ইয়াছিন হোসেন সুজন :
ফরিদগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নাম বাকী বিল্লাহ। নানা অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যের কারণে এলাকায় শিক্ষকদের মাঝে ‘নগদ বিল্লাহ’ হিসেবে পরিচিত এ কর্মকর্তার অবশেষে শাস্তিমূলক বদলি হয়েছে। তাকে বান্দরবান জেলার আলী কদম উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। উক্ত কর্মকর্তার বদলির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৫ ইউনিয়নের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করতে দেখা যায়। এদিকে বাকী বিল্লাহ ফরিদগঞ্জের স্বপদে থাকতে তার বদলি ঠেকাতে বিভিন্ন তদবির নিয়ে এখন এলাকার এমপিসহ বিভিন্ন মহলে জোরালো তদবির নিয়ে ব্যস্ত বলে জানা গেছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সফিউদ্দীন ফরিদগঞ্জে এসে বাকি বিল্লাহর অনুপস্থিতিতেই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের অতিরিক্ত দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। ফরিদগঞ্জ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে দেখা যায়, বাকী বিল্লাহ তার রুমে নেই। অফিস সহকারী কামাল মজুমদার জানান, তিনি গত ১৯ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটিতে আছেন। তার বদলির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তেমন কিছু জানতাম না। তবে আজ জেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয় হাতে করে একটি বদলির আদেশ নিয়ে আসেন। যা গত ১৫ অক্টোবর-২০১৪ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুনের স্বাক্ষরিত আদেশ। তাতে ২০/১০/১৪-এর মধ্যে বিমুক্ত হয়ে বান্দরবানের আলী কদম উপজেলায় যোগদানের নির্দেশ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক’জন প্রধান শিক্ষক জানান, বাকী বিল্লাহ নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য ছাড়াও উপবৃত্তির টাকা বিতরণে অনিয়ম করতেন নিয়মিত। তার অনিয়ম আর ঘুষ বাণিজ্যের টাকা দিতে হতো নগদ। বাকিতে তিনি কোনো কাজ করতে রাজি না হওয়ায় শিক্ষকদের মাঝে তিনি ‘নগদ বিল্লাহ’ হিসেবে পরিচিত। বাকী বিল্লাহর বদলির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে এখন বিভিন্ন শিক্ষক তার অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন। এতদিন হয়রানির ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলতে সাহস পাননি । উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজল বলেন, তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্যে তাকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে বান্দরবান জেলায়। এলাকায় তিনি শিক্ষকদের মাঝে নগদ বিল্লাহ হিসেবে পরিচিত। তিনি অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির লোক। শিক্ষক নিয়োগ ও উপবৃত্তির টাকা বিতরণের নামে বাকী বিল্লাহ তার ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক হওয়ার যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে। তিনি ফরিদগঞ্জে থাকতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যে কারণে বদলি ঠেকাতে তিনি এখন মরিয়া হয়ে উঠেছেন। একটানা প্রায় ৫ বছর ফরিদগঞ্জে চাকুরি করার সুবাদে বাকী বিল্লাহর অনিয়ম আর ঘুষ বাণিজ্য অনেক ছাড়িয়ে গেছে। এ বিষয়ে বাকী বিল্লাহ বলেন, আমার বদলি হওয়ার কথা শুনেছি, তবে এখনো বদলির আদেশের কাগজ হাতে পাইনি। কি কারণে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে বাকী বিল্লাহ বলেন, আমি এখন এলাকায় নেই। সাক্ষাতে বিস্তারিত বলবো।
শিরোনাম:
বুধবার , ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।