মিজান লিটন
চাঁদপুর জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মাত্র ৬জন জনবল দিয়ে পুরো জেলায় কার্যক্রম চালাচ্ছে। গত দেড় বছরে এ সংস্থাটি ৫৪৭টি অভিযান পরিচালনা করেছে। এ সময় ৭লাখ টাকার বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং ১২১টি মামলা দায়ের করে।
জানা যায়, চাঁদপুর জেলার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জনবল প্রয়োজন ৬ জন। রয়েছেও ৬ জন। এর মধ্যে ১জন অফিসার ইনচার্জ/ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), ১জন এসআই ও ১জন এএসআই এবং ৩জন সিপাহী। এ ৬জন পুরো জেলার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে রয়েছেন। অর্থাৎ ৩০ লাখ জনগণের মধ্যে ৬জন কর্মকর্তা ভাগ করা হলে প্রতি ৫ লাখে ১জন ব্যক্তি মাদক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে এই বিভাগের নেই সরকারি কোনো অফিস, থাকতে হয় ভাড়া বাসায়। নেই কোনো যানবাহনের ব্যবস্থা। আবার মাস শেষে যে বেতনটিও পান সেটিও আনতে হয় উপ-আঞ্চলিক কার্যালয় কুমিল্লা থেকে। অপরাধকারীকে ধরতে বা অভিযান চালাতে গিয়ে যে ঝুঁকি, সেই ঝুঁকি বাবদও নেই কোনো ঝুঁকি ভাতা। তদন্ত কাজে খরচ মেটানোর স্বার্থে নেই কোনো ভাতা। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, অপরাধীদের ধরা বা ধাওয়া করার কাজে তাদের সাথে নেই কোনো অস্ত্র। অথচ এ সকল মাদক ব্যবসায়ী বা অপরাধীরা আধুনিক অস্ত্র নিয়েই সব সময় চলাফেরা করে। এক কথায় নিরাপত্তাহীনতা ও জোড়াতালি দিয়ে চলছে তাদের কর্মজীবন।
চাঁদপুর জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে চলতি বছরের ৩০ জুলাই পর্যন্ত সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণায় এ বিভাগের পক্ষ থেকে ৫৪৭টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ অভিযানে প্রায় ৭ লাখ টাকার মতো মাদক উদ্ধার এবং ১২১টি মামলা হয়। এসব উদ্ধারকৃত মাদকগুলো হচ্ছে বর্তমানে নতুন প্রজন্মের কাছে প্রিয় ও পরিচিত মাদক হিসেবে খ্যাত ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেন্সিডিল, মদ, গাঁজা, বিয়ার, স্পিরিট ও বিভিন্ন প্রকার নেশাজাতীয় ইনজেকশন। এর মধ্যে গাঁজার মামলা ২০টি, মদ-ছোলাই ১০টি, ইয়াবা ২১টি, বিয়ার ও দেশী মদ ২০টি, স্পিরিট ২২টি, নেশাজাতীয় ইনজেকশন বাবদ ১০টি ও অন্যান্য ড্রিঙ্কস বাবদ ৫টি। এর মধ্যে ৯১টি মামলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা ও জরিমানা করা হয়। বাকি ৩০টি মামলা আদালতে মাদক আইনে চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা অফিসার ইনচার্জ মো. জয়নাল আবেদিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সরকার ইতিমধ্যে দেশের সকল বিভাগের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। যেহেতু বর্তমান সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ করেছে, আমরাও সেই জিহাদের কর্মী। এই জিহাদে আমাদের জয়ী হতেই হবে। অতএব, এই বিজয় অর্জনের জন্য আশারাখি সহসাই আমাদের বিভাগের সকল সমস্যা সমাধানে সরকার অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমাদের বাইরেও মাদক বিরোধী জিহাদে সরকারের বিভিন্ন সংস্থাগুলো প্রতিনিয়তই কাজ করে যাচ্ছে। আমার মনে হয় চাঁদপুরে আগের চাইতে মাদক অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং মাদক বিক্রি ও সেবনকারীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে।