে সাময়িক বরখাস্তের কপি পৌঁছানো হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. সামিউল মাসুদ জানান, দু’ছাত্রীর বক্তব্য ও স্বাক্ষ্য-প্রমাণে প্রধান শিক্ষক অখিল চন্দ্র দেবনাথ দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তকরা হয়েছে। এ বিষয়ে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
তদন্ত কমিটির সভাপতি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলী আশ্রাফ জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্তের জন্য গত ২১ অক্টোবর চিঠি পেয়ে, বিষয়টির তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে রবিবার সকালে।
সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক অখিল চন্দ্র দেবনাথ জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি স্বাক্ষরিত সাময়িক বরখাস্তের একটি কপি পেয়েছি। অপরদিকে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, এলাকাবাসী ৩ সদস্য তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশের খবর জানতে পেরে রবিবার সকালে বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিভা সমাবেশ করে প্রধান শিক্ষককে পুরো পুরি বরখাস্ত করার জন্য। অভিভাবক, এলাকাবাসী ও ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির মুখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করার জন্য মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন বলে বিদ্যালয়ের সভাপতি সামিউল মাসুদ জানান।