রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বা অন্য কোনো কারণে বাংলাদেশ যাতে কখনো দুর্ভিক্ষ কিংবা খাদ্যের অপ্রতুলতার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি না হয় সেজন্য দেশবাসীকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, আমাদের মাটি ও মানুষ আছে। তাই এখন থেকেই আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে, প্রস্তুত থাকতে হবে। বাংলাদেশ যাতে কখনো দুর্ভিক্ষ বা খাদ্য সংকটে না পড়ে। আমরা আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াবো। গতকাল সকালে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার-১৪২৫ ও ১৪২৬’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন। শেখ হাসিনা দেশের প্রতি ইঞ্চি জমিকে চাষাবাদের আওতায় এনে উৎপাদন বাড়ানোয় আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। বিশ্ববাজারে বিভিন্ন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং পরিবহন ব্যয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি আমদানি-নির্ভরতা কমিয়ে আনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি না যে, যুদ্ধ এত তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যাবে।
কারণ, অস্ত্র বিক্রির জন্য যুদ্ধ চালিয়ে রাখতে পারলে কিছু দেশ লাভবান হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম এবং কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে শারমিন আক্তার তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন। বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬ প্রদান: অনুষ্ঠানে ১০টি ক্যাটাগরিতে ৪৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে কৃষি খাতের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। এর মধ্যে তিনটি ছিল স্বর্ণপদক, ২৫টি ব্রোঞ্জপদক এবং ১৬টি ছিল রৌপ্যপদক। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী সবার হাতে পদক তুলে দেন। বাংলা ১৪২৫ সনের জন্য ১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবং ১৪২৬ সনের জন্য ২১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেয়া হয়। স্বর্ণপদক বিজয়ীদের প্রত্যেকে পেয়েছেন ২৫ গ্রাম ওজনের ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের পদকসহ ১ লাখ টাকা। রৌপ্যপদক বিজয়ীরা পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা ও ২৫ গ্রাম রুপার পদক। আর ব্রোঞ্জপদক বিজয়ীরা পদকসহ ২৫ হাজার টাকা পেয়েছেন। ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি খাতে এ পুরস্কার প্রবর্তন করেন।