সাখাওয়াত হোসেন শামীম :
হাজীগঞ্জে দেশীয় মাছের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে এলাকার মৎস্যজীবী তাদের জীবিকা নির্বাহ নিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। চলতি আশ্বিন-কার্তিক মাস মাছের জন্য ভরা মৌসুম হলেও দেশীয় মাছের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গত বছরগুলোতে এ সময় হাজীগঞ্জের বিভিন্ন হাটবাজারে দেশীয় মাছের সরবরাহ থাকত। বিশেষ করে বিভিন্ন
বিল থেকে মৎস্যজীবীরা কৈ, শিং, মাগুর, পদ্মা, বাইম, গাগড়, টেংরা,পুঁটি, চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ ধরে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু এবার এ মাছগুলো দুষপ্রাপ্য হয়ে গেছে।বাজারে এ মাছগুলো দেখা গেলেও আকাশচুম্বী দাম হওয়ায় তা সাধারণ জনগণের নাগালের বাহিরে। এক সময় এসব বাজারজাতকৃত মাছের মধ্যে
উল্লেখযোগ্য অংশ থাকত দেশীয় মাছের। বর্তমানে সে দেশীয় মাছ বাজারজাত হচ্ছে না। বাজারজাত হচ্ছে শুধু পুকুরে চাষকৃত মাছ। ফলে মৎস্যজীবীরা হারিয়ে ফেলছে আয় রোজগারের পথ। এ জন্য বর্তমানে অনেক মৎস্যজীবীই জীবিকা নির্বাহের তাগিদে অন্য পেশা অবলম্বন করতে বাধ্য হচ্ছে। উপজেলার রান্ধুনীমুড়া সহ বিভিন্ন গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী
শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকে বর্ষা মৌসুমে বিলাঞ্চল থেকে মাছ শিকার করে সে মাছ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতাম। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার মাছের সংখ্যা খুবই কম। দেশীয় প্রজাতির মাছ এলাকা থেকে হারিয়ে যাওয়ায় সারা রাত মাছ ধরে আমরা ২০০ টাকার মাছ বিক্রি করতে পারি না। মৎস্যজীবী বুদ্ধেশর হাওলাদার বলেন, এবারে শুরু থেকেই দেশীয় মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। আমরা যারা মৎস্যজীবী রয়েছি তাদের খুব কষ্টে দিন কাটছে। আমাদেরকে জীবিকা নির্বাহের জন্য অন্য পেশা অবলম্বন না করলে সংসার চালানো খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কিছু অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ী বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই সুতি, বাদাই ও কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে মা ও পোনা মাছ নিধনে মেতে উঠার ফলে দিন দিন মাছের উৎপাদনকমে যাচ্ছে। আর এ কারণেই দেশীয় প্রজাতির মাছ এলাকা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও আমাদের এলাকার ফসলি জমিগুলোতে অধিক পরিমাণ কীটনাশক ব্যবহারের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় দেশী মাছ কমে যাচ্ছে। কীটনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করলে সম্ভবত মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য অফিসার আনোয়ারুজ্জামান বলেন, মৎস্য আইন লংঘন করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জাল দিয়ে কেউ যাতে মাছ শিকার করতে না পারে এর জন্য আমরা মাঝেমধ্যেই অভিযান চালাই। এর পরও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ